২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে মতুয়া বলয়ে পিছিয়ে থাকা বুথগুলিতে হারানো জমি ফেরাতে বাড়তি জোর দিচ্ছে তৃণমূল (TMC)। পঞ্চায়েত ভোটের (Panchayat Elections) কথা মাথায় রেখে ওই বুথগুলিতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে জনসংযোগ করবেন স্থানীয় বিধায়ক-সহ তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিরা।
তৃণমূলের (Trinamool) বনগাঁ সাংগঠনিক জেলায় এখন বুথ বুথে জনসংযোগ কর্মসূচি চলছে। এই জনসংযোগ-পর্ব শেষ হলে, ২০২১ সালের নির্বাচনে যে সব বুথে বিজেপি (BJP) লিড নিয়েছিল, সেই বুথগুলির বাড়ি বাড়ি যাবেন তৃণমূল (Trinamool) নেতৃত্ব। একই কর্মসূচি নদিয়ার মতুয়া বলয়ে নতুন বছরে তৃণমূল নেতৃত্ব শুরু করতে চাইছেন। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যের মতুয়া বলয়ের অন্তর্গত বনগাঁ ও রানাঘাট আসনে বিজেপি (BJP) জয়ী হয়েছিল। সেই প্রবণতা ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে গেরুয়া ব্রিগেড ধরে রাখতে পেরেছিল অনেকটা। তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার অন্তর্গত চারটি বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপি (BJP) জয়ী হয়। বাগদায় বিজেপির (BJP) প্রতীকে বিশ্বজিৎ দাস জয়ী হলেও তিনি তৃণমূলে (Trinamool) যোগ দেন। তৃণমূলের রানাঘাট সাংগঠনিক জেলার নবদ্বীপ ছাড়া বাকি সব বিধানসভা আসনেই বিজেপি (BJP) জয়ী হয়। ওই গেরুয়া মাটিতেই এ বারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে (Panchayat Elections) জোড়াফুল ফোটাতে চাইছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বিশ্বজিৎ দাসের বক্তব্য, “এই সাংগঠনিক জেলায় মোট ৫৩টি গ্রাম পঞ্চায়েত রয়েছে। সেগুলোর অন্তর্গত কমবেশি ১২০০ বুথে এখন জেলা নেতৃত্ব যাচ্ছেন। একটি টিম তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। এই কর্মসূচি শেষ হলে রাজ্য নেতৃত্ব নতুন কর্মসূচির কথা জানাবেন।”
রানাঘাট সাংগঠনিক জেলাতেও নভেম্বরে বুথ বুথে বৈঠক শুরু করেছে জোড়াফুল। তৃণমূলের রানাঘাট সাংগঠনিক জেলায় মোট ৯টি বিধানসভা আসন রয়েছে। বনগাঁ লোকসভার অন্তর্গত কল্যাণী ও হরিণঘাটা বিধানসভা কেন্দ্রকে তৃণমূলের রানাঘাট সাংগঠনিক জেলায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই সাংগঠনিক জেলায় আড়াই হাজারের কাছাকাছি বুথ রয়েছে, গ্রাম পঞ্চায়েত রয়েছে মোট ৮৭টি। এখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ বুথেই BJP ২০২১ সালের নির্বাচনে লিড নিয়েছিল। ওই বুথগুলির বাড়ি বাড়ি তৃণমূল যাবে ১৫ জানুয়ারির পর থেকে। তৃণমূলের রানাঘাট সাংগঠনিক জেলার সভাপতি দেবাশিস গঙ্গোপাধ্যায়ের কথায়, “সাংগঠনিক জেলার সব নেতৃত্বই ১৫ জানুয়ারির পর থেকে বাড়ি বাড়ি যাবেন। কোনও কোনও বাড়িতে তাঁরা রাতও কাটাবেন। মাসে অন্তত ১০ দিন সাধারণ মানুষের বাড়িতে রাত কাটাতে হবে। আমি নিজেও এই কর্মসূচিতে থাকব। পঞ্চায়েত নির্বাচনের সূচি ঘোষণার আগে পর্যন্ত এই জনসংযোগ চলবে।”
১ জানুয়ারি তৃণমূলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। সেই দিন রানাঘাট (Ranaghat) সাংগঠনিক জেলার নেতা-কর্মীরা আমজনতার বাড়িতে যাবেন। দেবাশিসের কথায়, “আমজনতার বাড়িতে গিয়ে আমরা ইংরেজি নতুন বছরের শুভেচ্ছা বিনিময় করব। সম্ভব হলে কোথাও ছোটদের হাতে লজেন্স তুলে দেওয়া হবে। যেখানে তা সম্ভব হবে না, সেখানে হাসিমুখেই শুভেচ্ছা বিনিময় করা হবে।”
তবে রাজ্য বিজেপির (BJP) মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের বক্তব্য, তৃণমূল এই জনসংযোগ কর্মসূচি করলেও মতুয়া সম্প্রদায়ের সমর্থন বিজেপির পাশেই থাকবে। তাঁর কথায়, “বিজেপির (BJP) প্রতি মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষের আস্থা যে অটুট, তা ২০১৯ ও ২০২১ সালে, পর পর দু’টো নির্বাচনে দেখা গিয়েছে। আগামী দিনেও এর কোনও বদল হবে না।”