West Bengal Governor : সুকান্ত সাক্ষাতের পরই কড়া বার্তা রাজ্যপালের – west bengal governor c v ananda bose gives strong message to prevent violence in panchayat election


এই সময়: রাজ্যে অবাধ ও সুষ্ঠু পঞ্চায়েত ভোট করানোর আশ্বাস দিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। শনিবার বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের সঙ্গে সাক্ষাতের পর রাজভবন থেকে জারি এক প্রেস বিবৃতিতে রাজ্যপাল জানিয়েছেন, নির্বাচনে হিংসার কোনও স্থান নেই। কেউ আইন হাতে তুলে নিতে পারে না। অত্যন্ত বিচক্ষণতার সঙ্গে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখা হবে এবং তার জন্যে সময়োচিত এবং সদর্থক পদক্ষেপ করা হবে। সেই সঙ্গে রাজ্যপালের বক্তব্য, ‘আপনি যতই উঁচু পদে থাকুন না কেন, আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নন।’ দুর্নীতির প্রশ্নেও কড়া বার্তা শুনিয়েছেন রাজ্যপাল। তাঁর সাফ কথা, দুর্নীতিকে কোনও ভাবেই প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। এ ব্যাপারে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করা হবে। রাজ্য সরকার যে পদ্ধতিতে লোকায়ুক্ত নিয়োগ করেছে, সেটা বিধিসম্মত নয় বলেও মনে করছে রাজভবন। সে জন্যে আইনে সংশোধনী আনতে হবে। এ ব্যাপারে রাজ্য সরকারেরও সম্মতি রয়েছে বলে রাজভবনের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।

রাজ্যপালের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর হৃদ্যতা এবং রাজ্য সরকারের প্রতি তাঁর ‘নরম’ মনোভাব নিয়ে প্রথম থেকেই বিড়ম্বনায় ছিল বঙ্গ-বিজেপি। বিভিন্ন বিষয়ে রাজ্যপাল সম্পর্কে বিজেপি নেতাদের মন্তব্যেই সেটা বার বার প্রকট হয়েছে। সম্প্রতি সেন্ট জেভিয়ার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে রাজ্যপালের মুখে মুখ্যমন্ত্রীর ‘স্তুতি’ শুনে প্রকাশ্যেই রে-রে করে উঠেছিলেন রাজ্য বিজেপি নেতারা। বিধানসভার বাজেট অধিবেশনের প্রথম দিন রাজ্যপালের ভাষণের বিরোধিতায় বিক্ষোভেও সামিল হয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে বিজেপি বিধায়করা। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ৮ ফেব্রুয়ারি বিধানসভায় রাজ্যপালের উপস্থিতিতে বিজেপি বিধায়কদের বিক্ষোভের পর শনিবার বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বিভিন্ন দাবি নিয়ে রাজভবনে যান। ঘণ্টা দুয়েক রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গে কথা বলে বেরিয়ে সুকান্ত দাবি করেন, ‘দুর্নীতি ও হিংসামুক্ত রাজনীতির পক্ষে রাজ্যপাল। বাংলার রাজনীতিতে বার বার হিংসা ঢুকে পড়ছে, যা অভিপ্রেত নয় বলে তিনি জানিয়েছেন। দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত কাউকে রেহাই দেওয়া হবে না বলেও তিনি আশ্বস্ত করেছেন। লোকায়ুক্ত ভেঙে দিতে বিধানসভায় অর্ডিন্যান্স আনার কথাও বলেছেন রাজ্যপাল।’ এর কিছুক্ষণ বাদেই রাজভবন থেকে লিখিত বিবৃতি দেওয়া হয়।

Sukanta Majumdar At Raj Bhavan : শুভেন্দু মুখ দেখাতে পারছেন না, রাজ্যপালের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন সুকান্ত: কুণাল
তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ অবশ্য রাজ্যপালের বিবৃতিতে অস্বাভাবিক কিছু দেখছেন না। তিনি বলেন, ‘দুর্নীতির ইস্যুতে জিরো টলারেন্স নীতির কথা তো আমাদের নেতারাও বলছেন। সেই মতো ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু সিবিআইয়ের এফআইআরে নাম থাকা শুভেন্দু অধিকারীকে বিরোধী দলনেতা রেখে বিজেপি জিরো টলারেন্সের কথা বলবে, এটা কী করে হবে?’

বিধানসভায় রাজ্যপালের ভাষণের দিন প্রেস কর্নারে শুভেন্দু বলেছিলেন, ‘উনি (আনন্দ বোস) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের খপ্পরে পড়েছেন। ওঁকে গ্যাস খাওয়ানো হচ্ছে।’ এ দিন আবার একটি সভার শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিরোধী দলনেতা বলেন, ‘সাংবিধানিক পদে এক জন বসে আছেন। তাঁর সম্পর্কে আমি কোনও কথাই বলব না। আমি যত বার ওঁর সম্পর্কে বলেছি, তত বারই বলেছি, ওঁর সচিব নন্দিনী চক্রবর্তী ভুল বোঝাচ্ছেন।’ তাঁর সংযোজন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফাঁদে উনি পা দিয়েছেন। রাজ্যপাল ভালো মানুষ। শিক্ষিত লোক। উনি ট্র্যাকে ফিরে আসুন, সঠিক রাস্তায় ফিরে আসুন। গোপালকৃষ্ণ গান্ধী ও জগদীপ ধনখড়ের দেখানো পথে সংবিধানের রক্ষক হিসেবে কাজ করুন। আমার বিশ্বাস, উনি ট্র্যাকে আসতে শুরু করেছেন। গতকাল প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করেছেন। উনি আস্তে আস্তে ট্র্যাকে ফিরছেন, এটা আমাদের জন্যে ভালো।’

Suvendu Adikari News: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা ভাষণ পাঠ করেছেন, আমরা আশাহত: শুভেন্দু
পাল্টা কুণালের কটাক্ষ, ‘শুভেন্দু লজ্জায় রাজভবনে ঢুকতে পারছে না। বিধানসভায় শুভেন্দুরা যে ভাবে ওঁকে অপমান করেছে, তাতে রাজ্যপাল অত্যন্ত ক্ষুব্ধ ছিলেন। তাই সুকান্ত শাক দিয়ে মাছ ঢাকতে গিয়েছেন।’ তাঁর কথায়, ‘মাছটা হচ্ছে অপমান আর শাকটা হচ্ছে প্রেস রিলিজ।’ প্রসঙ্গত, রাজভবনের বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, মূলত তিনটি বিষয়কে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন রাজ্যপাল। প্রথমত, সংবিধানের মর্যাদা রক্ষা। দ্বিতীয়ত, আইনের শাসন সুনিশ্চিত করা এবং তৃতীয়ত, রাজ্যের মানুষের উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করা।

West Bengal Assembly Session: বিধানসভায় রাজ্যপালের ভাষণের মধ্যেই স্লোগান, কাগজ ছিঁড়ে বিক্ষোভ! তুমুল হই হট্টগোল করে ওয়াক আউট BJP-র
রাজভবনের বিবৃতিতে বিজেপি শিবির কিছুটা উৎফুল্ল হলেও তৃণমূল যে এর মধ্যে নেতিবাচক কিছু দেখতে নারাজ, কুণালের কথাতেই এ দিন সেই ইঙ্গিত মিলেছে। কুণালের ব্যাখ্যা, ‘এক জন বিরোধী দলের নেতার সঙ্গে সাক্ষাতের পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যপাল কতগুলো রুটিন কথাবার্তা বলেছেন। রাজ্য সরকারের সঙ্গে কোথাও দ্বিমত থাকলে সেটা উনি বলতেই পারেন। জগদীপ ধনখড়ের মতো উনি তো আর ঘুম থেকে উঠেই টুইট করেন না।’ সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর মন্তব্য, ‘রাজ্যপাল এক এক দিন এক এক রকম বিবৃতি দিচ্ছেন। এ ভাবে তিনি নিজের পদমর্যাদা নষ্ট করছেন।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *