রাজ্যের ২৩টি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য (Vice Chancellor) নিয়োগ ও পুনর্নিয়োগ নিয়ে মামলা চলছে কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court)। জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে (Division Bench) মামলাটি শুনানির জন্য ওঠার কথা। তার মধ্যেই ছ’টি রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়ে (Universities) স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগে মনোনয়ন চেয়ে নানা মাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। যা নিয়ে শিক্ষা মহলে প্রশ্ন উঠছে। যদিও শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু (Bratya Basu) মঙ্গলবার বলেন, ‘যদি কোথাও কোনও ভুলচুক থাকে, তা হলে নতুন আচার্যের সঙ্গে কথা বলে শিক্ষা দপ্তর তা সংশোধন করবে।’ বিশ্ববিদ্যালয়গুলির রেজিস্ট্রারদের জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে – উপাচার্য পদে যাঁদের নাম প্রস্তাব করা হবে, তাঁদের যে কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে ১০ বছর কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। তার মধ্যে অন্তত পাঁচ বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর পদে কর্মরত থাকতে হবে। অথবা গবেষণা ও শিক্ষা সংক্রান্ত প্রশাসনিক সংস্থায় ১০ বছরের অভিজ্ঞদের নাম প্রস্তাব করা যেতে পারে। সেখানেও তাঁদের অন্তত পাঁচ বছর প্রফেসরের সমতুল পদে কাজ করতে হবে।
এখানেই প্রশ্ন রাজ্যের একাধিক উপাচার্যের। তাঁদের বক্তব্য, সাম্প্রতিক একাধিক রায়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (UGC) বিধি উল্লেখ করে সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হতে গেলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বা প্রফেসর-সমতুল পদে ১০ বছর কর্মরত থাকতেই হবে। কিন্তু ২০১২-য় রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয় আইন সংশোধন করে তা কমিয়ে ৫ বছর করা হয়। উপাচার্য নিয়োগে আবেদনের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে – উচ্চশিক্ষা দপ্তরের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার বিজ্ঞপ্তি মেনেই এই সার্চ কমিটি গড়া হয়েছে। কিন্তু ৬ রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্চ কমিটি গঠন করা হয়েছে ইউজিসি-র প্রতিনিধি ছাড়া। ২০১৪-র সেপ্টেম্বরে রাজ্য বিধানসভায় তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয় আইনে সংশোধনী এনে ইউজিসি-র বদলে রাজ্য সরকারের প্রতিনিধিকে অন্তর্ভুক্ত করেন। যা সুপ্রিম কোর্টের মতে অবৈধ।
সার্চ কমিটিগুলিতে এমন বেশ ক’জন উপাচার্য আছেন, যাঁদের নিয়োগ নিয়েই আদালতে মামলা চলছে। রাজ্যে ২৩ জন স্থায়ী ও অস্থায়ী উপাচার্যের নিয়োগ-প্রশ্নে ১২ জানুয়ারি পরবর্তী শুনানি বলে খবর। তাই কমিটিগুলির বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন থাকছে। উচ্চশিক্ষা দপ্তরের আধিকারিকদের মতে, ২৩ জন উপাচার্যের নিয়োগ নিয়ে আদালতে মামলার প্রেক্ষিতেই বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্রুত স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। আচার্য-রাজ্যপালের সঙ্গে সরকারের ‘সুসম্পর্কের’ বিষয়টিও রাখা হয়েছে মাথায়।