সব্যসাচী বাগচী
মরসুমের পর মরসুম ধরে এটাই বঙ্গ ব্যাটিংয়ের অলিখিত নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে! যেভাবে তিনি প্রায় প্রতি ম্যাচে রান করে চলেছেন, তাতে ড্রেসিংরুমের বাইরে লিখে দেওয়া উচিত ‘শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা। অনুষ্টুপ মজুমদারই (Anustup Majumdar) ভরসা।’ কঠিন পিচে মধ্যপ্রদেশের (Madhya Pradesh) বিরুদ্ধে ‘রুকু’-র ব্যাটে ভর করে কার্যত রঞ্জি ট্রফির ফাইনালে (Ranji Trophy Final 2023) চলে গেল বাংলা (Bengal)। ঘরের মাঠ ইডেন গার্ডেন্সে (Eden Gardens) আয়োজিত মেগা ফাইনালে মনোজ তিওয়ারির (Manoj Tiwary) দলের প্রতিপক্ষ সৌরাষ্ট্র (Saurashtra)। তবে এদিন অনুষ্টুপ ওরফে বাংলার প্রিয় ‘রুকু’র আউট নিয়ে বেজায় বিতর্ক হয়েছে। ম্যাচের পর এই নিয়ে বড় কথা বলে দিলেন অনুষ্টুপ।
ঠিক কী নিয়ে আউট বিতর্ক চেনা আম্পায়ার অনিল চৌধুরীর ভুল সিদ্ধান্তে ৮০ রানে থামতে হয়েছে অনুষ্টুপকে। কুমার কার্তিকয়ের যে ডেলিভারিতে, তাঁকে আউট দেওয়া হল, সেই বল প্যাডে নয়। বরং ব্যাটের কানায় লেগে ফাইন লেগের দিকে গিয়েছিল। খালি চোখে সেটা দেখে গেলেও, আন্তর্জাতিক মঞ্চের আম্পায়ার অনুষ্টুপের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত দিলেন। স্বভাবতই এমন ক্ষোভ ফুঁসছে বাংলা। কেন ঘরোয়া ক্রিকেটে ডিআরএস থাকবে না, সেটা নিয়ে ফের উঠছে প্রশ্ন। এই প্রশ্ন অনুষ্টুপেরও। ম্যাচের পর অনুষ্টুপ জি ২৪ ঘণ্টার সঙ্গে ফোনে কথা বললেন। একাধিক বিষয় নিয়ে জানালেন তাঁর প্রতিক্রিয়া।
অনুষ্টুপ বলেন, ‘দেখুন, খেলার শেষে অনিল চৌধুরী আমাকে ও মনোজকে ‘সরি’ বলে গিয়েছেন। তবে ব্যাপারটা কিন্তু এখানেই মিটছে না। আমার মতে রঞ্জি ট্রফির কোয়ার্টার ফাইনাল থেকেই ডিআরএস রাখা উচিত। কারণ আম্পায়ারের একটা ভুল সিদ্ধান্ত খেলা বদলে দেয়। এর আগে সৌরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে রঞ্জি ফাইনালে অর্পিত ভাসাবাদা-কে আউট না দেওয়ার জন্য আমাদের ভুগতে হয়েছিল।’ কঠিন পিচে দুরন্ত ব্যাটিং করছেন অনুষ্টুপ। প্রথম ইনিংসে ২০৬ বলে ১২০ রান করেছিলেন তিনি। মেরেছিলেন ১৩টি চার ও ১টি ছক্কা। স্ট্রাইক রেট ছিল ৫৮.২৫। সেখানে দ্বিতীয় ইনিংসে তাঁর স্ট্রাইক রেট কমে দাঁড়াল ৩৬.৫৩। ২১৯ বলে ৮০ রানে থামলেন হতভাগ্য অনুষ্টুপ। অনুষ্টুপ বলছেন, ‘নিজের ফিটনেসের উপর প্রচুর খেটেছি। তাছাড়া এত রানের লিড পাওয়ার পর তো হাল ছেড়ে দেওয়া যায় না। তাই ধীরেসুস্থে ব্যাট করছিলাম।’
ফাইনালের ঘরের মাঠ ইডেনে মহারণ। প্রতিপক্ষ সৌরাষ্ট্র। ২০১৯-২০ মরসুমে এই সৌরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে রাজকোটে আয়োজিত ফাইনালে হেরে গিয়েছিল বঙ্গব্রিগেড। তাই ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হতে চলা এবারের ফাইনাল যে বাইশ গজে বদলার ম্যাচ, সেটা নিয়ে বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই। অনুষ্টুপ বলছেন, ‘বিপক্ষকে নিয়ে অবশ্যই ভাবনাচিন্তা আছে। তবে আগে এই ম্যাচটা মিটুক। ঘরের মাঠ ইডেন গার্ডেন্সে প্রথম রঞ্জি ফাইনাল নিয়ে রোমাঞ্চিত অনুষ্টুপ। তাঁর সংযোজন, ‘ অবশ্যই এমন একটা ম্যাচ খেলার অপেক্ষায় আছি। সৌরাষ্ট্র খুব ভালো দল। ওরা যেভাবে কর্ণাটকের রান চেজ করল, সেটা তারিফ করার মতো। তবে আমরা যদি নিজের যোগ্যতা অনুসারে পারফরম্যান্স করতে পারি, তাহলে আমরাও রঞ্জি চ্যাম্পিয়ন হতে পারি।’ এখন দেখার বাংলা শেষ হাসি হাসতে পারে কিনা!