তার পরেও অর্থমন্ত্রীর মন্তব্য নিয়ে বিধানসভায় প্রিভিলেজ নোটিস জমা দিয়েছে বিজেপি। পরে অধ্যক্ষ বলেন, ‘অর্থমন্ত্রীর বক্তব্যে অসংসদীয় শব্দ রয়েছে কিনা, রেকর্ড পরীক্ষা করে দেখব। শুনেছি, বিজেপি বিধানসভার সচিবের কাছে প্রিভিলেজ নোটিস জমা দিয়েছে। পেলে দেখব।’
এ দিন বাজেট বিতর্কে অংশ নিয়ে বিজেপি বিধায়ক মিহির গোস্বামী বলেন, ‘রাজ্য বাজেট পেশ করলেন পূর্ণমন্ত্রী নয়, একজন হাফ মন্ত্রী।’ জবাবি ভাষণে এ নিয়ে তীব্র উষ্মা প্রকাশ করে বিজেপি বিধায়কের নাম না-করে অর্থমন্ত্রী ‘অমানুষ’ শব্দ ব্যবহার করেছেন বলে অভিযোগ। ক্ষোভে ফেটে পড়েন বিজেপির মহিলা বিধায়করা।
পরে লবিতে চন্দ্রিমা বলেন, ‘আমাকে যে অপমান করল, সেটা তো দেখলেন না। ওদের মহিলা বিধায়করা তো তার প্রতিবাদ করলেন না। আমি কি মন্ত্রী, সেটা নিশ্চয়ই ওই বিধায়কের কাছে শোনার দরকার নেই। ওরা কী করছেন, সারা দেশ জানেন।’ বাজেট বিতর্কে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী উপস্থিত ছিলেন না।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘মাঝে এক বছর ছাড়া ২০১১ থেকে বিধানসভার সদস্য। কোনও দিন দেখিনি বিরোধী দলনেতা বাজেট বিতর্কে সভায় হাজির নেই!’ বিজেপির অগ্নিমিত্রা পাল বলেন, ‘অর্থমন্ত্রী মূল প্রশ্নে জবাব এড়াতে বিভ্রান্তিকর কথা বলছেন। বিরোধী দলনেতার কর্মসূচি থাকায় তিনি সভায় থাকতে পারেননি।’
লক্ষ্মীর ভাণ্ডার-সহ বিভিন্ন সামাজিক প্রকল্প নিয়ে বিরোধী বিধায়কদের ‘ডোল’ মন্তব্যের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘সামাজিক ক্ষেত্রে মানুষকে কোনও আর্থিক সুবিধা দেওয়া মানে ঘুষ দেওয়া নয়। সংবিধানে কল্যাণকর রাষ্ট্রের কথা বলা হয়েছে।’ একশো দিনের কর্মসংস্থান প্রকল্পে শ্লাঘাবোধের কিছু নেই বলে বিজেপির অশোক লাহিড়ী যে মন্তব্য করেছিলেন, তা নিয়ে অর্থমন্ত্রীর জবাব, ‘এই প্রকল্পের প্রয়োজনীয়তা অসীম।
আপনারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কথা বলেন। সেখানেও সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প রয়েছে। মানুষকে বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করতে পারে এই প্রকল্প। যেমন লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের মতো সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের মাধ্যমে আমাদের মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের মহিলাদের এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।’
বিতর্কে অংশ নিয়ে বিজেপির মিহির গোস্বামী, বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মারা বাজেটে উত্তরবঙ্গকে বঞ্চনার অভিযোগ তোলেন। উত্তরবঙ্গের উন্নয়নে কেন্দ্রের কাছে সর্বদল টিম পাঠালে সব রকম সাহায্য করবেন বলেও জানান। অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য, ‘উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দপ্তরের জন্যে ৮২৩ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। অন্যান্য দপ্তরও উত্তরবঙ্গে বিভিন্ন প্রকল্পে খরচ করে।
দয়া করে উত্তরবঙ্গকে উত্তরবঙ্গ হিসেবে না দেখে বাংলা হিসেবে দেখুন।’ অর্থমন্ত্রীর বক্তব্যের আগে পরিষদীয়মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় মনে করিয়ে দেন, ‘রাজ্যের আর্থিক দাবি নিয়ে বিধানসভা থেকে সর্বদল টিম পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছিল। বিরোধী দলনেতা সম্মত হয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত সাহায্য করেননি।’