আবাস যোজনায় সমীক্ষার কাজে আপত্তি জানিয়েছেন আশা, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কর্মীরা। মঙ্গলবারও পুরুলিয়ায় এই কাজে বিরত থাকতে চেয়ে মিছিল করেছেন তাঁরা। পূর্ব বর্ধমানের রায়ান ১ পঞ্চায়েতের বিজয়রামে দিনকয়েক আগে সমীক্ষার কাজে গিয়েছিলেন আশাকর্মীরা। অভিযোগ, এলাকায় সমীক্ষার সময় ফতেমা বিবি দুই নিকট আত্মীয়কে সঙ্গে নিয়ে আশাকর্মীদের সঙ্গে ঘোরেন। নিজের ও তাঁর পরিবারের কারও নাম যাতে তালিকা থেকে বাদ না যায়, তার জন্য আশাকর্মীদের উপর চাপ সৃষ্টি করেন। ফলে আশাকর্মীরা সমীক্ষা চালিয়ে সব দেখেও ফতেমা বিবি শেখ, তাঁর মা মনোহরা শেখ, বোন রেহিমা খাতুন, আলিমা বিবি, আজফিয়া বিবি শেখ, ভাইয়ের স্ত্রী চাঁদনি শেখ ও কাকা শেখ সাইরিনার নাম তালিকায় রেখে জমা দেন পঞ্চায়েতে।
এলাকায় ফতেমা বিবি শেখের ঝাঁ চকচকে পাকা বাড়ি দেখে চমকে উঠেছেন অনেকেই। তাঁদের প্রশ্ন, কী ভাবে তৈরি হলো এই বাড়ি? তাঁদের আরও প্রশ্ন, বাড়ি যখন হয়েছে তখন আবাস যোজনার তালিকায় নামই বা উঠল কী করে? এলাকার বাসিন্দা শেখ কুদ্দস বলেন, ‘ফতেমা তো একটি বেসরকারি স্কুলে গ্রুপ ডি পদে কাজ করে। ওর স্বামী আলাউদ্দিন শেখ টায়ারের দোকানে কাজ করে। ২০১৮ সালেও ওদের কিছু ছিল না। তাহলে তো আগে দেখা দরকার এই বাড়ি তৈরি হলো কী ভাবে? তার পর তো আবাস যোজনায় নাম তোলার প্রশ্ন।’ ফতেমা বিবি শেখের বক্তব্য, ‘আমাদের নামে বিরোধীরা চক্রান্ত করছে। ২০১৮ সালে যখন আবেদন করেছিলাম, তখন আমার কোনও পাকা বাড়ি ছিল না। পরিবারেরও কারও ছিল না। তাই সবাই আবেদন করেছিলাম। দীর্ঘদিন ধরে ঘর না পেয়ে বছর দেড়েক আগে আমরা নিজেরা টাকা খরচ করে বাড়ি তৈরি করি।’ জানান, তাঁদের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার আবেদন করেছেন। বলেন, ‘লিস্টে নাম উঠেছে দেখে প্রধানের কাছে আবেদন করেছি, নাম বাদ দিয়ে অন্য কাউকে ঘর দেওয়া হোক।’
রায়ান ১ পঞ্চায়েতের প্রধান আলমগির শেখ বলেন, ‘ফতেমা বিবি নিজের ও পরিবারের আরও ৬ জনের নাম আবাস যোজনা থেকে বাদ দেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন। আমরা সেটা ব্লকে পাঠিয়ে দেব। তবে যখন আশাকর্মীরা এলাকায় সার্ভের কাজে গিয়েছিলেন, তখন উনিই নিজের নাম বাদ দেওয়াতে পারতেন। সেটা কেন করলেন না বোঝা গেল না।’ বর্ধমান ১ ব্লকের বিডিও অভিরূপ ভট্টাচার্য বলেন, ‘ঠিক কী হয়েছে আমি বলতে পারব না। তবে আমাদের ব্লকে আমি নিজে, পুলিশ মিলে দল গড়ে এই ভেরিফিকেশনের কাজ চালাচ্ছি। কথা দিচ্ছি, ফতেমা বিবির মতো যাঁদের প্রাসাদের মতো বাড়ি রয়েছে, তাঁদের কারও নাম থাকবে না। আমাদের ব্লক থেকে স্বচ্ছ তালিকা তৈরি হবে।’