Kolkata Book Fair 2023 : শুরু বাঙালির বই পার্বণ, কেমন ছিল বইমেলার গোড়ার দিকের দিনগুলো? – international kolkata book fair 2023 inaugurated by cm mamata banerjee to run for 14 days at salt lake central park


গৌতম বসুমল্লিক

সল্টলেকের সেন্ট্রাল পার্কে উদ্বোধন হল ৪৬তম কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলার (International Kolkata Book Fair 2023)। এ বারের থিম কান্ট্রি স্পেন (Book Fair Theme Country Spain)। ফ্র্যাঙ্কফুট বইমেলার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে ১৯৭৬ সালে বিড়লা প্ল্যানেটরিয়ামের সামনের মাঠে কয়েকটা মাত্র স্টল আর প্রদর্শনী দিয়ে শুরু হওয়া এই মেলা এখন আন্তর্জাতিক। কলকাতার ময়দানে বার কয়েক স্থান বদলের পর অল্পকালের জন্য সল্টলেক স্টেডিয়াম হয়ে এই মেলা ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন বাইপাশের ধারে মিলনমেলায় থিতু হয়েছিল বেশ কিছুকাল। তার পর তা স্থানান্তরিত হয়েছে সল্টলেকের সেন্ট্রাল পার্কে। কলকাতার ময়দানের তুলনায় বর্তমান মেলার জায়গাটা তুলনামূলকভাবে প্রান্তিক হলেও, এ বছর দশর্ক-ক্রেতাদের উপরি পাওনা ইস্ট ওয়েস্ট মেট্রোপথ চালু হয়ে যাওয়া। কলকাতার শহরের কেন্দ্রস্থল শিয়ালদহ স্টেশনের কাছ থেকে মেট্রোরেলে উঠলে সরাসরি পৌঁছে যাওয়া যাবে করুণাময়ী স্টেশনের পাশে মেলার মাঠে।

Kolkata Book Fair : ‘আমার সবটাই কুৎসার আঙিনায়…’, বইমেলার উদ্বোধনে মন্তব্য মুখ্যমন্ত্রীর
উদ্বোধনী দিন সহ মোট ১৪ দিন ধরে চলা এই বই উৎসবে যোগ দেন লাখ লাখ পাঠক। নামে বইমেলা হলেও বিভিন্ন সময়ে অভিযোগ উঠেছে, সাম্প্রতিক কালে বই ছাড়াও খাবার-দাবার, অলঙ্কার-জুয়েলারি বা নিত্যপ্রয়োজনীয় অনেক সামগ্রীর দোকানেরও দেখা মেলে বইমেলায়। তা সত্ত্বেও মেলা আছে মেলাতেই। পরিসংখ্যান বলে, বইমেলায় সব থেকে বেশি বিক্রি হয় রান্নার বই, ভুতের গল্প আর রহস্য গল্প উপন্যাস। তবে প্রবন্ধ এবং কবিতার বইয়ের ক্রেতাও কম নেই। অর্থনীতি, সমাজনীতি, আঞ্চলিক ইতিহাস এমনকি জনপ্রিয় বিজ্ঞানগ্রন্থেরও একটা ভালো বাজার রয়েছে কলকাতা বইমেলায়। বাঙালি চিরকালই কবিতাপ্রিয়। কাজেই কবিতার বইয়ের বিক্রি ভালোই হয় প্রতি বছর। এ বছরেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। এ ব্যাপারে অবশ্য লিটল ম্যাগাজিনের পাশাপাশি মাঝারি ও বড়ো প্রকাশকদের ভূমিকাও সদর্থক। ইংরেজি গল্প-উপন্যাসও ভালো পরিমাণে বিক্রি হয় বইমেলায়।

Kolkata Book Fair 2023 : বিশেষ আকর্ষণ ‘আবোল তাবোল’ দিবস, স্প্যানিশ নাচে-গানে শুরু কলকাতা বইমেলা
কিছুকাল আগেও পুজোর পর থেকেই কলেজ স্ট্রিট বইপাড়া আর রাজাবাজারের দপ্তরিপাড়ায় যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে কাজ আরম্ভ হয়ে যেত আসন্ন বইমেলার জন্য। সে সময়ে অনেক প্রকাশককেই আক্ষেপ করতে শোনা যেত, সময়মতো ছাপা বা বাঁধাই না হওয়ার জন্য অনেকগুলো বইমেলায় প্রকাশ করা গেল না বলে! প্রযুক্তির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে সে আক্ষেপও অনেক কমেছে। এখন বহু লেখকই কম্পিউটারে নিজে হাতে লিখে পাণ্ডুলিপি পাঠান, যা দিয়ে সরাসরি পৃষ্ঠা তৈরি করা যায় । সেই সঙ্গে ছাপায় ‘প্রিন্ট অন ডিম্যান্ড’ বা ‘পিওডি’ পদ্ধতি আসায়, বাংলা মুদ্রণে একটা বড় পরিবর্তন এসেছে বলা যায়। যদিও এই ‘পিওডি’ পদ্ধতিতে ছাপা বইয়ের সংস্করণ বা মুদ্রণ সংখ্যা নিয়ে পাঠকবর্গের অনেকের কিছু অভিযোগ আছে। ‘হ্যান্ড-কম্পোজ’ যুগে কোনও গ্রন্থের সংস্করণ বলতে এগারোশো কপি বা কোনও কোনও ক্ষেত্রে পাঁচশো কপি বোঝানো হত। কিন্তু, অত্যাধুনিক ‘পিওডি’ মুদ্রণ যুগে মাত্র কুড়ি কপি ছেপেও বই বের করা সম্ভব। এবং অভিযোগ, অনেক প্রকাশক ওই অতি অল্প সংখ্যক মুদ্রণকেও একটা সংস্করণ বলে দাবি করছেন। এ ছাড়াও ‘পিওডি’ পদ্ধতিতে মুদ্রিত বইয়ের স্থায়িত্ব সম্পর্কেও অনেকে সন্দিহান! লেখক-প্রকাশক-মুদ্রক বই তৈরি করেন কিন্তু কোন বই গ্রহণযোগ্য তার শেষ বিচারটা করবেন পাঠকবর্গই। আধুনিক প্রযুক্তি সব সময়েই স্বাগত তবে তা যেন পাঠকদের স্বস্তি দেয়, তবেই বইলেখা, বইছাপা এবং বইমেলা সার্থক হয়ে উঠতে পারে।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *