যদিও ঘটনা হলো, নওশাদকে পুলিশ প্রথমে গ্রেপ্তার করেছিল ২১ জানুয়ারি ধর্মতলায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ ও হাঙ্গামার ঘটনায়। পরে ভাঙড়ের গোলমালের ঘটনায় তাঁকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স থানা। প্রশ্ন উঠেছে, যদি ২০২১-এর বিধানসভা ভোটের সময়ে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সঙ্গে চ্যাটের তথ্য উঠে আসে এবং নির্বাচিত সরকারকে অস্থির করার চেষ্টা হয়ে থাকে, তা হলে ধর্মতলার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার ভিত্তিতে কী ভাবে চেন্নাইয়ের ব্যবসায়ীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে? তা হলে কি এ জন্য নতুন কোনও এফআইআর দায়ের করা হয়েছে? লালবাজার সূত্রের দাবি, তদন্তে এখনও যে সব সূত্র উঠে এসেছে, তার ভিত্তিতেই জিজ্ঞাসাবাদ হচ্ছে। জানার চেষ্টা চলছে, ভাঙড়-ধর্মতলার গোলমাল অথবা তার আগেও কোনও পরিকল্পিত গোলমালের পিছনে টাকার খেলা হয়েছে কি না অথবা সেখানে কারও সক্রিয় মদত ছিল কি না। প্রয়োজনে নতুন এফআইআরও দায়ের করা হতে পারে।
এ দিকে লেদার কমপ্লেক্স থানার হাতিশালায় গোলমালের ঘটনায় আরও এক তৃণমূল নেতাকে গ্রেপ্তার করল কলকাতা পুলিশ। পুলিশ সূত্রের খবর, ধৃতের নাম জাহিরুল মোল্লা। এখনও পর্যন্ত ৬ জন তৃণমূল কর্মী, ৫২ জন আইএসএফ কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জহিরুলের গ্রেপ্তারের পরই গা-ঢাকা দিয়েছেন তৃণমূলের অনেক নেতা-কর্মী। জহিরুল তৃণমূলের সংখ্যালঘু সেলের ভাঙড় ২ ব্লকের চালতাবেড়িয়া অঞ্চলের সভাপতি বলে জানা যাচ্ছে। জহিরুল এক সময়ে আরাবুল ইসলাম বিরোধী আব্দুর রহিমের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। ইদানীং তিনি আরাবুল শিবিরে নাম লিখিয়েছেন বলে খবর। পুলিশের দাবি, হতিশালার অশান্তির একাধিক ভিডিয়োতে জহিরুলের ছবি পাওয়া যায়। বিভিন্ন ভিডিয়োর সূত্রে রবিবার তাঁকে পানাপুকুর গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করে কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স থানার পুলিশ।
আইএসএফ নেতাদের বক্তব্য, পুলিশ এতদিন পর সঠিক কাজ করছে। কারণ, সেদিনের ঘটনায় তৃণমূলই বেশি অশান্তি করেছে। পুলিশের এই সক্রিয়তাকে ভালো চোখে দেখছেন না ভাঙড় বিধানসভা কমিটির চেয়ারম্যান রেজাউল করিম। তিনি বলেন, ‘আইএসএফ কর্মীরা বিধায়কের উপস্থিতিতে আমাদের কার্যালয়ে ভাঙচুর চালাল, আগুন জ্বালাল আর আমাদের গ্রেপ্তার কর্মীদের বেছে বেছে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে? আমি দলের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলব।’ ভাঙড় ২ ব্লকের তৃণমূল কার্যকরী সভাপতি আব্দুর রহিম বলেন, ‘জহিরুল সম্পূর্ণ নির্দোষ। ঝামেলার সময়ে তিনি যে অন্য জায়াগায় ছিলেন, তার প্রমাণে ভিডিয়ো আছে আমাদের কাছে।’