জেলা সদর বারাসতে আমোদ প্রমোদের জন্য এটিই সবচেয়ে বড় উদ্যান ছিল। পার্কের আনাচেকানাচে ফুটিয়ে তোলা হয়েছিল নানা ইতিহাস। বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজদৌল্লা নাম অনুসারেই উদ্যানটির নামকরণ করা হয়। উদ্যানের মাঝে ছিল একটি পুকুর।
তবে বর্তমানে বারাসত পুর প্রশাসনের নির্দেশে বন্ধ রয়েছে উদ্যানটি। ইতিমধ্যেই পুরসভা সূত্রের খবর, সিরাজ উদ্যানের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য যে সংস্থাকে বরাত দেওয়া হয়েছিল, তারা তাঁদের চুক্তিভঙ্গ করার আগ্রহ প্রকাশ করতেই, বারাসত পুরসভার তরফ থেকে তদন্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
আর তাই সিরাজ উদ্যান নিয়ে বর্তমান চেয়ারম্যান তদন্ত কমিশন বসানোর পরই, গর্জে উঠলেন প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুনীল মুখার্জি। এদিন রীতিমতো সাংবাদিক সম্মেলন করে সুনীল মুখার্জী দাবি করেন, “সিরাজ উদ্যান নিয়ে তদন্ত কমিশন বসানোর মূল উদ্দেশ্য আমাকে হেয় করা। বারাসতের বর্তমান চেয়ারম্যান অশনি মুখোপাধ্যায় আমাকে হেয় করবার জন্যই এই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন”।
একইসঙ্গে সুনীল মুখার্জী দাবি করেন, তার ওয়ার্ড থেকে শুরু করে বারাসতের বেশ কতগুলো ওয়ার্ডে অবাধে পুকুর ভরাট চলছে। সে বিষয়ে হেলদোল নেই পুর প্রধানের।
যদিও অভিযোগ নস্যাৎ করে দিয়ে অশনি মুখোপাধ্যায় বলেন, “পুকুর ভরাটের কোনও অভিযোগ এখনও পর্যন্ত আমাদের কাছে আসেনি। আসলে নিশ্চয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সিরাজ উদ্যানের বরাত যে সংস্থাকে দেওয়া হয়েছিল তাঁরা তাঁদের চুক্তিভঙ্গ করার কারণেই তদন্ত করার নির্দেশ দিতে হয়েছে এবং সেটা বোর্ড সিদ্ধান্ত নিয়েছে”।
অন্যদিকে, বারাসতের প্রাক্তন ভাইস চেয়ারম্যান ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, “এই সিরাজ উদ্যান-এর নামটাই তো পরিবর্তন করে দেয়া হয়েছে। নেতাজী উদ্যানের নাম পরিবর্তন করে তৃণমূল কংগ্রেস রাতারাতি এটা করেছে লুটেপুটে খাওয়ার জন্য”।
সব মিলিয়ে সিরাজ উদ্যান নিয়ে যে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে এখন জল কোনদিকে গড়ায় সেদিকেই তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল থেকে বারাসত বাসীরা। তবে এই উদ্যান বন্ধ থাকায় যে শহরের বাসিন্দা তথা শিশু কিশোরদের আমোদ প্রমোদে বাধা পড়ছে, তা এক বাক্যে স্বীকার করছেন রাজনৈতিক নেতা থেকে শুরু করে সাধারন মানুষ সকলেই।