গত সপ্তাহে বালিগঞ্জে গজরাজ গ্রুপের অফিস থেকে ১ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা উদ্ধার হওয়া ইস্তক মনজিৎ সিং গ্রেওয়াল ওরফে জিট্টাভাইকে নিয়ে টানাপড়েন কম হয়নি। ইডি লিখিত ভাবে দাবি করেছিল, ‘সালাসার গেস্ট হাউস’ নামে কলকাতার একটি সম্পত্তি কেনার মাধ্যমে এক জন অত্যন্ত প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতার হয়ে কয়লা পাচারের টাকা বেআইনি ভাবে হাতবদল করছিলেন মনজিৎ। এই প্রসঙ্গে ইডি নাম না-করে এক মন্ত্রীর কথাও বলেছিল।
তার পর বিজেপি ও তৃণমূল- দু’দলের নেতৃত্বই মনজিতের সঙ্গে অন্য পক্ষের নেতাদের ছবি সামনে এনেছেন। তবে এ দিন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অফিসে ঢোকার আগে সেই মনজিৎ সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে দাবি করেছেন, কোনও মন্ত্রী বা প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের সঙ্গে তাঁর সখ্য নেই, কয়লা পাচারের সঙ্গেও তাঁর কোনও যোগ নেই। যে গজরাজ গ্রুপের কর্তা বিক্রম শাকারিয়ার অফিস থেকে ইডি নগদ ১ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা বাজেয়াপ্ত করেছিল, তাদের সঙ্গেও তাঁর কোনও যোগ নেই বলে দাবি করেছেন মনজিৎ ওরফে জিট্টাভাই।
তাঁর বক্তব্য, ‘কখনও কয়লা আসছে, কখনও শেয়ার আসছে! আমার কাছে গত পাঁচ বছরের আয়কর সংক্রান্ত তথ্য, প্যান কার্ড, ভোটার কার্ড এবং অন্যান্য নথি চাওয়া হয়েছে। আমি সেগুলো সঙ্গে নিয়ে এসেছি। ওই কয়লা শেষ পর্যন্ত ছাই হবে। আর কিছুই নয়।’
মনজিতের কাছ থেকে ঠিক কী জানতে চাইছে ইডি?
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এর আগে দাবি করে, সালাসার গেস্ট হাউসের বাজারদাম ছিল ১২ কোটি টাকা। কিন্তু সেই সম্পত্তি খাতায়-কলমে ৩ কোটি টাকায় রেজিস্ট্রি করে বাকি ৯ কোটি টাকা নগদে বেআইনি ভাবে হাতবদল করা হয়েছে। ওই ৯ কোটি টাকারই একটি অংশ পাওয়া গিয়েছিল বালিগঞ্জে গজরাজ গ্রুপের অফিস থেকে।
সেই টাকা কার হয়ে হাতবদল করা হচ্ছিল, কেনই বা ওই গেস্ট হাউসের পুরোনো মালিক এত কম দামে সেটি বিক্রি করলেন, এর পিছনে কোনও প্রভাবশালীর ভূমিকা আছে কি না, মনজিৎ এই গেস্ট হাউস ছাড়া গত কয়েক বছরে আর কোন কোন সম্পত্তি ডেভেলপ করেছেন, সে সব ক্ষেত্রে কার কার সঙ্গে তাঁর অংশীদারিত্ব ছিল, সে সবই মনজিতের কাছ থেকে জানতে চায় ইডি।
এমনিতে মনজিতের পরিচয় ভবানীপুর এলাকার বড় ব্যবসায়ী হিসেবে। শরৎ বোস রোডে তাঁদের একটি ধাবাও রয়েছে। দক্ষিণ কলকাতার বিভিন্ন এলাকায় বেশ কিছু সম্পত্তি ডেভেলপ করার সঙ্গে যুক্ত মনজিৎ। এ দিন ইডি দপ্তরে ঢোকার আগে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মনজিৎ জানান, কোনও বেআইনি কাজকর্মের সঙ্গে তিনি জড়িত নন, প্রতিটি আর্থিক লেনদেনের পক্ষে বৈধ নথি তাঁর কাছে রয়েছে।