Subiresh Bhattacharya : ডক্টরেটেও ‘ডক্টর’ নন সুবীরেশ – ssc scam case main accused subiresh bhattacharya will not use his doctorate degree said the court


এই সময়: তিনি জুলজিক্যাল সায়েন্সেসে ডক্টরেট। ত্রিপুরার বীর বিক্রম কলেজ থেকে পশ্চিমবঙ্গের ডায়মন্ড হারবার ফকিরচাঁদ কলেজে যোগ দেন। সেখানে ছিলেন অধ্যক্ষ। সেই কলেজ থেকে যান শ্যামাপ্রসাদ কলেজের অধ্যক্ষ হয়ে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের (Calcutta University) সিন্ডিকেটের সদস্য থেকেছেন। উপাচার্যের দায়িত্ব নিয়ে গিয়েছেন উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে। একই সঙ্গে দায়িত্ব সামলেছেন দার্জিলিং হিল বিশ্ববিদ্যালয়ের। স্কুল সার্ভিস কমিশন বা এসএসসি-র মতো গুরুত্বপূর্ণ সংস্থার চেয়ারম্যান হয়েছেন। স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতিতে অন্যতম অভিযুক্ত হিসেবে তিনিই আপাতত জেলে। কিন্তু কাদের নির্দেশে এমন একজন মানুষ দুর্নীতিতে যুক্ত হলেন? সেই নাম জানতে এ বার জেলবন্দি সুবীরেশ ভট্টাচার্যের মাস্টার্স, ডক্টরেট ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করল কলকাতা হাইকোর্ট। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিবিআইয়ের (CBI) মামলা থেকে নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ার আগে সুবীরেশ তাঁর মাস্টার্স ডিগ্রি ও ডক্টরেট উপাধি ব্যবহার করতে পারবেন না বলে শুক্রবার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। তবে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছেন, নিরাপত্তার আশঙ্কায় সুবীরেশ যদি মুখ খুলতে না চান, তা হলে প্রয়োজনে আদালত দায়িত্ব নিয়ে তাঁর পরিবারকে সিআরপিএফ সুরক্ষার ব্যবস্থাও করবে। ১৩ মার্চ পরবর্তী শুনানি। সে দিন সুবীরেশকে জানাতে হবে, কার বা কাদের নির্দেশে তিনি এমন কাজে যুক্ত হয়েছিলেন।

Calcutta High Court: সুখবর! এবার একাধিক শূন্যপদে নিয়োগের নির্দেশ
শিক্ষা দুর্নীতিতে প্রাথমিক ভাবে সুবীরেশের যুক্ত থাকার বিষয়টি সামনে এসেছে। তার পরে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের আদালত এই পিএইচডি ডিগ্রিধারীকে আর রেয়াত করেনি। এ বার সুবীরেশের বিরুদ্ধে আরও কঠোর পদক্ষেপ হাইকোর্টের (Calcutta High Court)। ২০১৬ সালে স্কুলে চতুর্থ শ্রেণির কর্মী নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছিল বলে জানিয়েছে এসএসসি। আদালতের নির্দেশ মেনে ১,৯১১ জন শিক্ষাকর্মীকে শুক্রবারই কাজ থেকে বরখাস্ত করা হয়। এ বার এই দুর্নীতিতে সুবীরেশের ভূমিকা আদালতের নজরে। ঘটনাটি যখন ঘটে, তখন তিনিই ছিলেন চেয়ারম্যান। এ কথা জানার পরে শুক্রবার বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ – সুবীরেশ ভট্টাচার্যকে মামলায় যুক্ত করতে হবে। পরবর্তী শুনানিতে তিনি আদালতকে জানাবেন, কার নির্দেশে এই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন। আদালতের অভিমত – নাম না জানালে ধরে নেওয়া হবে, তিনিই এই দুর্নীতির মাথা। কারণ চেয়ারম্যানের নির্দেশ ছাড়া কমিশনের সার্ভারে তথ্য বিকৃত করা যেতে পারে না।

SSC Group D Recruitment: ১৯১১ গ্রুপ ডি কর্মীর চাকরি বাতিল, ফেরত দিতে হবে বেতনও, বিজ্ঞপ্তি কমিশনের
এরপরেই আদালত সুবীরেশের ব্যাপারে আরও কঠোর পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করে। কোর্টের বক্তব্য – তিনি একজন শিক্ষাবিদ। অধ্যাপক থেকে পরে অধ্যক্ষ এবং শেষে উপাচার্য হন। এত কিছুর পরেও তিনি শিক্ষায় এমন দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত হলেন! কোর্ট জানায়, কাদের নির্দেশে তিনি এমন কাণ্ড ঘটিয়েছেন, সেই বা সে সমস্ত নাম যদি তিনি না জানান, তা হলে সিবিআইয়ের মামলা থেকে যতদিন না নির্দোষ প্রমাণিত হয়ে বেরিয়ে আসছেন, ততদিন সুবীরেশ তাঁর মাস্টার্স ডিগ্রি ও ডক্টরেট উপাধি ব্যবহার করতে পারবেন না। পাশাপাশি উঠে আসে অভিযুক্ত প্রাক্তন শিক্ষাকর্তার পরিবারকে সিআরপিএফ নিরাপত্তা দেওয়ার প্রসঙ্গ। এই আদালত অবশ্য আগে সুবীরেশ সম্পর্কে এতখানি কঠোর ছিল না। কিন্তু সিবিআই গ্রেপ্তার করার পরেও তিনি তদন্তে সহযোগিতা করছেন না বলে অভিযোগ ওঠে। তখন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় এসএসসি-র প্রাক্তন চেয়ারম্যানের নাম করেই তদন্তে সহযোগিতা করার কথা বলে। তারপরেও সুবীরেশকে জেরা করে কতখানি তথ্য সিবিআইয়ের হাতে এসেছে, সে বিষয়টি অস্পষ্ট।

SSC Group D Scam : দোষী হলে টাকা ফেরতের সঙ্গে জেল, বার্তা কোর্টের
শিক্ষা মহলের খবর, অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর হিসেবেই ডায়মন্ড হারবার ফকিরচাঁদ কলেজে অধ্যক্ষ পদে ছিলেন সুবীরেশ। পশ্চিমবঙ্গে তাঁর প্রাথমিক নিয়োগকর্তা এই কলেজ। সূত্রের খবর, এই কলেজ সুবীরেশের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। কারণ, গ্রেপ্তারির সময়ে তিনি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। গ্রেপ্তারির পর রাজ্য তাঁকে সেই পদ থেকে সরিয়েও দিয়েছে। এখন আইনজীবী মহলের একাংশের ব্যাখ্যা, আদালতের এ দিনের নির্দেশের প্রেক্ষিতে পাল্টা মামলার পথে যেতে পারেন সুবীরেশ। এবং কোর্ট কারও ডিগ্রি খারিজ করতে পারে না। সেটা পারে একমাত্র ডিগ্রি প্রদানকারী বিশ্ববিদ্যালয়। কোর্ট বড়জোর এ সংক্রান্ত নির্দেশ দিতে পারে। যদিও আদালত এ দিন তেমন কোনও নির্দেশ দেয়নি। তা ছাড়া, ইতিপূর্বে তিনি ডক্টরেট বা মাস্টার্স ডিগ্রি ব্যবহার করে যে সব কাজ করেছেন, সেগুলি বাতিলও হবে না। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু এ দিন বলেন, ‘গোটাটাই সুবীরেশের ব্যক্তিগত বিষয়। এ ব্যাপারে আমাদের কিছু বলার নেই।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *