জাতীয় জল জীবন মিশন প্রকল্পেও নজরদারির ব্যবস্থা করল কেন্দ্র। পাইপের মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি পরিস্রুত পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার যে সঙ্কল্প নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi), তা ঠিকমতো হচ্ছে কি না, তা জানতে কোনও বেসরকারি সংস্থাকে দিয়ে সমীক্ষা করানো হবে। তার জন্য সম্প্রতি রাজ্যকে চিঠি দিয়েছে কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রক। সমীক্ষা রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবে কেন্দ্র। পশ্চিমবঙ্গে আবাস যোজনা, একশো দিনের কাজ, মিড ডে মিল-সহ বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্প রূপায়ণে অসঙ্গতি ধরা পড়ায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। একাধিকবার রাজ্যে ঘুরে গিয়েছে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল। কেন্দ্রের নির্দেশিকা অনুযায়ী, জল জীবন মিশন প্রকল্পের কাজ খতিয়ে দেখতে কোনও প্রতিষ্ঠিত এজেন্সিকে বরাত দেওয়া হবে। তারা মানুষের সঙ্গে কথা বলে আসল ছবি তুলে আনবে। সমীক্ষা করে দেখা হবে, বসত বাড়ি, স্কুল, কলেজ, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র, কমিউনিটি সেন্টার-সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে যে ট্যাপ কানেকশন দেওয়া রয়েছে, তার জলের পরিমাণ এবং গুণগত মান সঠিক রয়েছে কি না। সংশ্লিষ্ট বাড়ির সদস্যদের মতামত নেওয়া হবে। দেখা হবে জল নির্দিষ্ট সময়ে আসছে কি না। সমীক্ষা-রিপোর্টের ভিত্তিতে আগামী বছরের পরিকল্পনা তৈরি হবে। প্রত্যেক মাসে বা পনেরো দিন অন্তর প্রতিটি জেলার ‘পারফর্ম্যান্স’ যাচাই করা হবে।
শুধু তা-ই নয়, জল জীবন মিশন প্রকল্পে রাজ্য জুড়ে যে বিশাল জলের পাইপলাইন বসানো হচ্ছে, তার উপরে সর্বক্ষণ নজরদারি চালানোর জন্য জিআইএস (জিওগ্রাফিক ইনফর্মেশন সিস্টেম) মানচিত্র তৈরি করতে বলেছে কেন্দ্র। এর সাহায্যে কোথায় কোন ধরনের জলের পাইপলাইন রয়েছে, সেটা মুহূর্তের মধ্যে বোঝা যাবে। পাইপলাইনে কোথাও ছিদ্র তৈরি হলে মেরামতে সুবিধাও হবে। রাজ্যের জনস্বাস্থ্য কারিগরী দপ্তরের মন্ত্রী পুলক রায় জানান, ২০২১-‘২২ অর্থবর্ষে পাইপের মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি পরিস্রুত পানীয় পৌঁছে দেওয়ার কাজে দেশে বাংলা প্রথম স্থান অধিকার করেছে। তাই কেন্দ্রের নজরদারিকে খুব একটা আমল দিচ্ছেন না তিনি। তাঁর কথায়, ‘কেন্দ্র যত খুশি নজরদারি চালাতে পারে। তাতে আমাদের কোনও অসুবিধা নেই। দিল্লির আধিকারিকরা এখানে এসে দেখে যান, আমরা কত ভালো কাজ করেছি।’
সরকারি রিপোর্ট অনুযায়ী, গত অর্থবর্ষে রাজ্যের মোট ২৩ লক্ষ বাড়িতে জলের পাইপলাইন পৌঁছে গিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের পরেই রয়েছে ওডিশা ও বিহার। কয়েক মাস আগে রাজ্যকে জল জীবন মিশনে মোট ১০০০ কোটি টাকা দিয়েছিল কেন্দ্র। ২০১৯-এর ১৫ অগস্ট জল জীবন মিশন প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। যার অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হলো, ২০২৪-এর মধ্যে দেশের গ্রামাঞ্চলে প্রতিটি পরিবারে পাইপ বাহিত জল পৌঁছে দেওয়া। এই প্রকল্পে কেন্দ্র ও রাজ্য সমপরিমাণ টাকা দিয়ে থাকে।