জি ২৪ ঘন্টা ডিজিটাল ব্যুরো: একটা সময় বাইশ গজের যুদ্ধে লড়াইটা কেন উইলিয়ামসন (Kane Williamson) ও আবরার আহমেদের (Abrar Ahmed) মধ্যে জমে উঠেছিল। ব্যাটার বনাম বোলারের লড়াইকে ছাপিয়ে বড় হয়ে উঠেছিল এই লড়াই। কে আগে ‘ডাবল সেঞ্চুরি’ ছুঁয়ে ফেলেবেন, সেটা নিয়েই ছিল এই লড়াই। একদিকে নিউজিল্যান্ডের (New Zealand) প্রাক্তন অধিনায়ক এগিয়ে যাচ্ছিলেন তাঁর পঞ্চম ডাবল সেঞ্চুরির দিকে। অন্যদিকে লেগ স্পিনার আবরার এগিয়ে যাচ্ছিলেন বল হাতে রান খরচের ‘দ্বিশতকে’। আর পাকিস্তানের (Pakistan) এই ‘ডাবল সেঞ্চুরি’ করে টপকে গেলেন প্রাক্তন কিউই অধিনায়ক ব্রেন্ডন ম্যাকালামকে (Brendon McCullum)। মারকুটে ব্রেন্ডন ম্যাকালাম এর আগে চারটি ‘ডাবল সেঞ্চুরি’ করেছিলেন।
শেষ পর্যন্ত পিচ আঁকড়ে পড়ে থেকেছেন বলে বেশ কিছু রেকর্ডে নাম লেখানো সম্ভব হয়েছে। পাকিস্তানের মাটিতে দুটি ‘ডাবল সেঞ্চুরি’-তে তিনিই প্রথম কিউই। বর্তমান ক্রিকেটারদের মধ্যে পাঁচ ডাবল সেঞ্চুরি আছে শুধু জো রুট (৫টি) ও বিরাট কোহলি (৭টি)। ‘ফ্যাব ফোর’ হিসেবে উইলিয়ামসনের নাম যাঁদের সঙ্গে উচ্চারিত হয়, তাঁদের অন্যতম স্টিভ স্মিথের ঝুলিতে রয়েছে ৪টি ‘ডাবল সেঞ্চুরি’।
এদিকে দু’জনের কাছে যখন ডাবল সেঞ্চুরির হাতছানি, পাকিস্তানের লেগ স্পিনারকে ‘জিতিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব’ নিলেন উইলিয়ামসন। উইকেট ছেড়ে বেরিয়ে এসে বল উড়িয়ে পাঠালেন সীমানার ওপারে। গোটা ইনিংসে তাঁর প্রথম ছয়। এই ছয়ে নিউজিল্যান্ডের ৬০০ পূর্ণ হয়। ৩৯৫ বলে ২০০ রানের অপরাজিত ইনিংস ২১টি চার ও ১টি ছক্কা দিয়ে সাজানো ছিল।
— BLACKCAPS (@BLACKCAPS) December 29, 2022
আসলে আবরারকে নয়, নিজেকেই এগিয়ে দিচ্ছিলেন উইলিয়ামসন। দুই ওভার পর একই বোলারকে মিড উইকেটে ঠেলে করলেন নিজের টেস্ট কেরিয়ারের পঞ্চম ‘ডাবল সেঞ্চুরি’। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে দ্বিতীয়। নিউজিল্যান্ডের টেস্ট ইতিহাসে পাঁচটি ‘ডাবল সেঞ্চুরি’ কিংবা পাক দলের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় ‘ডাবল সেঞ্চুরি’-দুই দিক থেকে উইলিয়ামসনই প্রথম।
আরও পড়ুন: IND vs PAK Test: ফের বাইশ গজে ‘মাদার অফ অল ব্যাটেল’! মেলবোর্নে হবে ভারত-পাকিস্তান টেস্ট ম্যাচ
— ICC (@ICC) December 29, 2022
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রথম ‘বল সেঞ্চুরি’ করেছিলেন ২০২১ সালের ৩ জানুয়ারি। ক্রাইস্টচার্চের সেই ‘ডাবল সেঞ্চুরি’-র (২৩৮) পর ৭২৩ দিন আর টেস্ট ক্রিকেটে তিন অঙ্কের দেখাই পাননি উইলিয়ামসন। এর মধ্যে নিউজিল্যান্ডের হয়ে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ জিতেছেন, অধিনায়কত্বও ছেড়েছেন। কিন্তু ব্যাট হাতে ছন্দ খুঁজে পাচ্ছিলেন না।
শুধু সেঞ্চুরিই নয়, অ্যাওয়ে টেস্টে রানও পাচ্ছিলেন না দীর্ঘদিন। ২০১৯ সালের শুরু থেকে করাচি টেস্ট শুরুর আগে নিউজিল্যান্ডের বাইরে টেস্ট খেলেছেন ৮টি। যেখানে ১৫.৫৩ গড়ে রান তুলতে পেরেছেন মাত্র ২৩৩ রান। সর্বোচ্চ ৪৮ রান। তৃতীয় দিনেই পেয়ে গিয়েছিলেন সেঞ্চুরি। ম্যাচের চতুর্থ দিন সেরে ফেললেন ‘ডাবল সেঞ্চুরি’। তবে এই ম্যারাথন ইনিংস খেলতে তাঁর সঙ্গ দিয়েছেন ইশ সোধি। এই লেগ স্পিনার করেন ১৮০ বলে ৬৫ রান। ফলে প্রথম ইনিংস ৯ উইকেটে ৬১২ রানে ডিক্লেয়ার দেয় নিউজিল্যান্ড। এর আগে পাকিস্তানের প্রথম ইনিংস ৪৩৮ রানে থেমে গিয়েছিল। উইলিয়ামসনের ধৈর্যশীল ইনিংসের জন্যই করাচি টেস্টে ১৭৪ রানের লিড পেয়েছিল কিউইরা।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে পাক দলের শুরুটা ভালো হয়নি। ইতিমধ্যেই ৭৭ রানে ২ উইকেট হারিয়েছে পাক দল। ফলে এখনও ৯৭ রানে এগিয়ে রয়েছে টিম সাউদি-র দল। তবে পাকিস্তানের কাছে ইতিবাচক দিক হল বাবর আজম এখনও ব্যাট করতে নামেননি। শেষ দিনে পাক দলের বিপর্যয় রোধ করতে হলে ফের একবার বাবরকে রুখে দাঁড়াতে হবে। সেটা হলে ভালো। আর সেটা না হলে বাবরের নেতৃত্ব থেকে বিদায় নেওয়া সময়ের অপেক্ষা। কারণ এর আগে ঘরের মাঠে বাবরের অধিনায়কত্বে অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে সিরিজ হেরেছে পাকিস্তান।