অর্নবাংশু নিয়োগী: কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে চাকরি হারিয়েছেন গ্রুপ ডি-র ১৯১১ কর্মী। ওএমআর শিটে জালিয়াতির জন্য তাদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করার নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। তাদের বেতনও ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায়। সেই নির্দেশের উপরে স্থগিতাদেশ দিল হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। ওই মামলায় বাকী নির্দেশ বহাল থাকছে। পরবর্তী শুনানি হবে আগামী ৩ মার্চ।
আরও পড়ুন- এসএসসি গ্রুপ ডি-র ১৯১১ জনের চাকরি বাতিল, জারি হল বিজ্ঞপ্তিও
উল্লেখ্য, রাজ্যের ১৯১১ জন গ্রুপ ডি কর্মীকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার পাশাপাশি তাদের ৩ সপ্তাহের মধ্য়ে বেতন ফেরতের নির্দেশ দেন বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায়। সেই রায়ের বিরুদ্ধে চাকরি হারানো গ্রুপ ডি কর্মীরা সওয়াল করেন, তারা কাজ করেছেন। তাই তাদের বেতন কেন ফেরত নেওয়া হবে। ওই সওয়ালের পরই তাদের বেতন ফেরতের নির্দেশের উপরে স্থগিতাদেশ জারি করে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ।
এসএসসির দুর্নীতির তদন্ত নেমে গাজিয়াবাদ থেকে উদ্ধার হয়ে বেশকিছু ওএমআর শিট। সেই প্রসঙ্গ তুলে মামলাকারীদের আইনজীবী আজ সওয়াল করেন, ওএমআর শিটের স্ক্যান কপি তাদের দেওয়া হয়েছিল। তাই সেই কপি সঠিক কিনা তা নিয়েও সন্দেহ থেকে যায়। বর্তমান সময়ে কোনও ইলেকট্রনিক নথি জাল করা কোনও কঠিন কাজ নয়। চাকরি বাতিল ও সুপারিশ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে শুনানি না করেই।
এনিয়ে কমিশন বলেন, ওএমআর শিটে থাকা নম্বর ও কমিশনের কাছে থাকা নম্বর মিলিয়ে দেখা হয়েছে। এটাই সছিক পদ্ধিত। আগে যা হয়েছে তা হয়েছে। এখন সঠিক করার পালা। যা হয়েছে তা একেবারেই জালিয়াতি।
গত ১০ ফেব্রুয়ারি ওই ১৯১১ জনের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। এবার ওয়েটিংয়ে যারা রয়েছেন তাদের মধ্যে থেকে শূন্যপদ পূরণ করতে হবে। এমনটাই জানিয়ে দিলেন বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায়। যদি সেখানেও ওএমআর শিটে জালিয়াতি থাকে তাহলে তাও বাতিল করতে হবে। আগামী ৩ সপ্তাহের মধ্যে এই কাজ শেষ করতে হবে।
এদিন বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, যে সময় গ্রুপ ডি কর্মীদের নিয়োগ হয় সেই সময় পর্ষদের সভাপতি ছিলেন সুবীরেশ ভট্টাচার্য। কার নির্দেশে ওই জালিয়াতি তিনি করেছিলেন তার নাম তাঁকে সামনে আনতে হবে। যদি তিনি তা না করেন তাহলে ধরে নিতে হবে দুর্নীতির চূড়ায় তিনিই বসে রয়েছেন। যদি তিনি ভয় পান তাহলে তাকে কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা দেওয়া হবে। যতদিন পর্যন্ত না তিনি মামলা থেকে রেহাই পাচ্ছেন ততদিন তিনি তার ডক্টরেট ডিগ্রি ও শিক্ষাগত যোগ্যতা ব্যবহার করতে পারবেন না। একজন প্রাক্তন ভিসির কাছ থেকে এরকম জিনিস কখনওই কাম্য নয়।