শহর কলকাতার পথে যেমন বিদ্যুৎচালিত বাস নেমেছে, ঠিক তেমনি ঝাড়গ্রাম (Jhargram) জেলার সাঁকরাইল ও ঝাড়গ্রাম থানার রোহিণী এবং মানিকপাড়া সৌরবিদ্যুতের (Solar Power) আলোয় আলোকিত হচ্ছে। ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারের উদ্যোগে জঙ্গলমহলে তৈরি হয়েছে দুটো সৌরশক্তির বিদ্যুৎকেন্দ্র। মানিকপাড়ার কাছে ২০২০ সালে পাতনিশোলাতে প্রথম তৈরি হয়েছে সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র। এই সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি প্রায় ৭৮ একর জায়গার ওপর ১০ মেগাওয়াট শক্তিসম্পন্ন। প্রায় ৪৯১৬৮টি সোলার প্যানেলে ১০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপন্ন হচ্ছে। এছাড়াও গত বছরের মে মাসে সাঁকরাইলের রোহিণী সোলার পাওয়ার সাবস্টেশন থেকে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়। এই সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি গড়ে তোলা হয়েছে প্রায় ৪৫ একর জায়গার ওপরে। প্রায় ৩১,৬০০টি সোলার প্যানেল কাজ করছে এই কেন্দ্রে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সৌরবিদ্যুৎ পশ্চিমবঙ্গে অমিত সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র। সৌরশক্তি উৎপাদন ও ব্যবহারের উপযুক্ত ক্ষেত্র হিসেবে প্রয়োজনীয় প্রধান উপাদান সূর্য এবং সহযোগী আরও পাঁচটি উপাদান যথাক্রমে আলো, বাতাস, রোদ, গাছ-পালা এবং জলের উৎস এই রাজ্যে অফুরান। গৃহস্থলীর চাহিদার পাশাপাশি শিল্প-কারখানাও সৌরশক্তি দিয়ে চলতে পারে। কৃষি ক্ষেত্রে সৌরবিদ্যুতের ব্যবহার উন্নয়ন সহায়ক হবে। ঝাড়গ্রাম এলাকায় সৌরবিদ্যুৎ নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলছে। সৌরবিদ্যুৎ ব্যবস্থায় প্রচুর দেশী-বিদেশী বিনিয়োগের সুযোগ ও সম্ভাবনা আছে। এই ব্যবস্থাকে আরও বিকশিত করা গেলে গ্রামের মানুষকে শহরমুখী হওয়ার প্রবণতা থেকে বিরত রাখা যাবে। এছাড়াও সৌরবিদ্যুৎ পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি। লোডশেডিং নেই। বিল দেওয়ার ঝামেলা নেই। সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহারের ফলে গ্রামীণ জনপদে হাটবাজার, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কাজের সময় বৃদ্ধির ফলে আয় রোজগার বাড়বে। সৌরবিদ্যুৎ যে কোনও স্থানে স্থাপন করা যায়। সাধারণ বিদ্যুতের মতোই ব্যবহার করা যায়। কম্পিউটার, ল্যাপটপ, টেলিভিশন, রেডিও, ছোট বৈদ্যুতিক পাখা চালানো সম্ভব। মোবাইল ফোনের ব্যাটারি চার্জ করা যায়। সোলার প্যানেল কার্যকর থাকতে পারে টানা ২৫ বছর পর্যন্ত।