জানা গিয়েছে, প্রথমে সিকিম থেকে গোপীনাথের দেহ বিমানে করে বাগডোগরায় (Bagdogra) নিয়ে আসা হয়। তারপর এদিন বাগডোগরা বিমানবন্দর থেকে সড়ক পথে পানাগড় সেনা ছাউনি হয়ে ওই সেনাকর্মীর দেহ এসে পৌঁছয় তাঁর গ্রামের বাড়িতে। জওয়ানের মরদেহ বাড়িতে পৌঁছতেই পরিবারের সদস্যদের মধ্যে কান্নার রোল ওঠে। গোটা এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এদিন মৃত জওয়ানের বাড়ির সামনে গ্রামবাসীরা ভিড় করেন। সকলেই তাঁদের প্রিয় ‘গোপী’কে একটিবারের জন্য দেখতে এসেছিলেন। তারপর জাতীয় পতাকা দিয়ে মরদেহ ঢেকে ফুল, মালা দিয়ে শ্রদ্ধা জানান সকলে। অন্যদিকে, সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে গান স্যালুটের মাধ্যমে মৃত জওয়ানকে শেষ শ্রদ্ধা জানানো হয়।
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার উত্তর সিকিমের জেমা এলাকায় ২০ জন সেনা জওয়ানকে নিয়ে তিনটি ট্রাকের একটি আর্মি কনভয় উত্তর সিকিমের চাটেন থেকে থাংগুর দিকে যাচ্ছিল। বিশেষ সূত্রে জানা গিয়েছে, খারাপ আবহাওয়ার কারণে ওই সেনা কনভয়ের মাঝের একটি ট্রাক রাস্তায় বাঁক নেওয়ার সময়ই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। তারপর খাড়া ঢালে ট্রাকটি ধাক্কা খেয়ে ছিটকে সোজা খাদে উলটে পড়ে যায়।
এই দুর্ঘটনার পর ঘটনাস্থলেই ওই ট্রাকে সফররত তিন জন জুনিয়র কমিশন অফিসার-সহ ১৬ জন ভারতীয় জওয়ানের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। ঘটনায় আরও চারজন গুরুতর আহত হন। তাঁদের উদ্ধার করে দ্রুত স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বিশেষ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতদের মধ্যে ভালুকা গ্রামের গোপীনাথ মাকুড় নামে এক সেনাকর্মীও ছিলেন।
মৃত সেনাকর্মীর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০১ সালে সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন গোপীনাথ। তিনি রেখে গেলেন তাঁর বাবা, মা, স্ত্রী, ১১ বছরের একটি পুত্রসন্তান, ভাই এবং ভ্রাতৃবধূকে। গত আগস্টেই শেষবারের মতো বাড়ি থেকে ছুটি কাটিয়ে কর্মস্থলে ফিরে গিয়েছিলেন গোপীনাথ। এদিকে আগামী মার্চে বাড়ি ফিরে বাঁকুড়া শহরের জুনবেদিয়ায় নির্মীয়মাণ বাড়িতে গৃহপ্রবেশের অনুষ্ঠান করার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু তার আগেই এই দুর্ঘটনা প্রাণ কেড়ে নিল ওই সেনা জওয়ানের।