তাঁর সাফ কথা, “আমি কারও প্ররোচনায় স্ত্রীর মৃতদেহ কাঁধে তুলে নিইনি। প্ররোচনার ঘটনা যদি হয়ে থাকে তাহলে এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করা হোক। ৭৭ বছর বয়সে কেন আমি সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলব? আমি ১৮ বছর ধরে তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress) করি। অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতেই কাঁধে মৃতদেহ তুলে নিয়েছিলাম। সংবাদমাধ্যম ছবি তুলে ভালো করেছে। নাহলে সাধারণ মানুষ এই বিষয়টা জানতেও পারত না।”
এদিন মৃতার স্বামী জয়কৃষ্ণ দেওয়ান জলপাইগুড়ি জেলা শাসকের (Jalpaiguri District Magistrate) মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) চিঠি দিয়ে মৃতদেহ পরিবহনের জন্য বিনামূল্যের ব্যবস্থার দাবি করেছেন। প্রসঙ্গত, এলাকার প্রধানের করা একটি Video দেখিয়ে কিছু কিছু মহল থেকে দাবি করা হচ্ছিল রাজ্য সরকারকে বদনাম করতে এই কাজ করা হয়েছিল। সেটাও যে মিথ্যা ক্যামেরার সামনে পরিস্কার জানিয়ে দিলেন জয়কৃষ্ণ দেওয়ান। জয়কৃষ্ণ বলেন, “আমি চাই সরকার বিষয়টি দেখুক। কেন আমাকে ওয়ার্ড মাষ্টার বললেন সরকারী কোনও পরিষেবা নেই? বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স চালকরা আমার কাছে ৩ হাজার টাকা দাবি করেছিল। আমি অসহায় হয়েই মৃতদেহ কাঁধে তুলে নিয়েছিলাম। এর পিছনে কোনও পরিকল্পনা বা উদ্দেশ্য ছিল না আমাদের।”
জয়কৃষ্ণ জানান, হাসপাতালেরই অ্যাম্বুল্যান্স। কিন্তু মরদেহ বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে তিন হাজার টাকা দাবি করে। অত টাকা দেওয়ার ক্ষমতা না থাকায় তিনি ও তাঁর ছেলে দেহ ঘাড়ে নিয়েই বাড়ির রওনা হয়েছিলেন।
অমানবিক এই ঘটনাটি নজরে আসতেই গত বৃহস্পতিবার রাজ্যজুড়ে শোরগোল পড়েছিল। প্রশ্ন উঠেছিল বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্স এবং শববাহী গাড়ির দর হাঁকানো নিয়ে। পরে সংশ্লিষ্ট অ্যাম্বুল্যান্স চালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন পুলিশ সুপার। জলপাইগুড়ি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও পাঁচ সদস্যের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি তৈরি করে। জলপাইগুড়ির জেলাশাসক এদিন জানান, জয়কৃষ্ণ দেওয়ানের আবেদনপত্র তিনি পেয়েছেন। তিনি আবেদনপত্রটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষর কাছে পাঠাবেন। তিনি বলেন, “ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি তৈরি করে তদন্ত চলছে। অ্যাম্বুল্যান্স ও শববহনকারী গাড়িগুলির কিলোমিটার প্রতি ভাড়া নির্ধারণের জন্য বৈঠক ডাকা হয়েছে।”