জামিনে মুক্তির পর অঙ্কুর বলেন, “সত্যের জয় হয়েছে। আমি মানুষের জন্য কাজ চালিয়ে যাব। পুলিশ প্রভাবশালীদের চাপে পড়ে আমাকে গ্রেফতার করেছিল। এই আচরণের আমি তীব্র নিন্দা জানাই। গত ছ’দিন ধরে পুলিশ প্রকৃত দোষীদের আড়াল করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু, মানুষ আমার পাশে ছিলেন। তাঁদের কৃতজ্ঞতা জানাই।”
অঙ্কুর দাশের আইনজীবী সন্দীপ দত্ত বলেন, “পুলিশ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমার মক্কেলকে গ্রেফতার করেছিল। তাঁর জামিন পাওয়া একেবারে সঠিক সিদ্ধান্ত। আদালতের সিদ্ধান্তকে আমি সাধুবাদ জানাই।” তিনি আরও বলেন, “তাছাড়া এই ঘটনার বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বা জেলা স্বাস্থ্য দফতর কোনও অভিযোগ দায়ের করেনি। অভিযোগ করেছে হাসপাতাল চত্বর ব্যবহার করে থাকা একটি বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স চালক সংগঠন।” এই ঘটনায় জলপাইগুড়ি জেলা BJP সভাপতি বাপী গোস্বামী বলেন, “তাঁর গ্রেফতারের ঘটনাটি খুবই নিন্দনীয়। পুলিশ এবং প্রশাসনের এই কাজ সমাজের মাথা হেঁট করে দিয়েছে। তিনি ওই পরিবারটিকে শুধু গাড়ি দিয়ে সাহায্য করেছিলেন, আর কিছুই না।”
উল্লেখ্য, গত ৫ জানুয়ারি জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে লক্ষীরানী দেওয়ানের চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়। এরপর বেসরকারী অ্যাম্বুলেন্স চালকরা মরদেহ নিয়ে যেতে ৩০০০ টাকা চান। মাত্রাতিরিক্ত অর্থ দিতে না পারায় স্ত্রী লক্ষীরানী দেওয়ানের মৃতদেহ কাঁধে নিয়েই বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন মৃতার স্বামী জয়কৃষ্ন দেওয়ান এবং তাঁর ছেলে। হাসপাতাল থেকে অনেকটা দূর যাবার পর অঙ্কুর দাশ এগিয়ে এসে অ্যাম্বুলেন্স দিয়ে পরিবারটিকে মৃতদেহ শ্মশানে নিয়ে যেতে সাহায্য করেন। এই ঘটনার পড়ে রাজ্যজুড়ে শোরগোল পড়ে যেতেই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সম্পাদক অঙ্কুর দাসের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় (Kotwali Police Station) অভিযোগ দায়ের করে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স চালক সংগঠন।
তাদের অভিযোগ ছিল, গোটা ঘটনা সাজানো এবং উদ্দেশ্যপ্রনোদিত। সরকারকে ও অ্যাম্বুলেন্স সংগঠনকে বদনাম করতে মৃতের পরিবারকে ব্যবহার করে গোটা ঘটনা সাজিয়ে ছিলেন অঙ্কুর। এমনকি হাসপাতাল থেকে তিনশো মিটার দূরে অ্যাম্বুলেন্স নিয়েও দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি। তবে অঙ্কুর দাস জামিন পেলেও এই ঘটনায় যে এখানেই যবনিকা পড়ল, তা মনে করছে না জেলার সংশ্লিষ্ট মহল।