এ দিনই আবার সুবীরেশের জামিনের আর্জির শুনানিতে নিয়োগ-দুর্নীতি তদন্তের গতিপ্রকৃতি, সুবীরেশ জেরায় সহযোগিতা করছেন কি না, তাঁর বিরুদ্ধে আর কোন কোন মামলা রয়েছে–এই সব তথ্য সিবিআইকে ২১ ডিসেম্বর রিপোর্ট দিয়ে জানাতে নির্দেশ দিয়েছে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ। ডিভিশন বেঞ্চ হালকা চালে সিবিআইকে কটাক্ষ করে বলে, ‘সবটাই তো সিঙ্গল বেঞ্চ (বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়) করছে। আপনারা কী করছেন?’
সুবীরেশের আইনজীবী ডিভিশন বেঞ্চে বলেন, ‘মক্কেল ৮৮ দিন ধরে বন্দি। তদন্তে অগ্রগতি নেই। চার্জশিট জমা পড়ে গিয়েছে। সুবীরেশ তদন্তে সব রকম সহযোগিতা করেছেন। তাঁকে জামিন দেওয়া হোক।’ সিবিআইয়ের আইনজীবী বলেন, ‘তদন্তের আরও অগ্রগতির জন্যে সুবীরেশকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন।’ বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের আইনজীবী বলেন, ‘বড় দুর্নীতি হয়েছে। ইডিও এই মামলায় তদন্ত চালাচ্ছে। এখন জামিন দিলে তদন্ত মার খাবে।’ এর পরেই ডিভিশন বেঞ্চ সিবিআইয়ের থেকে সুবীরেশ সংক্রাম্ত যাবতীয় তথ্য তলব করে।
বিচারপতি বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চে জামিনের মামলার শুনানির কিছু পরেই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গল বেঞ্চে নিয়োগ-দুর্নীতির মামলাগুলি ওঠে। বিচারপতি সিবিআইয়ের কাছে জানতে চান, ‘সুবীরেশ ভট্টাচার্যর বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ করেছেন? তিনি যে জেরায় মুখ খুলছেন না বা সহযোগিতা করছেন না, তা কি জানিয়েছেন জামিন মামলায়?’ কেন সিবিআই সেখানে বিষয়গুলি জানায়নি, প্রশ্ন করে ক্ষুব্ধ সিঙ্গল বেঞ্চ। সিবিআইয়ের কৌঁসুলি স্বীকার করেন, সমন্বয়ে কিছুটা ত্রুটি হয়েছে। তবে আইনজীবীদের নিয়ে একটি দল গড়া হয়েছে। সব রকম তথ্য যাতে সব আইনজীবীদের কাছে থাকে, সেই ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এর পরেই তিনি আদালতে জানান, নবম-দশমে নিয়োগ-দুর্নীতিতে জেল হেফাজতে থাকা সুবীরেশকে গ্রুপ-সি মামলায় নিজেদের হেফাজতে চেয়ে ১২ ডিসেম্বর আবেদন করা হয়েছে নিম্ন আদালতে।
২২ ডিসেম্বর সেখানে শুনানি হবে। তখনই ১০ দিনের বিলম্বে প্রশ্ন তোলে আদালত। সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশ, তাঁকে হেফাজতে পেতে নতুন করে আলিপুরের বিশেষ সিবিআই আদালতে আজ, শুক্রবার আবেদন জানাতে হবে সিবিআইকে। তিনি যে সংশ্লিষ্ট বিচারকের ভূমিকায় খুশি নন, সিবিআইকে তা-ও জানাতে বলেন বিচারপতি। আদালতের বক্তব্য, চাকরিপ্রার্থীরা রাস্তায় বসে। দ্রুত এই মামলাগুলি শেষ হলে তাঁরা বিচার পাবেন বলে আশা করছেন। অন্য দিকে এক জন অভিযুক্তকে পেশ করতে ১০ দিন সময় দেওয়া হচ্ছে, এটা বিস্ময়কর।