সেই উপায় খুঁজতেই তিনি হাজির হলেন কাটোয়া মহাকুমা হাসপাতাল (Katwa Hospital)। আর সেই সময় শ্যামল বাবুর কানের অবস্থা দেখে হতভম্ব হয়ে যান চিকিৎসকরা। পরিবার সূত্রে খবর, শ্যামল প্রামাণিকের বাড়ি কাটোয়া থানার (Katwa Police Station) কোয়ারা গ্রামে। পেশায় গাড়ি চালক।
শ্যামলবাবুর এই অবস্থা দেখে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের (Katwa Hospital) জরুরি বিভাগের চিকিৎসকরা অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন। আর বৃহস্পতিবার অস্ত্রোপচারের পরই শ্যামল বাবু বিপদমুক্ত হন। প্রায় ১ ঘন্টার অস্ত্রোপচারের পর হাসপাতালের চিকিৎসকরা তাঁর কানের ছিদ্র থেকে এমসিল আঠা বের করলেও তার কানের পর্দা নষ্ট হয়ে গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে হাসপাতাল সূত্রে।
এই বিষয়ে শ্যামল বাবুর স্ত্রী সঞ্চিতা প্রামাণিক জানিয়েছেন, “আমার স্বামী পেশায় গাড়ি চালক। বুধবার দুপুরে তিনি কাটোয়ার সিঙ্গি মোড়ের বাসস্ট্যাণ্ডের কাছে কান পরিষ্কার করা এক হাতুড়ের কাছে নিজের কান পরিষ্কার করাতে গিয়েছিলেন। কান পরিষ্কার করার সময় অত্যাধিক খোঁচাখুঁচি করায় শ্যামল বাবুর কান থেকে রক্ত বের হতে শুরু করে। হাতুড়ে ওই যুবক শ্যামল বাবুর কানের রক্ত বন্ধ করতে ‘এমসিল’ আঠা দিয়ে কানের ছিদ্রে বন্ধ করে দেয়।”
তিনি আরও বলেন, “শ্যামল বাবুকে হাতুড়ে বলেছিল এই ওষুধে কান থেকে রক্ত পড়া বন্ধ হবে এবং কিছুক্ষণ পর এটা নিজে থেকে খুলে যাবে।” কিন্তু সিঙ্গি মোড় থেকে গাড়ি নিয়ে কয়েক কিমি দূরে নিজের বাড়ি কোয়ারা গ্রামে ফিরে শ্যামল বাবু অসুস্থ হয়ে পড়েন। কানের অসহ্য যন্ত্রণা হওয়ায় জ্ঞান হারানোর পরিস্থিতি তৈরি হয় তাঁর।
এরপরেই গ্রামবাসী ও আত্মীয়রা শ্যামল বাবুকে উদ্ধার করে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করেন। এরপরই তার অস্ত্রোপচার হয়। কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের ENT বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ভাস্করজ্যোতি বর্মন জানিয়েছেন, “এরকম রোগী কোনওদিন আমি পাইনি। রক্ত বন্ধ করতে কানেও যে এমসিল ব্যবহার করা যায় সেটা এই প্রথম দেখলাম। শ্যামলবাবুর প্রচুর ক্ষতি হতে পারত। তবে এই জীবনে তিনি বেঁচে গেলেন।”
এমসিল জাতীয় শক্তিশালী আঠা, সাধারণত কলের পাইপের ছিদ্র বন্ধ করতে ব্যবহার করা হয়। তবে শ্যামল বাবুর কানের পর্দা নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এদিকে এই ঘটনার পরে কান পরিষ্কার করা হাতুড়ে যুবকের খোঁজ শুরু করেছেন শ্যামল বাবুর পরিবারের লোকজনেরা।