প্রসেনজিত্ মালাকার: বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুত্ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে এবার সরব হলেন নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। লোকটার চিন্তাভাবনা দেখে বিমর্ষ হয়ে পড়েছি। বিশ্বভারতী নিয়ে কর্তৃপক্ষ ভাবছে না কেন? এমনটাই মন্তব্য করলেন অমর্ত্য সেন।
আরও পড়ুন-রাজ্য সরকারের জেরক্স মেশিন! রাজ্যপালের নিরপেক্ষতা নিয়ে বিস্ফোরক স্বপন দাসগুপ্ত
উপাচার্যের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই আন্দোলন চালাচ্ছে বিশ্বভারতীর পড়ুয়া ও শিক্ষকদের একাংশ। আজ অমর্ত্য সেনের সঙ্গে দেখা করে তাঁরা বিশ্বভারতীj বর্তমান পরিস্থিত তাঁর কাছে তুলে ধরেন। ওইসব কথা শুনে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন নোবেল জয়ী। কীভাবে সমস্যার সমাধান হবে তা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন করতে থাকেন তিনি। উপাচার্য প্রসঙ্গে অমর্ত্য বলেন, লোকটার চিন্তাভাবনা দেখে আমি বিমর্ষ হয়ে পড়ছি। শান্তি নিকেতন আগের মতো নেই। এখানে অবিচার হচ্ছে। কর্তৃপক্ষ ভাবছে না কেন।
উল্লেখ্য, শান্তিনিকেতনে একটি জমির কিছু অংশ ছেড়ে দিতে অমর্ত্য সেনকে চিঠি দিয়েছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের লেখা ওই চিঠিতে দাবি করা হয়েছে অমর্ত্য সেন জোর করে ১৩ ডেসিমেল জায়গা দখল করে রেখেছেন। ওই ১৩ ডেসিমেল জমি দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে হস্তান্তর করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। নোবেল বিজয়ীর বাবা আশুতোষ সেন ১৯৪৩ সালে ইউনিভার্সিটির কাছ থেকে ১২৫ ডেসিমেল জমি লিজ নিয়েছিলেন। এমনটাই দাবি করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখপাত্র মহুয়া ব্যানার্জি। ২০২১ সালের জানুয়ারিতে, বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী অমর্ত্য সেনের পরিবারের বিরুদ্ধে ক্যাম্পাসের জমি অবৈধভাবে দখলে রাখার অভিযোগ করেন। অমর্ত্য সেন তখন জানিয়েছিলেন জমির প্লটটি দীর্ঘমেয়াদী লিজে রয়েছে।
এদিন পড়ুয়াদের সঙ্গে আলোচনায় তাঁর জমি প্রসঙ্গ উঠে আসে। এনিয়ে অমর্ত্য সেন বলেন, অনেকেই আমাকে পছন্দ করেন না। তারাও গোলমালের পেছনে থাকতে পারেন। বাড়ির কিছুটা অংশ বিশ্বভারতীর কাছ থেকে লিজ নেওয়া। বাকী অংশ কেনা হয়েছে। একদিন উপাচার্যের বাড়ি গিয়ে বলব এই বাড়ি আমার পিতামহ কিনেছিলেন। সেই জমি মাপজোক করতে চাই। উনি যে ব্যবহার করেন সেই ব্যবহার অন্য কেউ করবে না। আদালতে যাওয়ার আমার কোনও লোভ নেই, উকিলের চিঠি আগে একবার গিয়েছে আরেকবার অবশ্যই যাবে।
অমর্ত্যকে লেখা চিঠি নিয়ে আশ্রমিক সুপ্রিয় ঠাকুর বলেন, এখন যা দিনকাল পড়েছে তাতে অমর্ত্যদার মতো বিরাট মানুষকে অপমান করা হচ্ছে। তাঁকে জমি ফেরত দিতে বলা হচ্ছে বারবার। এসব তো অন্যায়। বহুদিন ধরে ওঁর বাবা ওই জমিতে ছিলেন। এখন কর্তৃপক্ষ বলছেন অমর্ত্য সেন জমি দখল করে নিয়েছেন। কী আর করা যাবে।