কাজে পুলিশের হস্তক্ষেপ নিয়ে নয়া বিতর্কে কলকাতা পুরসভা। পুরোনো বাড়ি ভেঙে নতুন বাড়ি তৈরির অনুমোদন দেওয়ার আগে সেখানকার ভাড়াটেদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জোগাড়ের ব্যাপারে স্থানীয় থানাকে দায়িত্ব দিতে বিল্ডিং বিভাগের ডিজিকে নির্দেশ দিয়েছেন মেয়রের ওএসডি। যদিও পুরসভার অ্যাসেসমেন্ট ও বিল্ডিং বিভাগের কর্মীরা এই কাজটা করে এসেছেন। সেই প্রথা ভেঙে ভাড়াটে যাচাইয়ের দায়িত্ব পুলিশকে দেওয়ায় অফিসারদের মধ্যে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। পুরসভার কাজে পুলিশের অবাঞ্ছিত হস্তক্ষেপ হিসাবে একে দেখছেন অনেকে।
পুরকর্তাদের অবশ্য যুক্তি, অনেক সময়ে ভাড়াটে সংক্রান্ত তথ্য গোপন করে পুরসভার কাছ থেকে বাড়তি সুযোগ নেন প্রোমোটার বা ডেভেলপাররা। তা ছাড়া, প্রকৃত ভাড়াটেকে বঞ্চিত করে তালিকায় ভুয়ো নামও ঢোকানো হয় অনেক ক্ষেত্রে। এ সব আটকাতেই পুলিশকে দিয়ে আরও একবার সমীক্ষার পথ ধরা হচ্ছে।
পুরসভার এক আধিকারিক বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার তালিকা তৈরি নিয়ে এমনিতেই শোরগোল চলছে। এই পরিস্থিতিতে আমরা ঝুঁকি নিতে রাজি নই। তাই যাবতীয় সতর্কতা অলম্বন করা হচ্ছে। কোন বাড়িতে কত ভাড়াটে আছেন, তার হিসাব থাকে থানায়। তাই পুলিশ তদন্ত করলে যথাযথ তথ্য মিলবে।’
পুরসভা সূত্রের খবর, যে সব বাড়ির ক্ষেত্রে পুলিশকে দিয়ে ভাড়াটের তথ্য যাচাই করতে বলা হয়েছে, সেই কাজ সম্পন্ন করে ফেলেছেন আধিকারিকরা। কলকাতায় বিল্ডিং প্ল্যান অনুমোদনে পুরসভার সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারক কমিটি তথা মিউনিসিপ্যাল বিল্ডিং কমিটির বৈঠকে এঁদের দেওয়া প্রস্তাব পাশ হয়ে গিয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী, এরপর সেটা পুরসভার মেয়র পারিষদের বৈঠকে যাওয়ার কথা। সেখানে পাশ হলে বাড়িগুলির নকশা অনুমোদন করবে বিল্ডিং বিভাগ। কিন্তু তার আগে পুলিশকে দিয়ে নতুন করে তথ্য যাচাইয়ের নির্দেশে গোটা প্রক্রিয়া পিছিয়ে যাবে বলে অনেকের আশঙ্কা।
বিল্ডিং বিভাগের এক ইঞ্জিনিয়ার বলেন, ‘ভাড়াটেদের সম্পর্কে তথ্যানুসন্ধানের কাজটা মূলত করে অ্যাসেসমেন্ট বিভাগ। তারপর তা খতিয়ে দেখে বিল্ডিং বিভাগ। সেই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর পুলিশকে দায়িত্ব দেওয়ার অর্থ, পুর-অফিসারদের উপর অনাস্থা দেখানো। এতে আমরা অসম্মানিত বোধ করছি।’ মিউনিসিপ্যাল বিল্ডিং কমিটিতে পাশ হওয়া ন’টি বাড়ির ক্ষেত্রে পুলিশকে তথ্য যাচাই করতে বলা হয়েছে।
পুর কমিশনার বিনোদ কুমার এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘আপনার কাছে নির্দেশের কপি থাকলে পাঠান। আমি দেখে আপনাকে জানাচ্ছি।’ সেই মতো পুর কমিশনারকে নির্দেশের কপি হোয়াটসঅ্যাপ করা হলেও তিনি আর ফোন তোলেননি। মেয়রকে একাধিক বার ফোন করা হলেও জবাব মেলেনি।