বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে প্রশ্ন করা হয়, এর সঙ্গে রাজ্যের শাসকদলের যোগ আছে বলে তিনি মনে করেন কিনা। বিচারপতি বলেন, ‘আমি কোনও দলের কথা বলছি না। কোনও দল করেছে কিনা, আমি জানি না। টিভিতে আমি শুনেছি, শাসকদল এটা প্রত্যাখ্যান করেছেন। তাঁরা বলেছেন, তাঁরা এটা করেননি। কিন্তু যাঁরা করেছেন, তাঁদের আমরা চিনি, তাঁদের আমরা জানি। কে করেছেন, কী উদ্দেশ্যে, সেটা তদন্তসাপেক্ষ।’ গত বছর তাঁর এজলাস বয়কটের পথেও হেঁটেছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের একদল আইনজীবী। বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার সঙ্গেই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় যে সব মামলার শুনানি করছিলেন, তা তাঁদের এজলাস থেকে সরানোর আবেদন জমা পড়েছিল হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির এজলাসে। প্রধান বিচারপতি সেই আবেদনে সাড়া না-দেওয়ায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস ক’দিনের জন্যে বয়কট করেছিলেন আইনজীবীদের একাংশ। যদিও কিছু দিন পরে তা উঠেও যায়।
প্রবীণ আইনজ্ঞ থেকে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিরা অনেকেই সোমবারের ঘটনার পর বলেছেন, যে ভাবে বিচারপতি মান্থার এজলাস বয়কট হয়েছে বা বাড়ির সামনে পোস্টার সাঁটা হয়েছে, তাতে ক’দিন বাদে বাড়িতে ঢুকে হামলাও হতে পারে। এ দিন আর এক অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি দেবাশিস করগুপ্ত সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘যদি কোনও বিচারপতির রায় পছন্দ না-হয় তা হলে তা সংশোধনের জন্যে আপিলের সুযোগ আছে উচ্চতর আদালতে। যে পোস্টার বিচারপতির বাড়ি বা হাইকোর্ট চত্বরে দেওয়া হয়েছে অথবা এজলাসের দরজা বন্ধ করে আইনজীবীদের প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়েছে, এই ধরনের কাজ যারা করে, তার একটাই পরিচয়, দুষ্কৃতকারী। এটা প্রত্যক্ষ ভাবে ইন্টারফারেন্স উইথ দ্য অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অব জাস্টিস।’
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ও বিচারপতি মান্থার এজলাসের দরজা আটকানোর ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাঁর মন্তব্য, ‘আমি হাইকোর্টে ২৩ বছর প্র্যাকটিস করেছি। পাঁচ বছর বিচারপতির আসনে আছি। আমি কোনও দিন এই ঘটনা দেখিনি। এত সাহস কোন দুর্বৃত্তদের হচ্ছে, সেটা খুঁজে বের করা দরকার।’ তাঁর সম্পর্কেও রাজ্যের শাসকদলের কেউ কেউ সরব হয়েছেন–এই প্রসঙ্গ তোলায় বিচারপতির মন্তব্য, ‘শাসকদলের অনেকে আমাকে ভালোওবাসেন।’