বিশ্বজিৎ মিত্র: প্রাপ্য চাল কেন পেলেন না? যেটুকু চাল পেয়েছেন, সেটুকইবা বিক্রির প্রস্তাব কেন? দুয়ারে রেশন প্রকল্পের বেনিয়ম! প্রতিবাদ করে আক্রান্ত হলেন বৃদ্ধা। রেশন ডিলারের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করলেন তিনি। ঘটনাস্থল, নদিয়ার ধানতলা।
দোকানে গিয়ে লাইনে দাঁড়াতে হবে না। একুশের বিধানসভা ভোটের প্রচারে রেশন সামগ্রী বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রকল্পের নাম, ‘দুয়ারে রেশন’। তৃতীয়বার মুখ্য়মন্ত্রীর কুর্সিতে বসার পর, রাজ্যে ‘দুয়ারে রেশন’-র সূচনা করেন তিনি। শুধু তাই নয়, হোয়াটঅ্যাপ মারফৎ এই প্রকল্প নিয়ে অভিযোগ জানানোরও ব্যবস্থা করেছে সরকার।
ঘড়িতে তখন সকাল ১০টা। ধানতলা থানার আড়ংঘাটা খোসালপুর ঘোষপাড়া গ্রামে একটি প্রাথমিক স্কুলে চলছিল ‘দুয়ারে রেশন’। রেশন নিতে যেখানে যান রঞ্জিত ঘোষ নামে বৃদ্ধ। অভিযোগ, রেশন ডিলার ৭টি কার্ডে মাত্র ২০ কেজি চাল নিয়ে বলেন ওই বৃদ্ধকে। শুধু তাই নয়, সেই চাল আবার ১৭ কেজি দরে বিক্রি করে দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়! কেন? রেশন ডিলারের প্রস্তাবে রাজি হননি রঞ্জিত। তাঁর দাবি, চেয়ার থেকে উঠে এসে তাঁকে ধাক্কা মারে রেশন ডিলার। সঙ্গে লাথিও! ধানতলা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি। ‘মিথ্যা বলছেন’, দাবি অভিযুক্ত রেশন ডিলারের।
আরও পড়ুন: Asansol Stampede: অভিশপ্ত সন্ধ্যায় উলটপালট সব, প্রয়াত বাবার স্বপ্ন পূরণ করা হল না ছোট্ট প্রীতির!
এদিকে ‘দুয়ারে রেশন’ প্রকল্প নিয়ে হাইকোর্টে ধাক্কা খেয়েছে রাজ্য। বিচারপতি চিত্তরঞ্জন দাস ও বিচারপতি অনিরুদ্ধ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চের রায়, খাদ্য সুরক্ষা আইনে দুয়ারে রেশনের বৈধতা নেই। বরং এই প্রকল্পটি খাদ্যসুরক্ষা আইন ২০১৩-র বিরোধী। হাইকোর্টে সেই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করল সরকার। কারণ, দুয়ারে সরকার প্রকল্প চালু রাখতে বদ্ধপরিকর নবান্ন। এর আগে, রাজ্যে দুয়ারে রেশন চালু হওয়ার পর হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন রেশন ডিলাররা। আদালতে তাঁরা জানিয়েছিলেন, নিয়ম অনুযায়ী দোকানে এসেই রেশন সামগ্রী নিতে হবে গ্রাহকদের। বাড়িতে রেশন সামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার মতো পরিকাঠামো নেই রাজ্যে। গাড়ি ও প্রচারের খরচও বহন করা সম্ভব নয়। শেষপর্যন্ত অবশ্য সেই মামলাটি খারিজ হয়ে যায়।