আগামী ৩ মার্চ বেলা সাড়ে ১০টায় মামলার পরবর্তী শুনানি। বৃহস্পতিবার ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, কমিশনের আইন এখানে স্পষ্ট। কমিশন যদি বলে, ভুল করে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল, তারা খতিয়ে দেখে সেই নিয়োগের সুপারিশ প্রত্যাহার করছে – তা হলে কোর্ট সেটা শুনবে। কারণ, এ ক্ষেত্রে তাদের পৃথক আইন রয়েছে।
আদালতে এ দিন এসএসসির আইনজীবী সুতনু পাত্র বলেন, ‘অনেক ভুল হয়েছে। এখন সংশোধন করার সময় এসেছে। আমরা সেটাই করছি। কোনও দুর্নীতির জন্য প্রতিষ্ঠানের বদনাম হতে দেওয়া যায় না।’ আদালতের নির্দেশে যাঁদের নিয়োগের সুপারিশ প্রত্যাহার করছে এসএসসি, তাঁদের তরফে আইনজীবীরা বলেন, হঠাৎ এসএসসি যুধিষ্ঠিরের মতো আচরণ করছে।
এসএসসির আইনজীবী পাল্টা জানান, স্কুল সার্ভিস কমিশন একদিনে যুধিষ্ঠির হয়নি। দেড় বছর ধরে গোটা বিষয়টা দেখতে দেখতে তবেই এই সিদ্ধান্তে (নিয়োগের সুপারিশ প্রত্যাহার) এসেছে। গ্রুপ-ডি পদে ১,৯১১ জনের চাকরি বাতিল এবং বেতন ফেরানোর নির্দেশ দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সেই নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে দায়ের করা মামলার শুনানি শুরু হয়েছে বৃহস্পতিবার।
চাকরিহারা শিক্ষাকর্মীদের আইনজীবীদের বক্তব্য, এই মামলায় তাঁদের যুক্ত করেনি সিঙ্গল বেঞ্চ। ফলে সেখানে তাঁরা আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ পাননি। এই বিচার প্রক্রিয়ায় সুবিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন তাঁরা।
আইনজীবীদের বক্তব্য, ‘আমরা যতই ঘৃণ্য অপরাধ করি না কেন, আইন অনুযায়ী আমাদের বক্তব্য পেশ করার অধিকার রয়েছে।’ তাঁদের আরও যুক্তি – যে ওএমআর শিটের ভিত্তিতে সব পদক্ষেপ করা হচ্ছে, তার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। এগুলি স্ক্যান করা বৈদ্যুতিন নথি।
যে প্রক্রিয়ায় সিঙ্গল বেঞ্চ এগুলিকে গ্রহণ করেছে, তা যথাযথ নয়। এসএসসির কাছে কোনও প্রার্থী ভুল তথ্য দিয়েছেন – এমন অভিযোগ এখনও নেই। আদালতের কাছে কমিশনও এমন অভিযোগ করেনি যে, কোনও প্রার্থী ভুল তথ্য দিয়েছেন।
তা হলে কীসের ভিত্তিতে কমিশন সুপারিশপত্র প্রত্যাহার করেছে? এই আইনজীবীদের তরফে আদালতে সওয়াল করা হয়, ২০১৯-এর ৪ মে প্যানেলের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে। তারপর সেই নিয়োগ প্রক্রিয়ার ওয়েটিং লিস্ট থেকে নিয়োগ হবে কী ভাবে? এটা কমিশনের আইনের পরিপন্থী।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ রয়েছে – প্যানেলের মেয়াদ শেষ হলে সেখান থেকে আর নিয়োগ করা যায় না। তাঁদের দাবি – ‘সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, যে শ্রমের বিনিময়ে যে অর্থ আমরা পেয়েছি, তা ফেরত চাওয়ার অধিকার কারও নেই।’ যদিও এসএসসির বক্তব্য, এখানে মামলাকারীরা (চাকরিহারা ব্যক্তিরা) জানেন না, এই মামলা ২০২১ থেকে চলছে।
জরুরি ভিত্তিতে শুনানি হয়েছে। প্রায় ৩০টি নির্দেশনামা প্রকাশিত হয়েছে। দেড় বছর সময় লেগেছে কমিশনের যুধিষ্ঠির হতে, একদিনে তা হয়নি।
কমিশনের আইনজীবীর আরও বক্তব্য, ‘অনেক ভুল হয়েছে। এখন সংশোধন করার সময় এসেছে। আমরা সেটাই করছি। কোন দুর্নীতির জন্য প্রতিষ্ঠানের বদনাম হতে দেওয়া যায় না।’