বুধবার নিজাম প্যালেসে সিবিআই জেরায় মানিক ঘনিষ্ঠ তাপস মণ্ডলের মুখে উঠে আসে হুগলির যুবনেতার কীর্তি। নিয়োগ দুর্নীতিতে নাম জড়াতেই সুর চড়িয়েছেন হুগলির বলাগড়ের বিরোধীরা। তাদের দাবি, যুবনেতার কাছে এত টাকা থাকলে বড় নেতার কাছে কত মিলবে? তবে শুধু সাড়ে ১৯ কোটি নয় চাকরি দেওয়ার নাম করে আরও টাকা তুলেছে ওই তৃণমূল নেতা বলে দাবি। প্রশ্নের মুখে জেলা তৃণমূল নেতৃত্বও। দোষী প্রমাণিত হলে দল পাশে দাঁড়াবে না বলে স্পষ্ট জানিয়েছেন বলাগড়ের তৃণমূল বিধায়ক।
কে এই তৃণমূল যুব নেতা?
রাতারাতি শিরোনামে বলাগড়ের তৃণমূল যুবনেতা। শ্রীপুর বলাগড় পঞ্চায়েতের বাসিন্দা কুন্তল ঘোষ। ২০১৬ সালেই আসেন রাজনীতিতে। ধাপে ধাপে মাত্র কয়েক বছরেই রাজনীতির ময়দানে যুবনেতার উত্থান। একেবারে তৃণমূল যুব রাজ্য কমিটির প্রথম সারিতে চলে আসেন কুন্তল। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে তৃণমূলের যুব সভানেত্রী সায়নী সকলের সঙ্গে রয়েছে একাধিক ছবি। সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে রয়েছেন তৃণমূলের প্রথম সারির নেতা নেত্রীদের সঙ্গে কুন্তলের একাধিক ছবি। সম্প্রাতিক কালে দেওয়া ছবির মধ্যে রয়েছে পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশীষ চক্রবর্তীর ছবিও।
কুন্তলের দাপট
এলাকায় বেশ হাঁকডাক কুন্তল ঘোষের। হুগলি জেলা তৃণমূলের সাংগঠনিক যুব সভাপতি রুনা খাতুনেরও ঘনিষ্ঠ এই যুব নেতা। তবে নিয়োগ দুর্নীতিতে নাম জড়ানোর পর দলের কেউ তো দূরের কথা, স্থানীয়রাও যুব নেতার বিষয়ে মুখ খুলতে চাইছে না। যদিও স্থানীয় সূত্রে খবর, বলাগড়ের বাড়িতে কুন্তল তেমন আসেন না। এখন কলকাতার বাড়িতেই থাকেন। মাঝে মধ্যে আসেন বলাগড়ের বাংলোয়। এই বাড়িতে রয়েছে তিনটি দামি বিলিতি জাতের পোষা কুকুর। তাদের দেখাশুনা করার জন্য রয়েছে একজন কেয়ারটেকার। বাড়ির মন্দিরেও চলে নিত্যপুজো।
কুন্তলের প্রসঙ্গে বলাগড়ের বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারীকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ”আমার সঙ্গে আলাপ নেই। নাম শুনেছি, তবে চিনি না। ঘটনা সত্যি হলে দল তার পাশে থাকবে না।”
অন্যদিকে, সিপিআইএম হুগলি জেলা কমিটির সদস্য অতনু ঘোষ মন্তব্য করেন, ”তৃণমূলের বিধায়ক বা নেতারা যাই বলুন না কেন, দল সবটাই জানে এবং দলকে সামনে রেখেই সব নেতা কর্মীরা এসব দুর্নীতি করে চলেছে। চাকরির নাম করে বেকার, শিক্ষিতচাকরিপ্রার্থীদের থেকে টাকা নিয়েছে। কিছু পেয়েছে কিছুজন আবার পাইনি। যারা চাকরি পোয়েছিল তাদের চাকরি আবার চলেও গিয়েছে। মানুষ সব বুঝতে পারছে।”
বিরোধী বিজেপির বেচু নায়েক বলেন, ”বুধবার টিভিতে দেখলাম চাকরি দেওয়ার নামে কুন্তল সাড়ে উনিশ কোটি টাকা তুলেছে ।আমাদের মনে হয় ও একশ কোটি টাকা তুলেছে।একজন সমাজসেবী থেকে উনি হঠাৎ ফুলেফেঁপে কলাগাছ হয়ে গেলেন মানুষ কি বুঝতে পারছে না।বড় বড় নেতাদের সঙ্গে ছবি ভাইরাল হচ্ছে।দল কি জানে না।ওনাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
সব তদন্তে সামনে আসা দরকার।”