তাই, করোনা ফের বাড়াবাড়ি করবে, এমনটা মানতে নারাজ বিশেষজ্ঞদের একটা বড় অংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন, যদি পঞ্চম বারের জন্য ঢেউ আসেও, তা হলে রোগীদের মূলত মৃদু উপসর্গই থাকবে। কো-মর্বিডিটি থাকা বড়জোর ২ শতাংশ রোগীর বেশি কাউকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে না- এমনটাই জানাচ্ছেন তাঁরা। সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ যোগীরাজ রায়ের বক্তব্য, ‘এক বছর আগে ওমিক্রন ছেয়ে যাওয়ার সময়েই বোঝা গিয়েছিল, করোনার শেষের শুরু হয়ে গিয়েছে। কোভিড একেবারে সাধারণ সর্দি-কাশির পর্যায়ে নেমে এসেছে। করোনা হলে নিউমোনিয়া আর ফুসফুসে থাবা বসাচ্ছে না। পরবর্তী কালে ওমিক্রনেরই একাধিক তুতো ভাই এসেছে। সেগুলোও ধারে-ভারে দুর্বল ছিল। এখন যে বিএফ.৭ জাতভাই এসেছে ওমিক্রনের, তার ক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম হবে না।’ তিনি জানান, সাধারণ মরশুমি জ্বর-সর্দি-কাশি বা কমন কোল্ডে ভুগলে যেমন স্রেফ প্যারাসিটামল এবং অ্যান্টি অ্যালার্জিক-এ অসুখ সেরে যায়, এখন করোনা হলেও তেমনটাই যথেষ্ট।
এক বছর আগে যখন ওমিক্রন দাপাদাপি শুরু করেছিল, যখন করোনার লেখচিত্র শিখর ছুঁয়েছিল, সেই সময়ে গোটা রাজ্যে গড়ে রোজ আড়াই-তিন হাজার রোগী হাসপাতালে ভর্তি থাকতেন। কিন্তু এখন শহরের হাসপাতালগুলি থেকে কোভিড ওয়ার্ড এক রকম উঠেই গিয়েছে। মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অরিন্দম বিশ্বাস বলছেন, ‘করোনাকে লোকে আর গুরুত্ব দিচ্ছে না। অনেক আপাত সাধারণ সর্দি-কাশি হয়তো আদতে কোভিডই। কিন্তু টেস্ট হচ্ছে না বলে চিহ্নিতও হচ্ছে না। কয়েক দিনে এমনিই সেরে যাচ্ছে। তাই, হাসপাতালে ভর্তির প্রশ্নও ওঠে না।’বেসরকারি ক্ষেত্রে সব চেয়ে বেশি কোভিড রোগী সামলে এসেছে আমরি হাসপাতাল। ওই গোষ্ঠীর তিনটি হাসপাতাল মিলিয়ে ২০২২-এর জানুয়ারিতে যেখানে প্রতিদিন গড়ে শ’ চারেক করোনা রোগী ভর্তি থাকতেন, সেখানে এখন তিনটি হাসপাতালই কোভিডশূন্য। তা-ও ৬টি আইসোলেশন বেড রেখে দেওয়া হয়েছে ভবিষ্যতে দরকার হলে যাতে সেগুলিকে কোভিড বেডে রূপান্তর করা যায়, সেই জন্য। একই ছবি উডল্যান্ডসেও। ওই হাসপাতালেও আর করোনার জন্য আলাদা বেড নেই। মাত্র দু’টি আইসোলেশন বেড রাখা হয়েছে, যদি পরে দরকার হয়, সে কথা ভেবে। অক্টোবরের পর আর কোনও করোনা রোগী ভর্তি হননি উডল্যান্ডস এবং আরএন টেগোরে। পিয়ারলেস হাসপাতালে ঠিক এক বছর আগে গড়ে রোজ শ’দুয়েক রোগী ভর্তি থাকতেন। সেখানেও সংখ্যাটা শূন্য।