Alipurduar TMC : ‘দলের একনিষ্ঠ কর্মী হিসেবে শুধু ভোট প্রদান করব’, বেসুরো তৃণমূল নেতা – alipurduar trinamool congress leader mridul goswami express anger against party


West Bengal News : গত কয়েকদিন ধরেই বেসুরো গাইছেন আলিপুরদুয়ারের (Alipurduar) শীর্ষ তৃণমূল (Trinamool Congress) নেতা মৃদুল গোস্বামী (Mridul Goswami)। দীর্ঘ বেশ কয়েকদিন ধরেই দলীয় কর্মসূচিতে ডাক পাচ্ছিলেন না তিনি। দলের বিরুদ্ধে এমনটাই অভিযোগ তাঁর। আর গতকাল বৃহস্পতিবার এই বিষয় নিয়ে অনুগামীদের সঙ্গে বৈঠকও করলেন আলিপুরদুয়ার (Alipurduar) জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের (Trinamool Congress) চেয়ারম্যান মৃদুল। জানা গিয়েছে, সম্প্রতি হয়ে যাওয়া মুখ্যমন্ত্রীর জেলা সফরের পর থেকেই নানান মহলে জেলার শীর্ষ নেতৃত্বদের একাংশের পদ চলে যাওয়ার জল্পনা শুরু হয়েছে। কারণ মুখ্যমন্ত্রীর সফরের আগেই নানান রকম দলীয় কর্মসূচিতে দলের সঙ্গে অসহযোগিতার অভিযোগ ওঠে একাধিক শীর্ষ নেতৃত্বদের বিরুদ্ধে। সূত্রের খবর অনুযায়ী, দলীয় কর্মসূচিতে অসহযোগিতা ও দলের একাংশ শীর্ষ নেতৃত্বদের বিভাজন নিয়ে বিস্তারিত খোঁজ খবর নেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)।

June Maliah : ‘দলের কোনও কর্মসূচিতে যোগ দেন না…’, জুন মালিয়াকে নিয়ে অভিযোগ তৃণমূল কাউন্সিলরেই
এও জানা গিয়েছে, জেলার বিশেষ কয়েকজন দলীয় নেতার সঙ্গে গোপন বৈঠকও করেন দলের সর্বভারতীয় সাধারন সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। এরপরেই তৃণমূলের আলিপুরদুয়ার জেলার একাধিক শীর্ষ নেতাদের পদ চলে যাওয়ার বিষয়টি বাইরে আসে। সেই ঘটনার পর গত ২৫ জানুয়ারি দলগাঁও বীরপাড়াতে একটি দলীয় কর্মসূচিতে ডাক পাননি বলে অভিযোগ তোলেন মৃদুল গোস্বামী (Mridul Goswami)। এরপর থেকেই মনে ক্ষোভ নিয়ে একাধিক নেতৃত্বদের সঙ্গে আলোচনায়ও বসেন তিনি। সম্প্রতি দলে গুরুত্ব না পেয়ে পদ ছেড়ে নিজের পুরনো কর্মস্থলে যোগ দেওয়ার কথা জানান মৃদুল গোস্বামী। সেই ঘটনা জানাজানি হতেই বৃহস্পতিবার মৃদুল গোস্বামীর বাড়িতে জমায়েত করেন অনুগামীরা।

এমনকি সেখানে ‘মৃদুল গোস্বামী জিন্দাবাদ’ ও ‘আপনাকে আমরা ছাড়ছি না’ এমন স্লোগানও দিতে শোনা যায় মৃদুল অনুগামীদের। এরপরে অনুগামীদের সঙ্গে একটি বৈঠকও করেন মৃদুল গোস্বামী। পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মৃদুল গোস্বামী জানান, “তৃণমূল দলের সৃষ্টি কাল থেকে দলের একনিষ্ঠ কর্মী হয়ে কাজ করেছি। সবসময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) সহ অন্যান্য দলীয় গুরুত্বপূর্ণ শীর্ষ নেতৃত্বদের নির্দেশে দলের জন্য যথাসম্ভব কাজ করে গিয়েছি। তবে নবনিযুক্ত কিছু তৃণমূল নেতৃত্ব সেই একনিষ্ঠতার কোনও গুরুত্ব দিচ্ছেন না। দলীয় বিভিন্ন কর্মসূচিতে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিলেও তাতে আমার কোনও মতামত নেয়ার প্রয়োজন পড়ছে না। দলের কাছে যদি আমার গুরুত্ব ফুরিয়ে থাকে তবে অযথা দলীয় কর্মসূচিতে ছোটাছুটি করব না।”

Anubrata Mondal: বীরভূমে মমতার স্বাগত তোরণে নেই অনুব্রত, কারণ নিয়ে মুখ খুললেন শতাব্দী
সেই সঙ্গে তিনি আরও বলেন, “দলের একনিষ্ঠ কর্মী হিসেবে সময় মতন শুধু ভোট প্রদান করব। তাই দলের পথ ছেড়ে নিজের পুরনো পেশা অর্থাৎ আইনজীবী হিসেবে আলিপুরদুয়ার আদালতে কাজে যোগ দেবার কথা জানিয়েছি। সেই ঘটনা জানাজানি হতেই কলকাতা থেকে একাধিক শীর্ষ নেতৃত্ব আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। আমি তাদের আমার স্পষ্ট ভাবনা জানিয়ে দিয়েছি।”

এই বিষয়ে আলিপুরদুয়ার জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি প্রকাশ চিক বড়াইক বলেন, “বিষয়টি দলের অভ্যন্তরীণ ঘটনা। সেটা দলের অভ্যন্তরেই আলোচনার মাধ্যমে মিটিয়ে ফেলাটা ঠিক ছিল। সংবাদমাধ্যমে সেই ঘটনার তুলে ধরাটা ঠিক হয়নি। উনি আমাদের অভিভাবকের দায়িত্বে রয়েছেন। কোনও বিষয়ে তাঁর সম্মানে আঘাত লেগে থাকলে তিনি আমাদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করতে পারতেন। আমরা এখনও ওনাকে অভিভাবক হিসেবেই বিবেচনা করি ও সম্মান দিই।”

Didir Surakha Kawach : দূত রাত্রিবাস করছেন না? নজর দলের
দলের অন্দরে ফের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মাথাচারা দিয়ে ওঠার ঘটনায় নানান সমালোচনা শুরু হয়েছে খোদ শাসকদলের ভিতরেই। দলের একাংশদের ধারণা, আলিপুরদুয়ারের জেলার প্রাক্তন সভাপতিদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ঘটনা প্রকাশ্যে আসায় বিধানসভা নির্বাচনের মতন পঞ্চায়েত নির্বাচনেও তার প্রভাব পড়বে। তাতে দলের ক্ষতি হবে। উল্লেখ্য, দলের ভাবমূর্তি ফিরিয়ে আনতে একাধিক কড়া সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দলের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু দলের অন্দরমহলের এমন ঘটনা প্রকাশ্যে আসায় বিভাজন যে আরও বাড়তে চলেছে, তা মনে করছেন আলিপুরদুয়ারের তৃণমূল কর্মীরা। তাহলে কি সত্যিই আলিপুরদুয়ার জেলায় নিজেদের দায়িত্ব হারাতে চলেছেন একাধিক শীর্ষ নেতা? সেই উত্তরেরই অপেক্ষা করছে আলিপুরদুয়ারের রাজনৈতিক মহল।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *