মৈত্রেয়ী ভট্টাচার্য: বর্ষবরণে শহরে বেনজির বেপরোয়া গতি। বর্ষবরণের রাত থেকে নতুন বছরের প্রথম দিন রাত ১০টা পর্যন্ত শুধুমাত্র পিজির ট্রমাকেয়ারেই ১৭০টির কাছাকাছি রোড ট্রাফিক অ্যাক্সিডেন্টের কেস এসেছে। যার প্রায় এক তৃতীয়াংশ কলকাতার। বাকিরা কলকাতা সংলগ্ন জেলার। ৪০ জনেরও বেশি আহতকে ভর্তি নিয়েছে পিজি। ৯ জনকে রাখতে হয়েছে ভেন্টিলেশনে। সংখ্যাটা এত বেশি না হলেও আরজিকরের ট্রমা কেয়ারেও গত ২৪ ঘণ্টায় পথ দুর্ঘটনা কবলিতদের আসার সংখ্যাও যথেষ্টই বেশি।
পাশাপাশি এও জানা গিয়েছে যে এই দুর্ঘটনা কবলিত মানুষের মধ্যে একটি বড় অংশ বাইক চালক। এদের মধ্যে বেশিভাগই পুরুষ এবং তাদের বয়স ৩৫ থেকে ৪৫-এর মধ্যে। চিন্তার বিষয় হল এই আহতদের সংখ্যা শুধুমাত্র এসএসকেএম-এর ট্রমা কেয়ারের পাশাপাশি অন্যান্য হাসপাতালেও যথেষ্ট বেশি।
এসএসকেএম ছাড়াও আরজি কর হাসপাতালেও ট্রমা কেয়ার সেন্টার রয়েছে। আরজি করের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন এসএসকেএম-এর মতো এত বেশি রোগী না থাকলেও অন্যান্য দিনের তুলনায় অনেকটাই বেশি ছিল দুর্ঘটনাগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা।
একই ছবি দেখা গিয়েছে বিভিন্ন সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতালের জরুরি বিভাগে। বিভিন্ন সময়ে বর্ষবরণের রাতে বহু মানুষ লাগামছাড়া এবং বেপরোয়া হয়ে পড়েন। প্রতিদিন এই উৎসব উদযাপনের ক্ষেত্রে বাঁধনহারা মনোভাব দেখা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: Abhishek on SSC: সত্যের সঙ্গে থাকুন; সরকার চায় সবার চাকরি হোক, চাকরিপ্রার্থীদের বার্তা অভিষেকের
রবিবার ভোররাতে দিল্লির সুলতানপুরী এলাকাতেও এক তরুণীর স্কুটির সঙ্গে একটি গাড়ির ধাক্কা লাগে। দুর্ঘটনার পরই কোনওক্রমে ওই তরুণীর পোশাকের অংশ গাড়ির চাকার সঙ্গে জড়িয়ে যায়। এরপর ওই তরুণীকে দুরন্ত গতিতে কয়েক কিলোমিটার টেনে নিয়ে যান গাড়টি। শেষমেষ যখন ওই গাড়িটি পুলিস আটক করে তখন তরুণীরে শরীরে কোনও পোশাক অবশিষ্ট ছিল না। দেহের অধিকাংশ জায়গার মাংস খুবলে বেরিয়ে যায়।
গত দুই বছর কোভিড থাকায় বিভিন্ন সময়ে নাইট কার্ফ্যু জারি ছিল। ফলত মধ্য রাতে গাড়ি নিয়ে বেরনোর এই ছবি সব সময় দেখা যায়নি। ফলত এই দুই বছরের নিয়মের প্রভাব এই বছরের বর্ষবরণের উদযাপনে পড়েছে বলেও মনে করছেন অনেকেই।
যদিও অনেকেই জানিয়েছেন যে বর্ষবরণ ছাড়া অন্যান্য সময়েও কলকাতা শহরে মধ্যরাতে অত্যাধুনিক গাড়ি এবং বাইক নিয়ে দ্রুত গতিতে চালানো খুব সাধারণ ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।