WBPSC : প্রশিক্ষণ ‘বিলাসিতা’! নিজের চেষ্টায় আইসিডি-এর লক্ষ্যভেদ ঈশিতার, সফল সুমনাও – arambagh girls ishita das and sumana samata cracked wbpsc icds supervisor job


ICDS Supervisor Result: মেধার ক্ষেত্রে কোনও আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থা নয়, গুরুত্বপূর্ণ শুধুই পরিশ্রম ও সঠিক দিশা। আরও একবার এই বিষয়টিই প্রমাণ করে দেখালেন আরামবাগের ঈশিতা দাস। মেধাবী পড়ুয়াদের সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে দিশা দেখাতেই আরামবাগের বিডিওর উদ্যোগে শুরু হয়েছিল ফ্রি কোচিং ক্লাস। সরকারি চাকরির লিখিত পরীক্ষায় পাশ করা কৃতীদের শেষ ল্যাপে পৌঁছে দিতে এই গাইডেন্স ক্লাস। যেখান থেকে উপকৃত হয়েছেন ঈশিতা দাস, সুমনা সামন্ত সহ মেধাবী কৃতী পড়ুয়ারা।

বাবা সামান্য একজন প্রাইভেট টিউটার। ছাত্র পড়িয়ে যেটুকু আয় তাতেই টেনেটুনে সংসার একরকম চলে যায়। কিন্তু, পরিবারের আর্থিক পরিস্থিতি কোনওদিনই তাঁর পড়াশুনার পথে বাধা হয়ে ওঠেনি। বরাবরের মেধাবী ছাত্রী ঈশিতা অঙ্ক নিয়ে স্নাতক পাশ করার পরই ঠিক করে নিয়েছিলেন জীবনের দিশা। বিভিন্ন সরকারি চাকরির পরীক্ষার ফর্ম ফিল আপ করে চেষ্টা করছিলেন নিজের পায়ে দাঁড়ানোর। কোনও ঝাঁ চকচকে সরকারি চাকরির প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে কোচিং করার মতো আর্থিক পরিস্থিতি ছিল না। তাই নিজের চেষ্টাতে চালাচ্ছিলেন পরীক্ষার প্রস্তুতি। অনলাইন অ্যাপ, ইউটিউব চ্যানেলের ট্রেনিং ভিডিয়ো আর বাকিটা নিজের পরিশ্রম। এভাবেই চলছিল ঈশিতার সরকারি চাকরির পরীক্ষার পড়াশুনা।

WBSC Results: নামী প্রতিষ্ঠান নয়, জেলা প্রশাসনের ফ্রি কোচিংয়ে পড়ে বিসিএস ক্র্যাক অনন্যার
অনেক চেষ্টা করেও সাফল্য ছিল অধরা। একসময় ভেঙেও পড়েছিলেন ঈশিতা। কিন্তু, ফিনিক্স পাখির মতো ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিয়ে ফের শূন্য থেকে শুরু করতেন। তিনি বলেন, ”শুধু জানতাম কিছু একটা করতেই হবে। নিজের পায়ে দাঁড়াতেই হবে।” পরিশ্রমের যে বিকল্প নেই তা প্রমাণ করে দিল পশ্চিমবঙ্গ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের আইসিডিএস সুপারভাইজার পরীক্ষার রেজাল্ট। অবশেষে এত বছরের অধ্যবসায়ের ফল এল হাতেনাতে। আইসিডিএস সুপারভাইজার পরীক্ষায় অবশেষে সুযোগ পেয়েছেন ইশিতা। র‌্যাঙ্ক ১৪৭৪।

WBCS Result : বাবার বিড়ি বাঁধার টাকায় চলে সংসার, WBCS-এ ১৫ র‍্যাঙ্ক করে অফিসার নবীরুল

নিজের এই সাফল্যের জন্য কঠোর পরিশ্রম ছাড়াও বিডিওর কোচিং ক্লাসকেও কৃতিত্ব দিচ্ছেন ঈশিতা। তিনি জানান, ”অনেক পরীক্ষার প্রাথমিক স্তরে পাশ করলেও শেষ অবধি আর হয়নি। প্রিলিমিনারি ও মেন পরীক্ষায় পাশের পর বিডিওর এই ক্লাসে গিয়ে শিখেছি ইন্টারভিউয়ে কী করব না করব। আমার ভুলগুলো শুধরে দিয়েছেন ওঁরা। এমনকী একসময় মনে হত আর চাকরি পাব না। আমার আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে এনেছেন স্যারেরা। আসল ইন্টারভিউয়ে বসার আগে বিডিও স্যারের নেওয়া মক ইন্টারভিউতেই নিজেকে তৈরি করে নিতে পেরেছিলাম।”

WBCS Results: ৬ কিমি হেঁটে স্কুল, BCS ক্র্যাক করে অনটনের সংসারে আলো জ্বালালেন পরিযায়ী শ্রমিকের ছেলে

ঈশিতার মতোই বিডিও-এর আয়োজিত ফ্রি কোচিংয়ের ফল পেয়েছে সুমনা সামন্তও। বিদ্যাসাগর কলেজ থেকে ইংরেজিতে স্নাতক সুমনা প্রথম থেকেই ঠিক করে রেখেছিলেন নিজের জন্য কিছু লক্ষ্য। স্নাতকের পড়া শেষ হতেই কলকাতায় থেকে সরকারি চাকরির জন্য শুরু প্রস্তুতি। ইনস্টিটিউটে গিয়ে পড়াশুনার সঙ্গে সঙ্গে চলত পরীক্ষার ফর্মফিলাপ। কিন্তু , এর মাঝেই কোভিড এসে বদলে যায় জীবন। বন্ধ ইনস্টিটিউট, বন্ধ চাকরির পরীক্ষা। সুমনা জানান, ”একসময় ভীষণ ডিপ্রেসড লাগত। তখন সাহস যুগিয়েছে বাবা-মা। বলেছিলেন পরিশ্রম করাটা ছেড়ে দিও না জীবন মূলস্রোতে ফিরলে আবারও সুযোগ পাবে।” পেশায় স্কুল শিক্ষক বাবার কথা শুনে চেষ্টাটা চালিয়ে গিয়েছিলেন সুমনা। আইসিডিএস-এর লিখিত পরীক্ষায় পাশ করার পর বিডিও-এর ফ্রি ট্রেনিংয়ে নিজের বাকি খামতিটুকু মিটিয়ে তৈরি হন নিখুঁতভাবে। এত বছরের অধ্যাবসায় বৃথা যায়নি। আইসিডিএস সুপারভাইজারের চূড়ান্ত তালিকায় নাম রয়েছে সুমনা সামন্তেরও।

এই দুই কন্যের সাফল্যে উচ্ছ্বসিত বিডিও কৌশিক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তিনি বলেন, ”এরা আমাদের গর্ব। অনেক ভালো ছাত্রছাত্রী আছেন, নামী প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করতে পারেন না। অনেকে ধৈর্য হারিয়ে ফেলে, দরকার গাইডেন্স-এর। তাদের জন্যই আমাদের এই উদ্যোগ।” মহকুমা প্রশাসন সূত্রে খবর, কৌশিতবাবুর পাশাপাশি এই উদ্যোগে অগ্রণী ভূমিকা রয়েছে জয়েন্ট বিডিও সব্যসাচী দাস, এডিএসআর সমিত ঘোষ, ভূমি রাজস্ব আধিকারিক সোম শেখর সরকার, ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট অর্মত্য দেবনাথেরও।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *