Jhargram News : ‘আমরা মায়া কাটিয়ে চলে যাচ্ছি…’, ছেলেকে ফোন ঝাড়গ্রামের বৃদ্ধ দম্পতির! তারপর… – a veteran couple tried to commit suicide in jhargram town


West Bengal News : নিঃসঙ্গতা এবং একাকীত্ব বোধ থেকে মানসিক অবসাদ চরমতম সীমায় গেলে কি পরিস্থিতি হয় এ যেন তারই জ্বলন্ত উদাহরণ। কাকভোরে নিঃসঙ্গ প্রবীণ দম্পতি (Veteran Couple) কীটনাশক পান করে আত্মঘাতী (Suicide) হওয়ার চেষ্টা করলেন। অবসরপ্রাপ্ত স্বামী ঢলে পড়লেন মৃত্যুর কোলে আর মুখে গ্যাঁজলা বেরোনো অবস্থায় তার স্ত্রী সন্তানদের ফোন করে বললেন, “বাবারা আমরা পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে চলে যাচ্ছি সদর দরজা খোলা রইল।” তারপরেই ফোন কেটে যায়। ৫৮ বছরের তৃপ্তি দাসের এই ফোন পেয়ে হতচকিত হয়ে যান তাঁর ছোট ছেলে দীপালক। ঘুমের ঘোর কাটিয়ে ফোন করেন কলকাতা পুলিশের (Kolkata Police) সার্জেন্ট তার বড় দাদা দেবত্বমকে। দেবত্বম তখন ঘুমোচ্ছিলেন। ভাইয়ের এমন ফোন পেয়ে হতবাক হয়ে যান তিনি। সঙ্গে সঙ্গেই ফোন করেন ঝাড়গ্রামের (Jhargram) কয়েকজন বন্ধুকে।

Home Guard : বেহালায় মহিলা হোমগার্ডের অস্বাভাবিক মৃত্যু, কারণ নিয়ে ধন্দে পুলিশ
তারা ছুটে যান শহরের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের রঘুনাথপুর এলাকার বাড়িতে। গিয়ে দেখেন ৬৬ বছরের বৃদ্ধ অনুপম দাস নিথর হয়ে শুয়ে আছেন বিছানায়। পাশেই তার স্ত্রী তৃপ্তি দাসের মুখ থেকে কীটনাশকের গন্ধ বেরোচ্ছে আর গ্যাঁজলা। দুজনকে উদ্ধার করে দেবত্বমের বন্ধুরা নিয়ে যান ঝাড়গ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (Jhargram Medical College and Hospital)। সেখানে অনুপমকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালের ICCU বিভাগে ভর্তি করানো হয় তৃপ্তিকে। অনুপম জামবনি ব্লকের বাহিরগ্রাম হাই স্কুলের শিক্ষক ছিলেন। ২০১৬ সালে অবসর নিয়েছেন। আর তৃপ্তি, ঝাড়গ্রাম (Jhargram) ব্লকের পুকুরিয়া এলাকার দুধকুঁড়ি শিশু শিক্ষা কেন্দ্রের প্রধান শিক্ষিকা। এদিকে মৃত্যুর কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা দেখা দিয়েছে। কেউ কেউ বলছেন, দুই বিবাহিত সন্তান সপরিবারে দুই জায়গায় থাকেন।

Purba Medinipur : কাজ সেরে বাড়ি ফেরার পথে হলদিয়া বন্দর স্টেশনে শ্রমিকের মৃত্যু, কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা
তাদের বড় ছেলে দেবত্বম কলকাতা পুলিশে (Kolkata Police) সার্জেন্ট পদে কাজ করেন। সপরিবারে থাকেন কলকাতায়। ছোট ছেলে দীপালক তিনি বীরভূম জেলার অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক। সপরিবারে থাকেন সেখানে। ঝাড়গ্রামের বাড়িতে অনুপম ও তার স্ত্রী একাই থাকতেন। অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক সকালে প্রাপ্ত ভ্রমণ বেরোতেন। সন্ধ্যেবেলাও বেরোতেন পরিচিতদের সঙ্গে চা খেতেন দীর্ঘক্ষণ আলাপ-আলোচনা করতেন তারপরে বাড়ি চলে আসতেন। আর তৃপ্তি তার কর্মস্থলে যেতেন। আর দু’বছর পরে তৃপ্তির অবসর নেওয়ার কথা ছিল। তবে তৃপ্তির স্কুলের অপর শিক্ষিকা জানাচ্ছেন, গত বছর শিশু শিক্ষা কেন্দ্রে মাত্র ২৪ জন পড়ুয়া ছিল। এবারেও খাতায়-কলমে সেই পড়ুয়া থাকলেও বাস্তবে কোন পড়ুয়া আর স্কুলে আসেনি।

শিশু শিক্ষা কেন্দ্রের শিক্ষিকা রীতা দাস বলেন, “গত দু’মাস আগে BDO অফিস থেকে পরিদর্শনে গিয়ে আমাদের বলা হয় দু’মাস সময় দেওয়া হচ্ছে। আপনারা পাড়ায় পাড়ায় গিয়ে বৈঠক করে পড়ুয়াদের নিয়ে আসুন। নাহলে আপনাদের চাকরি থাকবে না। আমার কেউ নেই। আমি একা। আমার চাকরি গেলে কি করব? গতকাল রাতে আমাকে ফোন করে অনুপম দা বলেছিলেন আমাদের চাকরি গেলে কিছু হবে না। ছেলেরা চাকরি করে। কিন্তু তোমার যাতে চাকরি না যায় সে কথা BDO অফিসে মিড ডে মিলের লোককে ফোন করে বলেছি। স্কুল নিয়ে কয়েক মাস ধরেই খুব মানসিক চাপে ছিলেন দিদিমণি। কিন্তু সে জন্য কেন বিষ খাবেন আমিও বুঝতে পারছি না। এদিন সকালে ঘটনার কথা শুনেই আমিও চমকে গিয়েছি।”

Malda News: স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে ছাত্রীর বাড়িতে গিয়ে বিয়ের প্রস্তাব, অপমানে চরম সিদ্ধান্ত দশম শ্রেণির পড়ুয়ার!
সোমবার দুপুরে ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশ মর্গে অনুপমের দেহ ময়নাতদন্তের পর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। যদিও এই ঘটনা প্রসঙ্গে পরিবারের তরফ থেকে জানা গিয়েছে, পরিবারে কোনও অশান্তি ছিল না। মানসিক অবসাদের জেরে আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা নাকি এর পেছনে অন্য রহস্য রয়েছে তা ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে ঝাড়গ্রাম থানার পুলিশ (Jhargram Police Station)।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *