বাংলার মুখ্যমন্ত্রী পদে বসবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়?
কুণাল ঘোষ থেকে শুরু করে তৃণমূলর কংগ্রেসের প্রথম সারির একাধিক নেতা মন্ত্রীরা আগামীদিনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চান। আর তাঁর জায়গায় বাংলার কুর্সিতে দেখতে চান সেকেন্ড ইন কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তাহলে কি ডায়মন্ড হারবারের সাংসদও সেইভাবেই নিজেকে প্রস্তুত করছেন? দু’টি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এই প্রশ্ন পত্রপাট নাকচ করলেন তিনি।
অভিষেক বন্দ্যেপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার কোনও শখ আমার নেই। আমি একজন পার্টি কর্মী। সাধারণ কর্মী হিসেবেই থাকতে চাই। আমি সংগঠনের মানুষ। সংগঠনেই খুব খুশী। দিদি আগামীদিনে বড় ভূমিকা পালন করুক এটাই চাই। তার মানে এটা নয় যে আমি মুখ্যমন্ত্রী হতে চাই। চার-পাঁচ বছরের মধ্যে বাংলার পাশাপাশি অসম, মেঘালয়, ত্রিপুরা, গোয়ার মতো অন্য রাজ্যেও তৃণমূল এভাবেই শক্তিশালী হোক। তাই সংগঠনের জন্য কাজ করতে চাই।”
কেন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে যোগ্যতম প্রার্থী মমতা?
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “অবশ্যই মনে করি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে যোগ্যতম। কারণ দেশের মধ্যে তিনি একমাত্র মহিলা মুখ্যমন্ত্রী। একটা দল দেখান যারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো BJP-র বিরুদ্ধে লড়ছে। সবাইকে ED-CBI দেখিয়ে চুপ করিয়ে দিয়েছে BJP। কিন্তু, যে মানসিকতার সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লড়ে যাচ্ছেন, এটা একটা আলাদা উদাহরণ তৈরি করে দিয়েছে।” পাশাপাশি অভিষেক আরও বলেন, “২০২৪ এর লড়াইয়ের জন্য তৃণমূল সম্পূর্ণ প্রস্তুত। গোয়াতে হয়ত আসন পাইনি কিন্তু, ১০ শতাংশ ভোট আনতে পেরেছিলাম আমরা। মেঘালয়ে অনেক বেশি ইতিবাচক আমি। যেভাবে গারো, খাসি, জয়ন্তিয়ার মানুষ আমাদের আপন করেছে, আমাদের মনে হয় এখানে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে তৃণমূল।”
২০২৪ সালের সমীকরণ কেমন হবে?
সাক্ষাৎকারে তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কমান্ড বলেন, “২০২৪ সালে কার কি ভূমিকা হবে, সেটা জনগণ ঠিক করবে। তবে এটা ঠিক কংগ্রেসের উপর মানুষ অনেক ভরসা করেছিল। কংগ্রেস আর তৃণমূলের মধ্যে এটাই পার্থক্য। একজন কেবল বলে আর অপরজন করে দেখায়। তাই আমি সর্বত্র এটাই বলি তৃণমূলই আসল কংগ্রেস। কারণ আমরা ভয় পাই না। আমরা ঝুঁকি না। টুইট করা এক জিনিস। আর সেই ইস্যু নিয়ে মানুষের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে পথে নেমে লড়া এক জিনিস। তৃণমূল সেটাই করে। ২০২১ সালের পর থেকে তৃণমূল ধীরে ধীরে ভিন রাজ্যে সংগঠন মজবুত করতে শুরু করেছে। আমাদের প্রতিপক্ষ তারাই যারা মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। কংগ্রেসের আইডিওলজি কি আমরা জানি। ওদের তো বাংলায় দোস্তি, কেরালায় কুস্তি। আমরা কখনও আদর্শের সঙ্গে আপোস করি না। বাংলার বামেদের বিরুদ্ধে লড়াই করে আমরা ক্ষমতায় এসেছি। কই ত্রিপুরায় তো আমরা তাদের সঙ্গে জোট করিনি।”
পঞ্চায়েতে অবাধ নির্বাচন সম্ভব?
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, “বাংলায় হিংসা কোথায়? পঞ্চায়েতে সুষ্ঠু এবং অবাধ নির্বাচন হবে। এক লাখ আসনে নির্বাচন এটা। BJP-র কাছে তো নির্বাচনে লড়াইয়ের জন্য প্রতিনিধিই নেই। যদি সন্ত্রাসের খবর আসেও, পুলিশ কড়াভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে।” একইসঙ্গে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “আমি জানি না কাটমানির এই অভিযোগটা ঠিক কী? যারা এই অভিযোগ আনছে তারাই বলতে পারবে এটা কী জিনিস। ওদের হাতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা রয়েছে। যা মনে হচ্ছে তদন্ত করে ধরে জেলে পাঠাক।”