West Bengal Recruitment Scam : মামলাতেও টাকার খেল? নজর ইডির – ed received sensational information on west bengal recruitment scam


এই সময়: প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিক – স্কুলের নানা স্তরে শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে গত এক-দেড় বছরে অনেক মামলা হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court)। যোগ্য প্রার্থীদের বঞ্চিত করে টাকার বিনিময়ে অবৈধ ভাবে অযোগ্যদের চাকরি পাওয়ানোর অভিযোগ উঠেছে ভূরি ভূরি। সেই মামলায় ধৃত কুন্তল ঘোষকে জেরা করে ED-র তদন্তকারীদের দাবি, শুধু টাকার বিনিময়ে চাকরি পাওয়ানো নয়, চাকরির জন্য আদালতে মামলা করার কথা বলেও কোটি কোটি টাকা নেওয়া হয়েছে অনেকের কাছ থেকে। তা হলে প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত যে প্রার্থীদের মামলার আবেদন আদালতে জমা পড়েছে, তাঁদেরও অন্তত কিছু লোকের পিছনে কি কুন্তল বা দুর্নীতির অন্য চক্রীদের ভূমিকা রয়েছে? এখন এটাই তদন্তকারীদের কাছে সবচেয়ে বড় উদ্বেগের জায়গা। আন্দোলনরত প্রার্থীরাও তদন্তের গতিপ্রকৃতিতে নজর রাখছেন। তাঁদেরই কোনও সহযোগী আন্দোনকারী বা মামলাকারী কুন্তলদের টাকা দিয়েছেন কি না, সে ব্যাপারে খোঁজখবর করছেন তাঁরা।

Kuntal Ghosh : অর্পিতার ফ্ল্যাটে নোটের পাহাড়ে কি কুন্তল যোগ?
আদালতে ED-র দাবি, কমপক্ষে ১,২০০ চাকরিপ্রার্থীকে আশ্বস্ত করে কুন্তল জানিয়েছিলেন, আদালতে মামলা করেও স্কুলে চাকরি পাওয়া যেতে পারে। এঁদের হয়ে মামলার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার জন্য প্রত্যেকের থেকে ২০ হাজার টাকা করে সব মিলিয়ে ২ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন কুন্তল। ED-র সন্দেহ, এই তালিকায় প্রাথমিকের পাশাপাশি SSC-র চাকরিপ্রার্থীদেরও অনেকে আছেন। এঁদের মধ্যে কেউ মামলা করে চাকরি পেয়েছেন, না শুধুমাত্র চাকরি পাবেন, এই প্রত্যাশায় কুন্তলকে টাকা দিয়েছিলেন, সে সব এখন জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। এই ১,২০০ জনের হয়ে কতগুলি মামলা আদালতে দায়ের হয়েছে, সেগুলির বর্তমান পরিস্থিতি কী – দেখা হচ্ছে তা-ও।

Kuntal Ghosh : কুন্তল ঘোষের বাড়িতে কি টেট ২০২২-এর নথিপত্র?
এত বড় আকারে এবং সুপরিকল্পিত ভাবে দুর্নীতির বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতে ED-র তদন্তকারীরা মনে করছেন, শুধু কুন্তল নন, এর পিছনে আরও বড় এক বা একাধিক প্রভাবশালী মাথা রয়েছে। কারণ কাদের চাকরি পাইয়ে দিতে হবে, কারা চাকরির জন্য টাকা দিতে পারবেন, কাদের চাকরির জন্য মামলা দায়ের করতে হবে – এত কিছু একা কুন্তলের পক্ষে গুছিয়ে পরিকল্পনা করা সম্ভব নয় বলে এঁদের মত। হতে পারে, বিভিন্ন জেলা থেকে এই প্রার্থীদের তালিকা কুন্তলের কাছে পৌঁছত এবং তাঁদের কার জন্য কী পদক্ষেপ করতে হবে – সে ব্যাপারে কোনও প্রভাবশালী স্তর থেকে নির্দেশ দেওয়া হতো। এখন এই প্রভাবশালীদের ব্যাপারে খোঁজ চালাচ্ছে ED। তদন্তকারীদের সন্দেহ, প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে সরাসরি দুর্নীতির টাকা গেলেও তাঁর বাইরে আরও কোনও প্রভাবশালী নিশ্চিত ভাবে এর সঙ্গে জড়িত আছেন।

কিন্তু চাকরি পাওয়ানোর জন্য মামলা করার কথা বলে টাকা নেওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে কী বলছেন আন্দোলনকারীরা? উচ্চ প্রাথমিকের আন্দোলনকারী সুশান্ত ঘোষের বক্তব্য, “বিষয়টি আমাদের জানা নেই। ২০১৪ সালে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি বেরোয়। এখনও পর্যন্ত আন্দোলন চলছে। এমন কেউ টাকা দিয়েছেন কি না, জানা নেই।” একই বক্তব্য প্রাথমিকের আন্দোলনকারী অর্ণব ঘোষের। তিনি বলেন, “আমাদের প্রায় ৬ হাজার জনের বৈধ ভাবে চাকরি পাওয়ার কথা। কুন্তল ঘোষকে কেউ টাকা দিয়েছেন বলে এখনও জানি না।”

West Bengal Recruitment Scam : গোপালের ফোন ইডিকেই
তবে কুন্তল যে প্রার্থীদের হয়ে মামলার জন্য টাকা তুলে থাকতে পারেন, সে ব্যাপারে আন্দোলনকারীদের মধ্যেও আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। হাজার হাজার মামলার মধ্যে কোনটার জন্য টাকা তোলা হয়েছে, তা নিয়ে ভিতরে ভিতরে খোঁজখবর শুরু হয়েছে। নবম-দশম এবং একাদশ-দ্বাদশের বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের তরফে অভিষেক সেন বলেন, “সব স্তরেই দুর্নীতি হয়েছে। CBI এবং ED-র উপরে আমাদের ভরসা আছে।” চাকরিপ্রার্থীদের হয়ে মামলাকারী ফিরদৌস শামিম বলেন, “যদি এমনটা হয়ে থাকে, তা হলে বুঝতে হবে, এই পরিকল্পনাকারী একা কুন্তল নন। তৎকালীন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতির মাথাও জড়িত থাকতে পারে।”



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *