নাট্যকর্মী হিরণ্ময় ঘোষ, তাঁর ব্রেন ডেথের পর তাঁর হার্ট, লিভার ও দু’টি কিডনি পেলেন কলকাতাতেই চিকিৎসাধীন চার রোগী।

হাইলাইটস
- বর্ধমানের নাট্যকর্মী হিরণ্ময় ঘোষ এক থেকে পাঁচ হলেন বর্ষশেষের প্রাক্কালে।
- বৃহস্পতিবার কলকাতার হাসপাতালে তাঁর ব্রেন ডেথের পর তাঁর হার্ট, লিভার ও দু’টি কিডনি পেলেন কলকাতাতেই চিকিৎসাধীন চার রোগী।
- তাঁর মরণোত্তর ফুসফুস পাড়ি দিল চেন্নাইয়ের এক রোগীর শরীরে প্রতিস্থাপিত হবে বলে।
কর্নিয়া দু’টি সংরক্ষণ করে রাখা হচ্ছে দৃষ্টিহীন দু’জনের চোখে প্রতিস্থাপনের জন্যে। সময় বাঁচাতে বাকি অঙ্গগুলির পরিবহণে গ্রিন করিডর ছাড়া উপায় ছিল না। বিকেলে একটি গ্রিন করিডরে মেডিকা থেকে চার্নক হাসপাতালে যায় একটি কিডনি। পর পর দু’টি গ্রিন করিডর করে দু’বারে লিভার ও একটি কিডনি পৌঁছয় এসএসকেএমে। এবং চতুর্থ গ্রিন করিডরের মাধ্যমে মুকুন্দপুর থেকে বিমানবন্দরে পৌঁছে যায় ফুসফুস। মরণোত্তর শ্বাসযন্ত্রটি তার পর পাড়ি দেয় চেন্নাইয়ে (Chennai)। সেখানকার এমজিএম হাসপাতালে বিকল ফুসফুসের এক বছর চুয়াল্লিশের রোগিণীর শরীরে তা প্রতিস্থাপিত হয় রাতে। হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপিত হয় মেডিকাতেই চিকিৎসাধীন এক বছর বাহান্নর রোগীর বুকে। লিভার বাদে এ দিন রাতেই মিটে যায় বাকি অঙ্গগুলির প্রতিস্থাপন-পর্ব। পেশায় দন্তরোগ বিশেষজ্ঞ, এসএসকেএমে চিকিৎসাধীন এক চল্লিশোর্ধ্ব লিভার ক্যান্সার রোগীর শরীরে লিভার প্রতিস্থাপনের অস্ত্রোপচার শেষ হতে শনিবার প্রায় সকাল হয়ে যায়। ওই হাসপাতালেই বছর চৌঁত্রিশের এক মহিলা একটি কিডনি পেয়েছেন। চার্নক হাসপাতালে অন্য কিডনিটি প্রতিস্থাপিত হয় ব্যারাকপুর পূর্ব কোদালিয়ার বাসিন্দা বছর পঞ্চান্নের এক প্রৌঢ়ার শরীরে। প্রতিস্থাপনের পর সব গ্রহীতাই স্থিতিশীল রয়েছেন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
বুধবার দুপুরে ব্রেন স্ট্রোক হয় বর্ধমানের হাটগোবিন্দপুরের পরিচিত নাট্যকর্মী তথা শিক্ষক হিরণ্ময়ের। ‘সমবেত প্রয়াস’ নাট্যদলে দীর্ঘদিন কাজ করা ওই প্রৌঢ়কে প্রবল মাথা যন্ত্রণা, আচ্ছন্ন ভাব ও খিঁচুনির লক্ষণ নিয়ে স্থানীয় হাসপাতাল থেকে নিয়ে আসা হয় কলকাতায়। মেডিকার স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ সুনন্দন বসুর অধীনে ভর্তি করানো হয় তাঁকে। কিন্তু চিকিৎসকেরা বুধবার রাতেই বুঝে যান, রোগী ক্রমেই ব্রেন ডেথের দিকে এগোচ্ছেন। মেডিকার ডেপুটি মেডিক্যাল ডিরেক্টর অমিত রায় জানান, বৃহস্পতিবার ব্রেন ডেথ হলে পরিবারের তরফেই অঙ্গদানের ইচ্ছাপ্রকাশ করা হয়। সেই মতো অঙ্গ প্রতিস্থাপনের জন্যে গ্রহীতাদের খোঁজ সেরে ফেলা হয় প্রতিস্থাপন বিষয়ে পূর্ব ভারতের নিয়ামক সংস্থা রোটো-র (রিজিওনাল অর্গ্যান অ্যান্ড টিস্যু ট্রান্সপ্ল্যান্ট অর্গানাইজেশন) তরফে। তার পরেই হয় অঙ্গদান। রোটো’র অতিরিক্ত অধিকর্তা অর্পিতা রায়চৌধুরীর আশা, ‘এ ভাবে এক জনের ব্রেন ডেথের পর পাঁচ জনের নবজীবন পাওয়া আগামী দিনে মানুষের মধ্যে অঙ্গদানে সচেতনতা নিশ্চিতই আরও বাড়াবে।’
আশপাশের শহরের খবর
Eisamay News App: আশপাশের তাজা ও গুরুত্বপূর্ণ খবর বাংলায় পড়তে ডাউনলোড করুন এই সময় অ্যাপ
