বাঁকুড়ার সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠান থেকে কেন্দ্রের ‘বঞ্চনা’ নিয়ে বলতে গিয়ে টেনে আনলেন সত্যজিৎ রায়ের বিখ্যাত চরিত্র ‘গুপি-বাঘা’র প্রসঙ্গ। চলচ্চিত্রে গুপী বাঘা ভূতের রাজার বর পাওয়ায় হাততালি দিয়ে থালাভর্তি ‘মিষ্টান্ন’ জোগাড় করতে পারতেন। কিন্তু তিনি ‘ম্যাজিশিয়ান’ নন, তাই ‘টাকা’ চাইলেই পাওয়া যায় না, ‘জোগাড় করতে হয়’ – কেন্দ্রকে দুষে মন্তব্য মুখ্যমন্ত্রীর।
শুক্রবার বাঁকুড়ার বলরামপুরে সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় আগাগোড়া কেন্দ্রীয় সরকারকে নিশানা করলেন। তাঁর বক্তব্যে এবার সরাসরি উঠে আসে ডিএ প্রসঙ্গ থেকে কেন্দ্রীয় বঞ্চনার কথা। কেন্দ্রের আর্থিক বঞ্চনায় যে ডিএ দিতে রাজ্যকে অপারগ করে চলেছে সেই কথা ফের এদিন স্পষ্ট করে দেন মুখ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, “আমি তো ম্যাজিশিয়ান নই , টাকা দাও বললেই হঠাৎ গুপি গাইন -বাঘা বাইনের মতো মিষ্টি চলে এল, টাকা চলে এল। টাকাটা জোগাড় করতে হয়। কেন্দ্রীয় সরকারের বঞ্চনা সত্ত্বেও ৩% ডিএ আমরা দিয়েছি।” চলতি আর্থিক বছরের রাজ্য বাজেটে সরকারি কর্মচারীদের জন্য ৩% মহার্ঘ্যভাতার কথা ঘোষণা করা হয়।
কিন্তু সরকারি কর্মীরা তাতে সন্তুষ্ট নন। বরং বকেয়া ডিএ না মেটালে আগামী ২০ ও ২১ ফেব্রুয়ারি রাজ্যজুড়ে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন তাঁরা। এই অবস্থায় সরকারি কর্মচারীদের একাংশের ক্ষোভের বিষয়টি নিয়ে আলাদা করে কিছু বলতে চাননি মুখ্যমন্ত্রী। তবে আর্থিক বঞ্চনার জন্য কেন্দ্রকেই দায়ী করেন তিনি।
দিল্লিকে নিশানা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “দিল্লির সরকার খাদ্যের টাকা কেটে নিচ্ছে। বলছে খাদ্য দেওয়া যাবে না। খাদ্য আমাদের বিদেশে পাঠাতে হবে।গরিব মানুষকে দেবে না। সাধারণ মানুষকে দেবে না।” কেন্দ্রীয় সরকারের পাশাপাশি স্থানীয় বিজেপি বিধায়ক, সাংসদরাও ছিল তাঁর আক্রমণের তালিকায়।
স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বকে নিশানা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বাঁকুড়া জেলায় দুই সাংসদ ও বেশিরভাগ বিধায়ক বিজেপির। কিন্তু কোনও কাজ করে না। কোকিল যেমন কাকের বাড়িতে ডিম পাড়ে, তেমনই ভোট এলে বিজেপি বড় বড় প্রতিশ্রুতি দেয়, তারপরেই পালিয়ে যায়। জনগণকে আমি ভালোবাসি। জনগণও আমাকে ভালবাসেন।”