Siliguri News পরিবারের মুখে দু মুঠো অন্ন তুলে দেওয়ার উদ্দেশে পাড়ি দিয়েছিল ভিন রাজ্যে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বাড়ি ফিরল তাদের নিথর দেহ। জলপাইগুড়ির দুই পরিযায়ী শ্রমিকের মর্মান্তিক মৃত্যুতে গ্রাম জুড়ে উঠল কান্নার রোল। একইসঙ্গে প্রশসানকেও দোষারোপ করতে ছাড়লেন না মৃতদের পরিবার।
রাজ্যে বহুদিন ধরেই বন্ধ ১০০ দিনের কাজ। তাই কাজের অভাবে ভিনরাজ্যের যেতে হচ্ছে গ্রামের ছেলেদের। তাই তো এমন দুর্ঘটনার মুখে পড়ছে তারা অভিযোগ গ্রামবাসীদের। জানা গিয়েছে, কাজের সন্ধানে সিকিমে গিয়েছিলেন ধামিপাড়ার এক দল যুবক। সেখানে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে গিয়েই এই বিপত্তি। স্থানীয় সূত্রে খবর, সিকিমে কাজ করতে গিয়ে ধসের কবলে পড়ে জলপাইগুড়ির ৫ শ্রমিক। তাদের মধ্যে তিনজনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। বাকি দুই জনের নিথর দেহ উদ্ধার করেছে উদ্ধারকারী দল। মৃত দুজন জলপাইগুড়ি জেলার সদর ব্লকের বারোপাটিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীন ধামিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। মৃতদের নাম রবি রায়, বয়স ৩২ বছর। পিতা কর্ণ রায়। অন্যজন সুধরাম ওঁরাও। বয়স ৪২ বছর। তাঁর পিতা শুকরা ওঁরাও। আহত প্রশান্ত রায় সহ তিন জনকে নিয়ে আসা হয়েছে শিলিগুড়িতে। তাদের চিকিৎসা চলছে শিলিগুড়ি এক বেসরকারি হাসপাতালে। North Sikkim Army Accident : বড়দিনের মাঝেই বিষাদের সুর, সিকিমে মৃত সেনার দেহ এল বাঁকুড়ার গ্রামে
ভাগ্যক্রমে বেঁচে গিয়েছেন বলে মনে করছেন জগৎ রায়। দুর্ঘটনাগ্রস্থ যুবকদের সঙ্গী ছিলেন তিনি। জগৎ রায়ও মৃত যুবকদের সঙ্গে সিকিমের পেলিঙে একই জায়গায় কাজ করতেন। শুক্রবারই কয়েকদিনের ছুটি নিয়ে বাড়ি আসেন তিনি। সেদিন না ফিরলে ওই যুবকদের সঙ্গে তাঁরও কাজে যাওয়ার কথা ছিল। জগতেরও পরিবার সেই কথা ভেবে শিউড়ে উঠছেন। শুক্রবার রাতেই আসে দুঃসংবাদ। গ্রাম প্রধান কৃষ্ণ দাস জানিয়েছেন, ”খুবই দুখঃজনক ঘটনা, মৃতদেহ গ্রামে পৌঁছেছে যথাযত ভাবে সৎকারের কাজ করা হচ্ছে, আমরা সবাই সন্তান হারানো এই দুই পরিবারের পাশে আছি।”
উল্লেখ্য, রাজ্য জুড়ে চলা জীবিকার আকালের বলি হতে হল এই দুই গ্রামীণ যুবককে। গ্রামে গঞ্জে নেই কর্মসংস্থান, বন্ধ একশো দিনের কাজ। যার জন্য বহু যুবক নিত্যদিন জীবিকার সন্ধানে ভিন রাজ্যে পাড়ি দিতে একপ্রকার বাধ্য হচ্ছেন বলেই মনে করছেন এলাকাবাসী। একসঙ্গে শোকের চাদরে ঢাকা জলপাইগুড়ির বারোপেটিয়া অঞ্চলের ঝাকুয়াপাড়া ও ধামীপাড়া।