Calcutta University : কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে সরস্বতী পুজোর টেন্ডার – calcutta university goes for a tendering process in saraswati puja


এই সময়: সরস্বতী পুজোর জন্য কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ডাকা হলো টেন্ডার! আপাতত কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি ক্যাম্পাসে সরস্বতী পুজোর আয়োজনের জন্য দু’টি টেন্ডারের নোটিস দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে একটি পুজোর মণ্ডপ, সাজসজ্জা এবং আল্পনার জন্য। অন্যটি প্রসাদের জন্য। কিছু দিন আগেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মকর সংক্রান্তি পালনের নির্দেশিকা পাঠিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছে ইউজিসি এবং এআইসিটিইর মতো কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠান। এ বার খোদ রাজ্য সরকারি একটি প্রতিষ্ঠান সরস্বতী পুজোয় টেন্ডার ডাকায় বিস্তর আলোচনা শুরু হয়েছে শিক্ষামহলে।

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ স্ট্রিট, বালিগঞ্জ সায়েন্স কলেজ, সল্টলেকের টেকনোলজি ক্যাম্পাস, আলিপুর ও হাজরা ল’কলেজ ক্যাম্পাসে ২৬ জানুয়ারি সরস্বতী পুজোর আয়োজনের জন্য এই টেন্ডার ডাকা হয়েছে। তাতে জানানো হয়েছে, পুজোর মণ্ডপ, সাজসজ্জা, আল্পনার জন্য তুলি-কলম, রং সরবরাহ করতে হবে। অন্য টেন্ডারটি প্রসাদের জন্য। সরস্বতী পুজোর প্রসাদে থাকছে গোবিন্দভোগ চালের খিচুরি, আলুর দম, বেগুনি, পাঁপড়ভাজা, আমসত্ত্ব-খেজুরের চাটনি, নলেন গুড়ের একটি রসগোল্লা। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের দীর্ঘ ইতিহাসে এমন ঘটনা কার্যত নজিরবিহীন। কেন এমন পদক্ষেপ করতে হলো বিশ্ববিদ্যালয়কে?

Hiran Chatterjee: পদ্ম ছেড়ে তৃণমূলে হিরণ? ছবি ভাইরাল হতেই মুখ খুললেন BJP বিধায়ক
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য আশিস চট্টোপাধ্যায়ের ব্যাখ্যা, ‘আমাদের প্রতিষ্ঠানে নিয়ম, নির্দিষ্ট মাত্রার পর টাকা খরচ করা হলে টেন্ডার ডাকতে হবে। সেই নিয়ম মেনেই পাঁচটি ক্যাম্পাসে পুজোর জন্য ওই টেন্ডার ডাকা হয়েছে।’ কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সূত্রের খবর, ছাত্রনেতাদের চাপ আটকাতেই কর্তৃপক্ষকে এই পথে হাঁটতে হয়েছে। অভিযোগ, ক্যাম্পাসে পুজোর জন্য ছাত্রনেতাদের তরফে লক্ষ লক্ষ টাকা চাওয়া হচ্ছিল। এ দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন কোনও ছাত্র সংসদ নেই। তা হলে কার দায়িত্বে সরকারি টাকা দেওয়া হবে? অবস্থা বেগতিক বুঝেই টেন্ডারের রাস্তায় হাঁটতে হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে। এসএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘এই কাজ সাধারণত পড়ুয়ারাই উদ্যোগ নিয়ে করে। টাকা কর্তৃপক্ষ দিলেও তাঁরা সরাসরি এতে যুক্ত থাকেন না। তৃণমূলের দৌলতে এমন অবস্থা যে আল্পনার সামান্য টাকাটুকুও ওদের হাতে তুলে দিতে ভরসা পাচ্ছেন না কর্তৃপক্ষ।’ তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্যের পাল্টা বক্তব্য, ‘কুৎসা ছাড়া এসএফআইয়ের কোনও কাজ নেই। আমাদের কোনও ছাত্রনেতা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে টাকা চায়নি। বরং যে টাকা সরস্বতী পুজোর জন্য কর্তৃপক্ষ বরাদ্দ করেন, তাতে পুজোর খরচ মেটে না। তাই এই দায়িত্ব কর্তৃপক্ষ নিলেই ভালো।’

Rojgar Mela : ‘কাউন্সিলরের ১৯ কোটি থাকলে, বাকিদের…’, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর নিশানায় তৃণমূল
বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী, ৫০ হাজার টাকা বা তার বেশি খরচ হলেই টেন্ডার ডাকতে হয়। প্রতিটি ক্যাম্পাসে পুজোর জন্য কমবেশি ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। তবে প্রতিমা ও প্রয়োজনীয় উপকরণ কেনার জন্য কিছু টাকা বরাদ্দ রয়েছে। অনেকের প্রশ্ন, সরাসরি টেন্ডার না ডেকে কি এই পুজোর আয়োজনের জন্য কমিটি তৈরি করা যেত না? আবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংগঠন কুটা এবং বিজ্ঞানীদের সংগঠন ব্রেক থ্রু সায়েন্স সোসাইটির তরফে প্রশ্ন তোলা হয়েছে একটি নির্দিষ্ট ধর্মের পুজোর আয়োজনের জন্য কি এ ভাবে কোনও ধর্মনিরপেক্ষ ক্যাম্পাস টেন্ডার নোটিস দিতে পারে? ব্রেক থ্রু-র তরফে বিজ্ঞানী সৌমিত্র বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করা উচিত নয়। কিন্তু কী রাজ্য, কী কেন্দ্র সবাই তো দেখছি একই পথের পথিক।’ কুটার সম্পাদক সনাতন চট্টোপাধ্যায়ও এতে সহমত। উপাচার্য অবশ্য বলেন, ‘পুজোর টাকা তো বিশ্ববিদ্যালয় তহবিল থেকেই প্রতি বছর দেওয়া হয়। তাহলে টেন্ডারে আপত্তি কোথায়?’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *