জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: সরস্বতীপুজোর সঙ্গে বাঙালির নানা পরতের যোগ– ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক, সামাজিক। দিনটিতে পড়ুয়ারা বিদ্যার অধিষ্ঠাত্রী দেবীর পুজো করে পড়াশোনায় ভালো ফল করার বাসনায়। দিনটি পালন করেন কবি-সাহিত্যিক-লেখক-সংগীতজ্ঞ মানুষজনও। যে কোনও ক্ষেত্রের সৃষ্টিশীল মানুষের যোগাযোগ সম্মিলনের ক্ষণ এই সরস্বতীপুজো।
আরও পড়ুন: Saraswati Puja 2023: সরস্বতীপুজো তো আছেই, সঙ্গে এই শ্রীপঞ্চমী তিথিতে রয়েছে আরও শুভ যোগ…
সরস্বতীপুজোর দিনটি বসন্ত পঞ্চমী বলেও পরিচিত। বসন্ত পঞ্চমীকে শ্রীপঞ্চমী ও জ্ঞানপঞ্চমীও বলা হয়ে থাকে। বলা হয়, এ দিন আসলে বসন্ত ঋতুর সূচনা হয়। তবে আজকাল সব সময় তা হয় না। বাংলা ক্যালেন্ডারের দিন-তিথি একটু আগে-পরে সরে-সরে পড়ে। তবে, এ কথা ঠিক, শীতের বিদায় শুরু হয়ে বসন্তের আগমনের বার্তা অন্তত প্রাকৃতিক ভাবে সূচিত হয়ে যায়। আর বসন্ত হল সব চেয়ে রোম্যান্টিক ঋতু। কী আশ্চর্য যোগাযোগ, এই বসন্ত পঞ্চমীর দিনেই কামদেবের এবং রতির পুজোও করা হয়।
আরও পড়ুন: Saraswati Puja 2023: জেনে নিন সরস্বতীপুজোর দিনতিথি, বিশেষ মুহূর্ত এবং পুজোর আবশ্যিক নিয়মবিধি…
কামদেব হলেন প্রেম ও ভালোবসার দেবতা। কামদেবকে বিশেষ স্থান দেওয়া হয় হিন্দু ধর্মে। বসন্ত পঞ্চমীর দিন কামদেবের পুজো করার ঐতিহ্য রয়েছে। কামদেবকে প্রেমের অধিপতি বলে মনে করা হয়। বিশ্বাস, কামদেবকে যথাবিহিত পুজো না করলে মানবজীবন থেকে চিরতের হারিয়ে যাবে প্রেম-ভালোবাসা-যৌনতা। সৃষ্টির গতি থেমে যাবে। দাম্পত্যজীবন তৈরি হবে না। সৃষ্টির গতি সুস্থ স্বাভাবিক রাখার জন্যই কামদেবকে পুজো করার বিধি।
কিন্তু কেন বসন্ত পঞ্চমীর দিনই কামদেবের পুজো করা হয়?
শাস্ত্র মতে, বসন্ত ঋতুর সঙ্গে কামদেবের সম্পর্ক চিরদিনের। বসন্তের আগমনে আবহাওয়া হয়ে ওঠে মধুর-মনোরম। প্রকৃতিতে নানা সৌন্দর্য দেখা যায়। ফুল ফোটে, পাখি ডাকে। মানুষের মন থেকে কেটে যায় শীতের জড়তা। সকলেই নিজেকে সুখী মনে করে। এই রকম প্রাকৃতিক ও মানসিক অবস্থায় মানুষের মনে প্রেমের স্ফুরণ ঘটে।
সেই যে প্রেমের মুকুল ফুটতে শুরু করে, মনে করা হয়, তা হয় এই কামদেব ও রতিদেবীর কল্যাণেই। প্রেমের দিক থেকে এই ঋতু তাই বরাবর অনুকূল। কামদেব প্রেম তথা কামের দেবতা আর দেবী রতি আকর্ষণ এবং প্রেমের দেবী। বসন্তপঞ্চমী তিথিতে এঁদের আরাধনা করলে জীবনে প্রেম নামে, প্রেম স্থায়ী হয়, দাম্পত্যজীবন ভরে ওঠে গভীর মাধুর্যে।