পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ওয়েস্ট বেঙ্গল সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার আবেদনকারীদের সহায়তার জন্য বিনা পয়সায় কোচিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়। সিভিল সার্ভিসের পরীক্ষায় সাফল্য দিতে জঙ্গলমহল এলাকার মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের গাইডেন্স দিতে ২০১৬ সালে বিনামূল্যে কোচিং ক্লাস শুরু করে জেলা প্রশাসন। তবে থেকেই চলছে এই ব্যবস্থা। এরকম ফ্রি কোচিং থেকে লাভবান হয়েছেন অনন্যার মতো একাধিক মেধাবী পড়ুয়া।
ছোটবেলা থেকেই কৃতী ছাত্রী অনন্যা। মিশন স্কুলের পড়াশুনা শেষের পর NIT ইলেকট্রিক ইঞ্জিনিয়ারিং শেষের পর শুরু WBCS-এর প্রস্তুতি শুরু। ২০১৮ সালে প্রথম পরীক্ষায় বসে হাতে আসে অর্ধসাফল্য। প্রিলিমিনারি পরীক্ষা পাস করলেও মেন পরীক্ষায় পাশ করতে পারেননি অনন্যা। পরের বছরও একই পরিস্থিতি। ভিতরে ভিতরে ভেঙে পড়লেও ফের আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনার কাজ করেছিল প্রশাসনের এই কোচিংয়ে ক্লাস নিতে আসা আধিকারিকরা, বলে জানান সিভিল সার্ভিসের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ছাত্রী। সেই ভোকাল টনিকে ফের মন লাগিয়ে শূন্য থেকে শুরু পরিশ্রম। না, এবার আর নৈরাশ্য নয়, ম্যাজিক মন্ত্রে হাত ভরল সাফল্যে।
প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত এই কোচিং বদলে দিয়েছে অনন্যার মতো পশ্চিম মেদিনীপুরের একাধিক কৃতী পড়ুয়ার। মেধা থাকলেও পয়সার অভাবে অনেকেই সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে পারেন না। তাদের জন্যই এমন কোচিংয়ের আয়োজন করেন প্রশাসন। পোশাকি নাম, ‘কেরিয়ার গাইডেন্স পোগ্রাম অ্যান্ড ফ্রি কোচিং ফর ডব্লুবিসিএস এক্সজামিনেশন।’ মেদিনীপুর শহরে জেলা গ্রন্থাগারে বিনা পয়সায় প্রতি বছর প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় পাশ করা ৪০ জন পড়ুয়াকে ট্রেনিং দেন পদস্থ কর্তা থেকে প্রভিশন পিরিয়ডে থাকা অফিসার, কয়েকজন বিডিও, জয়েন্ট বিডিও। যিনি যে বিষয়ে দক্ষ সেই বিষয়ের সেই ক্লাসেরই তাঁকে দায়িত্ব দেওয়া হয়ে থাকে।
অনন্যা জানান, ”সিভিল সার্ভিসের প্রস্তুতি নেওয়ার সময় একদিন বাবা তাঁর এক বন্ধুর সঙ্গে আলোচনা করেছিলেন। সেসময়ই তিনি জানান প্রশাসনের এই ফ্রি কোচিংয়ের কথা। সেখান থেকেই ওই কোচিংয়ে যাওয়া। স্যারেরা বারবার বলতেন পরিশ্রম করে প্রস্তুতি নিলে কিছু না কিছু হবে। কিন্তু লেগে থাকতে হবে। সেই মন্ত্রেই এল সাফল্য। তবে কারও পড়ানোর উপর শুধু নয়, নিজের পড়াটাও খুব গুরুত্বপূর্ণ। তবেই আসবে সাফল্য।”