তৃণমূল মনে করছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন পশ্চিমবঙ্গের রেল ব্যবস্থাকে যে ভাবে ঢেলে সাজা হয়েছিল, তার সিকিভাগও করতে পারেনি মোদী সরকারের রেল মন্ত্রক। এখন নিজেরা নিজেদের ঢাক পিটিয়ে আসলে শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা চলছে। বিজেপির ব্যাখ্যা, রেল মন্ত্রক পরিসংখ্যান দিয়ে দেখিয়েছে, বাংলা তাদের কাছে ব্রাত্য নয়, এর পর আর কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগ তৃণমূলের তরফে তোলা অনুচিত। ভারতীয় রেলের তরফে প্রেস বিবৃতি দিয়ে দাবি করা হয়েছে, চিত্তরঞ্জন লোকোমোটিভ ওয়ার্কসে ২০২১-‘২২ অর্থবর্ষে ৪৮৬টি লোকোমোটিভ তৈরি করা হয়েছে- যার ফলে চিত্তরঞ্জন লোকোমোটিভ পরিণত হয়েছে বিশ্বের বৃহত্তম বৈদ্যুতিক ইঞ্জিন তৈরির কারখানায়। এর পাশাপাশি, ভারতীয় রেলের দাবি- গত আট বছরে বাংলায় তিনটি নতুন লাইন, তিনটি শাখার গেজ পরিবর্তন, ২৮টি ডাবল লাইন এবং ৮৭৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পথে ট্র্যাক পাতার কাজ হয়েছে।
রেল জানিয়েছে, ২০১৪ থেকে ২০২২, এই ৮ বছরে বাংলায় ১৪৪টি ফুট ওভারব্রিজ, ৭৩টি লিফ্ট, ১০৪টি চলমান সিঁড়ি, ২৭২টি সাধারণ শৌচালয়, বিশেষ ভাবে সক্ষমদের জন্য ৩৭৯টি শৌচালয়, ১৫টি প্রতীক্ষালয় তৈরি হয়েছে। প্ল্যাটফর্ম সম্প্রসারণের কাজ হয়েছে ২৫৬টি স্টেশনে। ৯৮টি স্টেশন এসেছে সিসিটিভি ক্যামেরার নজরদারির আওতায় এবং ৫০৯টি স্টেশনে ওয়াই-ফাইয়ের সুবিধে পেয়েছেন যাত্রীরা। রাজ্যের ৬টি স্টেশনে প্রিমিয়াম লাউঞ্জ তৈরি হয়েছে। পরিবেশবান্ধব শক্তি উৎপাদনের জন্য রাজ্যের ৪৩টি স্টেশনে সোলার প্যানেল বসিয়েছে রেল, সেখান থেকে ১১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের কাজও শুরু হয়েছে। রেলের উন্নয়নের দীর্ঘ ফিরিস্তির তালিকায় আলাদা করে গুরুত্ব পেয়েছে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো।
তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেনের বক্তব্য, ‘পশ্চিমবঙ্গে রেল ব্যবস্থায় যা উন্নয়ন হয়েছে, সেটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকার সময়েই। আর মোদী সরকারের আমলে রেল প্রবীণ নাগরিকদের টিকিটে ছাড় দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে, ভাড়া বাড়িয়েছে। এ সবও ফিরিস্তির তালিকায় থাকা উচিত ছিল!’ পাল্টা রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘তৃণমূলের এক নেতারই বক্তব্য ছিল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলকে আইসিইউ-তে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। পশ্চিমবঙ্গে রেলের যে বড় প্রকল্পগুলি হয়েছে, তা সবই মোদী সরকারের জমানায়।’