Snake Bite Treatment : সর্পদংশনে এভিএসের বিকল্প ইনজেকশনের ট্রায়াল শহরে – kolkata started trial of alternative injection of avs in snakebite


অনির্বাণ ঘোষ
সাপে কাটার চিকিৎসা বলতে অ্যান্টি-স্নেক ভেনম সিরাম বা এভিএস (AVS)। কিন্তু আঞ্চলিক উৎপাদনের সমস্যায় তার কার্যকারিতা এখন প্রশ্নের মুখে। তামিলনাড়ুতে তৈরি এভিএসের কার্যকারিতা বাংলা-সহ দেশের বহু প্রান্তেই ষোলো আনা নির্ভরযোগ্য নয়। ফলে এড়ানো যায় না সর্পদংশনে বহু মৃত্যু।

এই পরিস্থিতিতে এভিএসের সঙ্গেই ভ্যারেসপ্লেডিব নামের একটি ওষুধের সহায়ক ভূমিকা নিয়ে আশাবাদী হয়ে উঠেছেন আন্তর্জাতিক চিকিৎসক মহল। ভ্যারেসপ্লেডিব ট্যাবলেটের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে দেশে, যাতে সামিল কলকাতার ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজও (Calcutta National Medical College & Hospital)। এ বার ভ্যারেসপ্লেডিব ইঞ্জেকশনের ট্রায়াল শুরুর তোড়জোড়ও শুরু হয়েছে শহরে। ন্যাশনালের পাশাপাশি এসএসকেএম এবং এনআরএসে হবে সেই ট্রায়াল। এতে সাফল্য এলে যে বহু মানুষের প্রাণ বাঁচবে, বলার অপেক্ষা রাখে না।

Benefits of Dark Chocolate: ডার্ক চকোলেট খেয়েই দেখুন, ৩০ দিনে শরীরের পার্থক্য নিজেই ধরতে পারবেন
প্রস্তাবিত ট্রায়ালটির বেসরকারি ফেসিলিটেটর সংস্থার পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান স্নেহেন্দু কোনার জানাচ্ছেন, সব ঠিক থাকলে এই তিন হাসপাতালে ইন্ট্রাভেনাস ভ্যারেসপ্লেডিবের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু হবে মার্চে। তিনি বলেন, “বিষধর সাপে কাটা রোগীদের উপরে এভিএসের সঙ্গে ভ্যারেসপ্লেডিব ওরাল ট্যাবলেটের ট্রায়াল আগেই শুরু হয়েছে। ন্যাশনাল মেডিক্যালে এমন ৭২ জনের উপরে ট্রায়ালটি চলবে। ইতিমধ্যেই সারা দেশের মোট ৬০ জন এবং বাংলার ১৩ জনের উপরে প্রয়োগ হয়েছে। তাঁরা সবাই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। এ বার ভ্যারেসপ্লেডিব ইঞ্জেকশনের ট্রায়াল শুরুর পরিকল্পনা চূড়ান্ত স্তরে।”

স্নেহেন্দু জানাচ্ছেন, আপাতত তাঁদের সংস্থা SSKM এবং এনআরএসে সাপে কাটা রোগী সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করছে। প্রতি বছর গড়ে কত জন এমন রোগী আসেন, কোন সাপের কামড় কতগুলি–তার খোঁজখবর চলছে। রাসেলস ভাইপার (চন্দ্রবোড়া), ক্রেইত (কালাচ), কোবরা (কেউটে বা গোখরো), স্কেল্ড ভাইপার (বঙ্করাজ) ও অন্যান্য ভাইপারের (বোড়া) পাশাপাশি আরও নানা জাতের সাপের কথা জানা যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, কোবরার মাথার পিছনে খড়মের চিহ্ন থাকলে সেটি গোখরো আর একটা চক্র থাকলে সেটি কেউটে।

Malda Medical College & Hospital : কর্মীর অভাবে বন্ধ সিটি স্ক্যান-এক্সরে ইউনিট, চরম অসুবিধায় রোগীরা
কেন ভ্যারেসপ্লেডিব নিয়ে উৎসাহী চিকিৎসকেরা? বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, মূলত তামিলনাড়ুর মহাবলীপুরম ও সংলগ্ন জেলার সাপ থেকে যে বিষ সংগ্রহ করা হয়, তা দিয়েই এভিএস তৈরি হয় দেশে। কিন্তু পূর্ব ভারতের, বিশেষ করে বাংলায় সাপের বিষের মধ্যে থাকা প্রোটিন দক্ষিণ ভারতের ওই একই সাপের বিষের প্রোটিনের থেকে গঠনগত ভাবে আলাদা। তাই প্রচলিত এভিএস বাংলায় সাপে কাটা রোগীদের শরীরে তেমন কাজ করে না। ফলে যে রোগীর ১০ ভায়ালে কাজ হওয়ার কথা, তাঁকে ৩০ ভায়াল এভিএস দিয়েও অনেক সময়ে লাভ হয় না।

এমন পরিস্থিতিতে ভ্যারেসপ্লেডিবের মতো যদি বিকল্প ইঞ্জেকশন বা সহায়ক ট্যাবলেট মেলে, তা বহু মানুষের প্রাণ বাঁচাবে বলেই আশা চিকিৎসকদের। স্নেহেন্দুর দাবি, সারা দুনিয়ায় ভ্যারেসপ্লেডিবের সব ট্রায়ালের তথ্য মিলিয়ে দেখা যাচ্ছে, ওষুধটি ভারতে মেলা প্রায় সব ধরনের বিষধর সাপের বিষের বিরুদ্ধেই কার্যকরী। সম্প্রতি ‘টক্সিনস’ জার্নালে প্রকাশিত গবেষণাপত্রেও এর সাফল্য বর্ণনা করা হয়েছে। যদিও রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের অধীন সর্পাঘাত প্রশিক্ষণ কর্মসূচির প্রধান চিকিৎসক দয়ালবন্ধু মজুমদার মনে করেন, এই ওষুধটি এভিএসের বিকল্প বা ভালো সহায়ক কিনা, আরও বড় ট্রায়াল না-হওয়া পর্যন্ত বলা সমীচীন নয়।

Fatty Liver Treatment : ফ্যাটি লিভারের মেদ ঝরিয়ে ফিট করবে কালমেঘ, চলছে জোর গবেষণা
সরীসৃপ বিশেষজ্ঞ বিশাল সাঁতরা আবার মনে করেন, ভ্যারেসপ্লেডিব ট্রায়ালের কেন্দ্রগুলিই যথাযথ নয়। তাঁর কথায়, “সাপে কাটা রোগী সরাসরি পৌঁছয় প্রথমে গ্রামীণ বা মহকুমা কিংবা জেলা হাসপাতালে। অল্প কিছু রোগী আসেন মেডিক্যাল কলেজ স্তরের হাসপাতালে। তাই ট্রায়ালটি হওয়া উচিত তুলনায় ছোট হাসপাতালে।” ন্যাশনালের মেডিসিন বিভাগের প্রধান তথা ভ্যারেসপ্লেডিব ট্যাবলেটের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে পূর্ব ভারতের মুখ্য গবেষক পার্থপ্রতিম মুখোপাধ্যায় অবশ্য আশাবাদী। তিনি বলেন, “ট্যাবলেট প্রয়োগ হয়েছিল যাঁদের উপর, তাঁরা প্রত্যেকেই ভালো আছেন। তাই ইন্ট্রাভেনাস ট্রায়ালেও আমরা উৎসাহী।”



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *