শ্রীকান্ত ঠাকুর : ‘প্রজাপতি’ বিতর্কে অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তীর পাশেই দাঁড়ালেন তৃণমূলের রাজ্য সভানেত্রী তথা অভিনেত্রী সায়নী ঘোষ। দেব-মিঠুন চক্রবর্তীর ‘প্রজাপতি’ ছবি নিয়ে যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে, এবার সেই ইস্যুতে বুধবার মুখ খোলেন সায়নী। তাঁর কথায় মিঠুন চক্রবর্তীর সঙ্গে রাজনৈতিক মত পার্থক্য থাকলেও অভিনেতা মিঠুনকে নিয়ে কথা বলার যোগ্যতা তাঁর নেই। এদিন, দক্ষিণ দিনাজপুরের বংশীহারিতে সুকান্ত মঞ্চে যুব সম্মেলনে যোগ দিতে এসেছিলেন সায়নী ঘোষ। সেখানে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় এই মন্তব্য করেন তিনি।
ঠিক কী বলেছেন সায়নী ঘোষ?
সায়নীর কথায়, ‘এটা দেব আর কুণাল ঘোষ, দুজনের বিষয়। কুণাল ঘোষ আমাদের দলের মুখপাত্র, উনি যা বলেন, ভেবে বলেন। আর দেব আমাদের দলের গুরুত্বপূর্ণ সাংসদ, অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং দেব নিজের কাজ ভালো মতোই করেন। তাঁদের মধ্যে যদি কোনওরকম মতো বিরোধ হয়, সেটা তাঁরাই সামলাবেন। আর মিঠুন চক্রবর্তীর বিষয়ে আমি শুধু এটুকুই বলতে পারি, রাজনৈতিক ক্ষেত্রে ওঁর আমি বিরোধিতা করলেও অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে কথা বলার যোগ্যতা অভিনেত্রী সায়নী ঘোষের নেই।’
প্রসঙ্গত, দেব ও মিঠুন চক্রবর্তী অভিনীত ‘প্রজাপতি’ ছবিটি নন্দনে জায়গা না পাওয়ায় বিতর্ক তৈরি হয়। মিঠুন চক্রবর্তীর নাম যেহেতু বিজেপির সঙ্গে জড়িয়ে সেই কারণেই ‘প্রজাপতি’ নন্দনে জায়গা পায়নি, এমনটাই দাবি করে বিজেপি। এনিয়ে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘মিঠুনের খারাপ অভিনয়ের কারণেই ব্যর্থ হয়েছে প্রজাপতি’। তিনি আরও বলেন, ‘দেব অত্যন্ত ভালো ছেলে। নিজের মুখে এই কথা বলতে পারেনি, তাই এড়িয়ে গেছে। দেব ভালো ছবি করে, আমার থেকে সিনেমা বেশি বোঝে। কিন্তু সবাই যদি বেশি বোঝে তাহলে সিনেমা ফ্লপ কেন হয়? তাই সবার মতামত জেনে নেওয়া ভালো।’
কুণাল ঘোষের বক্তব্যের পরেই জি ২৪ ঘণ্টার ক্য়ামেরার সামনে তার জবাব দেন দেব। অভিনেতা বলেন, ‘এটা কুণালদার ব্যক্তিগত ব্যাপার। সেখানে আমার কিছু বলার নেই। কিন্তু প্রযোজক হিসাবে যদি বলি যে, ২৩ তারিখ ছবিটা রিলিজ করেছে। এখনও হাউজফুল চলছে। বিশাল ছবি হওয়ার পথে আছে। আমি বিজেপি, তৃণমূল সবাইকে বলব, বিতর্ক তৈরি করবেন না। বিতর্ক করলে মানুষ ভয় পেয়ে যাবে। ছবিটা দেবের জন্য হোক বা মিঠুনদার জন্য, ছবিটা যেন হিট হয়। কাউকে উত্তর দেওয়ার জন্য বলছি না, কিন্তু প্রয়োজনে আবার মিঠুনদাকে নেব। মিঠুনদাকে স্ক্রিপ্ট অনুযায়ী প্রয়োজন পরলে আবারও নেব। উনি হ্যাঁ বা না বলতে পারেন ওঁর ইচ্ছা অনুযায়ী। মিঠুনদার অভিনয় নিয়ে অন্তত আমার দলের বাকিদের চুপ থাকা উচিত’।
দেব আরও বলেন, ‘কুণাল দা অনেক বড়,ওঁকে কিছু বোঝাবার নেই। শুধু এটুকুই বলব, সিনেমাটা আমার বিষয়, যেমন রাজনীতিটা আমার বিষয় নয়। ওটা আমার উপর ছেড়ে দিন, আমি বুঝে নেব। সিনেমা নিয়ে কোনও টিপ্পনী করবেন না। নন্দনে শো পায়নি আমার কোনও আক্ষেপ নেই। পশ্চিমবঙ্গের সবকটা হলে হাউজফুল যাচ্ছে। নন্দনের বাইরে অনেক ভালো চলছে। এটা তো উদাহরণ হতে পারে। আমি চাই দর্শক হলে আসুক। ছবিটা হিট হলে আমারও লাভ, মিঠুনদারও লাভ, তাই পাশে থাকুন।’
এদিকে বুধবার আবারও দেব বলেন, তিনি প্রজাপতি বিতর্কে ইতি চান। তাঁর কথায়, ‘অনেক হয়েছে, এবার দর্শকদের ছবি দেখতে দিন।’ দীলিপ ঘোষ প্রসঙ্গে বলেন, ‘দিলীপ ঘোষের সঙ্গে আমার পরিচয় নেই। যেটুকু দেখা হয়েছে উনি আমায় স্নেহ করেছেন। যাঁকে চিনি না তাঁকে নিয়ে মন্তব্য করতে চাই না। তবে কুণাল দা আমার নিজের দলের লোক, ওঁর সঙ্গে কথা হয়েছে ভুল বোঝাবুঝি মিটে গেছে।’