আদালতের নির্দেশ ছিল – অযোগ্যদের সরিয়ে যোগ্যদের শিক্ষকতার চাকরি দেওয়া শুরু করতে হবে। নবম-দশমে র্যাঙ্ক জাম্প করে ১০২টি পদে প্রার্থীদের নিয়োগ করা হয়েছিল। কিন্তু করোনা-পর্বে এঁদের কেউ স্কুলে যোগ দিতে পারেননি। সেই পদগুলিতেই ওয়েটিং লিস্টে থাকা ৬৫ জনের কাউন্সেলিং সম্পন্ন হয়েছে স্কুল সার্ভিস কমিশন বা এসএসসি-তে। আজ, বুধবার ৫১ জনকে নিয়োগপত্র দেওয়ার কথা মধ্যশিক্ষা পর্ষদের। কিন্তু এই প্রক্রিয়াও ‘নিষ্কণ্টক’ নয় বলে অভিযোগ চাকরিপ্রার্থীদের একাংশের। সূত্রের খবর, ২০১৯-এর ফেব্রুয়ারি-মার্চে ধর্মতলায় আন্দোলনরত যুব-ছাত্র অধিকার মঞ্চের এক নেত্রী একাদশ-দ্বাদশে অন্যদের টপকে চাকরি পেয়েছিলেন। সেটাও নিজের জেলা সদরের স্কুলে। একাদশ-দ্বাদশে র্যাঙ্ক জাম্প করে যে ৩৯ জন নিয়োগপত্র পেয়েছিলেন, সেই তালিকায় তিনিও আছেন। আদালত সূত্রে খবর, সিবিআই-তদন্তে দিল্লি-গাজিয়াবাদে উদ্ধার হওয়া হার্ড ডিস্ক এবং ওএমআর শিট এখনও ওয়েবসাইটে আপলোড করা হয়নি। র্যাঙ্ক জাম্প করা প্রার্থীদের তালিকাও প্রকাশিত হয়নি। তাই এক সময়ে আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা ওই প্রার্থীর নাম থেকে গিয়েছে অজ্ঞাত।
জানা গিয়েছে, চাকরি হারানোর আশঙ্কায় ওই প্রার্থী উত্তরবঙ্গ ছেড়ে শুক্রবার রাঢ়বঙ্গের একটি স্কুলে নবম-দশমের কাউন্সেলিংয়ে হাজির হয়ে স্কুল পছন্দ করেছেন। এসএসসি তাঁকে নিয়োগের সুপারিশ করেছে। আন্দোলনকারীদের প্রশ্ন, একাদশ-দ্বাদশের শিক্ষকতা ছেড়ে কেউ নবম-দশমে যোগ দিতে গেলে তিনটি ইনক্রিমেন্ট হারাবেন। যার জেরে মাসিক বেতন ১৩,২০০-১৫,১৫০ টাকা পর্যন্ত কমতে পারে। যদিও আদালতই গত ২৮ সেপ্টেম্বর জানিয়েছিল, যাঁরা বেআইনি ভাবে চাকরি পেয়েছেন, তাঁরা এগিয়ে এসে ৯ নভেম্বরের মধ্যে চাকরি ছাড়ুন। সে ক্ষেত্রে তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা হবে না। কিন্তু তাঁরা নিজে থেকে চাকরি না ছাড়লে এবং নিয়োগ বেআইনি বলে প্রমাণিত হলে ৭ নভেম্বরের পরে কোর্ট পদক্ষেপ করবে।
আবার, ওএমআর শিটের এমসিকিউ উত্তর হোয়াইটনার দিয়ে ঠিক করা এক চাকরিপ্রার্থীর নামও থেকে গিয়েছে এসএসসি-র ৫১ জনের সুপারিশের তালিকায়। অভিযোগ, ওই প্রার্থী ওএমআরে রোল নম্বরের পাশাপাশি ৫৫টি প্রশ্নের মধ্যে ৬ টি প্রশ্নে হোয়াইটনার ব্যবহার করেছিলেন। এর মধ্যে ১২, ২৬, ২৯, ৩১ এবং ৩৩ নম্বর প্রশ্নের ভুল উত্তর হোয়াইটনার দিয়ে ঠিক করার পর তাঁর চাকরি হয়েছে বলে অভিযোগ। যদিও সিবিআই তদন্তে উঠে আসা, কারচুপিতে অভিযুক্ত ৯৫২টি ওএমআরে ওই প্রার্থীর নাম নেই। এখানেও শেষ নয়। কাউন্সেলিংয়ে থাকা এক প্রার্থীর নাম রয়েছে আবেদনপত্রের জেনারেল ক্যাটেগরিতে। অথচ এসএসসি-র মেধাতালিকা, কাউন্সেলিং এবং সুপারিশপত্রে তিনি ওবিসি-এ তালিকাভুক্ত। এ সব বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে, কমিশনের চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার বলেন, ‘আদালতের নির্দেশ মেনে মেধাতালিকায় থাকা প্রার্থীদের কাউন্সেলিংয়ে ডাকা হচ্ছে। কোনও প্রার্থী সম্পর্কে নির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে তখন খতিয়ে দেখা হবে।’