Jaldapara Elephant Safari : বিক্ষোভে মাহুতরা, ক্ষুধা- তৃষ্ণায় কাতর কুনকির দল – jaldapara national park mahout and forest workers have started the movement


এই সময়, আলিপুরদুয়ার : ‘তোমরা গেইলে কি আসিবেন, মোর মাহুত বন্ধু রে…’। জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের কুনকি হাতিদেরই যেন আকুতি হয়ে উঠেছে এই অমর গানটি।

স্থায়ীকরণ ও দৈনিক ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে বুধবার ভোর থেকে জঙ্গি আন্দোলনে নেমেছেন জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের (Jaldapara National Park) মাহুত, পাতাওয়ালা ও চুক্তিভিত্তিক বনকর্মীরা। যার জেরে সকাল গড়িয়ে সন্ধে নামার পরেও ঘাসবিচালি তো দূরের কথা, সামান্য তৃষ্ণার জলটুকুও জোটেনি ৭৫টি কুনকি হাতির কপালে। সময় গড়াতেই হাতিরা খিদের জ্বালায় অস্থির হয়ে ওঠে। এমনকী, দুই কুনকি হাতি মেন্দাবাড়ি বিটের বালাসুন্দর ও হলং সেন্ট্রাল পিলখানার রঙ্গনি খিদের জ্বালা সহ্য করতে না পেরে পায়ের মোটা শিকল ছিঁড়ে বনের গহীনে পালিয়ে যায়। দিনের শেষে বালাসুন্দর ফিরে এলেও, রঙ্গনির কোনও হদিশ মেলেনি।

Orange : অজানা রোগের কোপে বক্সা পাহাড়ের কমলা
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বনকর্তার মন্তব্য, “আন্দোলনের অধিকার সবার আছে। তাই বলে অবলা প্রাণীদের প্রতি এই ধরনের অমানবিক আচরণ কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না।” আন্দোলনকারীরা কাজ বয়কট করায় জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের একশৃঙ্গ গন্ডার সমেত হাজার হাজার বন্যপ্রাণীর সুরক্ষার ক্ষেত্রে বড় ফাঁক তৈরি হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। কারণ ২১৬.৫১ বর্গকিলোমিটারের জলদাপাড়ায় টহলদারির প্রশ্নে বন দপ্তরের সবচেয়ে বড় ভরসার জায়গা এই কুনকিরাই। ক্ষুধাতৃষ্ণায় কাহিল হয়ে পড়া কুনকি হাতিদের করুণ আর্তনাদে ভারী হয়ে উঠতে শুরু করেছে জলদাপাড়ার জঙ্গলমহল।

বুধবার সাতসকালে সংশ্লিষ্ট রেঞ্জ অফিসার ও বিট অফিসারদের হাতিদের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে আন্দোলনে যোগ দেন অস্থায়ী মাহুত ও পাতাওয়ালারা। হাতিদের লালনপালনে তাঁদের যা কাজ, তা পূরণ করা বনাধিকারিকদের পক্ষে কোনও ভাবেই সম্ভব নয়। বনকর্তারা সরাসরি অচলাবস্থা নিয়ে কিছু বলতে না চাইলেও, উদ্ভুত পরিস্থিতি নিয়ে তাঁরা উদ্বিগ্ন। অচলাবস্থা কাটাতে মাথার চুল ছেঁড়ার দশা হয়েছে বনকর্তাদের।

Alipurduar Edward library : আলিপুরদুয়ারের শতাব্দী প্রাচীন এডওয়ার্ড লাইব্রেরিকে জেলা গ্রন্থাগার করার পরিকল্পনা, শুরু তৎপরতা
নিখোঁজ কুনকি রঙ্গনির মাহুত ফিকু ওঁরাও বলেন, “পায়ের শিকল ছিঁড়ে রঙ্গনির পালিয়ে যাওয়ার খবর পেয়েছি। কিন্তু আমাদেরও তো দেওয়ালে পিঠ ঠেকেছে। ওর জন্যে মন কেমন করলেও কিছু করার নেই।” আরও এক মাহুত নজমুল ইসলাম বলেন, “আমরা কি সাধে এই পথ ধরতে বাধ্য হয়েছি? আমরা তো সরকারকে সময় দিয়েছিলাম। কেউ কথা রাখেনি। ওরা আমাদের সন্তানের মতো। কিন্তু আমাদেরও তো পেট চলছে না।” জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের সহকারী বন্যপ্রাণী সহায়ক নভজিত দে বলেন, “আমরা পরিস্থিতি সামাল দিতে আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছি।”

West Bengal Tourism : সাদা চাদরে ঢেকে মাঠ! ‘তুষারপাত’ শুনেই লেপচাখা ছুটছেন পর্যটকরা
তিন দিনের উত্তরবঙ্গ সফরে এসে বুধবার রাজ্যের বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক (Forest Minister Jyotipriya Malik) রাজাভাতখাওয়ায় বলেন, “আন্দোলন হতেই পারে। তবে স্থায়ীকরণের দাবি কোনও ভাবেই মানা হবে না। কুনকি হাতিরা খাবার না পাওয়ায় আমরা কারও বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের বিরোধী। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বৃহস্পতিবার বিস্তারিত আলোচনা করা হবে এবং দৈনিক ২৮৭ টাকা ভাতার জায়গায় অনেকটাই বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আশা করছি, সব কিছু দ্রুত মিটে যাবে।”



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *