তেলেঙ্গানার সেকেন্দ্রাবাদের পৈতৃক ভিটে সেখান থেকে বছর কুড়ি আগে উত্তরপাড়ায় চলে আসেন পাকাপাকিভাবে। সেখানেই একটি আবাসনে একাই থাকতেন তিনি। অবিবাহিত বলরাম বাবুর এক পালিত পুত্র রয়েছে।
দক্ষিণ পূর্ব রেলে (South Eastern Railway) চাকরি করতেন তিনি। ফুটবল ছিল তার কাছে ধ্যান জ্ঞান। ভারতের এশিয়ান গেমসে সোনাজয়ী দলের সদস্য ছিলেন তিনি। তার মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ গোটা ক্রীড়ামহল থেকে উত্তরপাড়াবাসী।
তার প্রতিবেশী স্মিতা সরকার বলেন, “আমরা ভেবেছিলাম উনি হয়তো ফিরে আসবেন। কিন্তু এই ভাবে চলে যাবেন ভাবিনি। উনি এই বাড়ি আর আমাদের খুবই ভালোবাসতেন। খুব মনের জোর ছিল তাঁর। আমাদের অভিভাবক হিসাবে ছিলেন তুলসীদাসবাবু। এই ক্ষতি আর পূরণ হবে না।”
বলরাম বাবুর স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে অশ্রু ভেজা চোখে একসময়ের ছায়া সঙ্গী সমীরন ব্যানার্জি বলেন, “তার সম্বন্ধে যতটুকু বলি তা কম বলা হবে। ঈশ্বর তুল্য মানুষ ছিলেন। মানসিক দিক দিয়েও তিনি খুব ভাল মনের মানুষ ছিলেন। ৬২ সালে শেষ এশিয়া গেমস চ্যাম্পিয়ন দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। সাউথ ইস্টার্ন রেলে সিনিয়র ওয়েলফেয়ার অফিসার হয়ে অবসর নেন তিনি। শেষ জীবনটা অনেকটা কষ্টের মধ্যে কেটেছে তার, শুয়ে উঠতে পারতেন না।”
উত্তরপাড়া পুরসভার পুরপ্রধান দিলীপ যাদব বলেন, “উনি আমাদের রাজ্য ও দেশের গর্বের মানুষ ছিলেন। বার্ধক্যজনিত কারণে দীর্ঘদিন ভূগছিলেন। উনি পুরসভার বিভিন্ন কর্মসূচিতে উপস্থিত হতেন। আমরা মর্মাহত তার প্রয়াণে। আমরা তাঁকে যথাযথ সম্মান আগেও দিয়েছি, ভবিষ্যতেও দেব।”
সূত্রের খবর অনুযায়ী, আজ রাত আটটা নাগাদ তার মরদেহ উত্তরপাড়ার বাসভবনে নিয়ে আসা হবে। সেখানে তাকে শ্রদ্ধা জানাবেন আত্মীয় স্বজন থেকে প্রতিবেশী ও সাধারন মানুষ। ১৯৩৬ সালে ৪ অক্টোবর তেলঙ্গানার সেকেন্দ্রাবাদের আম্মাগুডা গ্রামে অত্যন্ত দরিদ্র পরিবারে জন্ম বলরামের।
দু’বেলা, দু’মুঠো খাবার জোটানোর ক্ষমতা ছিল না তার পরিবারের। খেলার জন্য ছিল না কোনও সবুজ ঘাসের মাঠ। কিন্তু তাতেও হার না মেনে একটু একটু করে স্বপ্ন দেখতে দেখতে এগিয়ে গিয়ে দেশের হয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে সন্মান অর্জন করেন তিনি।