এদিকে, এলাকার শ্রমিকের মৃত্যুতে শোকাচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে গোটা গ্রাম। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, সুতি থানার মদনা গ্রামের যুবক সামিরুল ইসলাম। বাড়িতে স্ত্রী, এক ছেলে এবং কন্যা সন্তান রয়েছে। দীর্ঘদিন এলাকাতেই কাজ করলেও মাস দুয়েক আগে আর্থিক অনটনে তামিলনাড়ুর (Tamil Nadu) কোটাগিরিতে রাজমিস্ত্রি কাজ করতে গিয়েছিলেন তিনি। সামনে রোজা শেষে ঈদেই বাড়ি ফেরার কথা ছিলো সামিরুল ইসলামের।
পরিবার সূত্রের খবর, অন্যান্য দিনের মতন মঙ্গলবারও রাজমিস্ত্রির কাজ করতে যাওয়ার জন্য বাসে চেপেছিলেন তিনি। কিন্তু অসাবধানতাবশত বাসের দরজা থেকে নীচে পড়ে যান সুতির ওই শ্রমিক। গুরুতর জখম অবস্থায় তার সহকর্মীরা তাঁকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এদিকে রাজমিস্ত্রি কাজ করতে গিয়ে পরিবারের কর্তার আকস্মিক মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছেন স্ত্রী পলি খাতুন ও তার দুই সন্তান। পরিবার জুড়ে কান্নার রোল পড়েছে। দেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হলেই বাড়ি নিয়ে আসা হবে বলেই জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। ভিনরাজ্যে কাজ করতে গিয়ে বাড়ির একমাত্র রোজগেরে কর্তার মৃত্যুতে কিভাবে সংসার চলবে তা নিয়ে কার্যত দুশ্চিন্তায় পরিবার।
এই বিষয়ে এক স্থানীয় বাসিন্দা আক্ষেপ করে জানান, “এলাকায় কাজ হয় জমিতে চাষ করতে হবে, না হলে দোকান দিতে হবে। বাইরে যা রোজগার হয়, ক্ষেতখামারে শ্রমিকের কাজ করে তার কিছুই মেলে না। তাই এলাকার যুবকদের বড় অংশই ভিন-রাজ্যে কাজ করেন। জেলায় তেমন ভাল কাজ থাকলে বাড়ির ছেলে কি আর বাইরে যেত?” মুর্শিদাবাদের অনেক পরিযায়ী শ্রমিকের ভিন রাজ্যে মৃত্যুর পরে ফের প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে এলাকার কর্মসংস্থান নিয়ে।
স্থানীয়দের দাবি, সুতি সহ পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন এলাকায় কিছু ছোট কারখানা ছাড়া তেমন কোনও কারখানা নেই। কয়েকটি জায়গায় কারখানা করার প্রস্তাব হলেও, তা আজও হয়নি বলেই অভিযোগ। ফলে কাজের খোঁজে ভিন-রাজ্যে নিয়মিত পাড়ি দেন স্থানীয়রা। আর বাড়িতে দুশ্চিন্তা নিয়ে বসে থাকে পরিবার। কিন্তু এই দুশ্চিন্তার শেষ যে কোথায়, সেই উত্তর নেই কারোর কাছেই।