জানা গিয়েছে, সৌমিত্র একটি স্কুলে শিক্ষক ছিলেন। তাঁর HIV পজিটিভ হওয়ার বিষয়টি সামনে আসার পরেই তাঁকে স্কুল থেকে ৯০ দিনের ছুটিতে পাঠানো হয়। শুধু তাই নয়, পড়ুয়ার পরিবারের সদস্যরা সৌমিত্রের স্কুলে পড়ানো নিয়ে আপত্তি তুলতে পারেন বলেও জানানো হয় এই শিক্ষককে। যিনি সৌমিত্রকে এই কথা বলেছিলেন তিনি পেশায় একজন চিকিৎসক।
তাঁর মুখ থেকে এই কথা শুনে রীতিমতো অবাক হন সৌমিত্র। এই প্রসঙ্গে সমাজকর্মী কল্লোল ঘোষ বলেন, “গত রবিবার ওকে ৯০ দিনের ছুটিতে পাঠানো হয়। আমরা অবাক এত প্রচার সত্ত্বেও এখনও মানুষের মধ্যে HIV নিয়ে এত ভুল ধারণা রয়েছে।” তাঁর সংযোজন, “আমরা ধুমধাম করে ওদের বিয়ে দিয়েছিলাম। এই ধরনের কোনও ঘটনা ঘটবে তা ভাবতেও পারিনি। HIV & AIDS Act 2017-এ স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার অজুহাতে কাউকে কর্মস্থল থেকে সরানো আইনত সম্ভব নয়। আমরা সোমবার পর্যন্ত অপেক্ষা করব।”
কল্লোল ঘোষের কথায়, “প্রয়োজনে সৌমিত্র যে স্কুলে পড়ান সেখানে আমরা সচেতনতা শিবিরের আয়োজন করতে পারি। ও আইনি পথে হাঁটবে কিনা সেটা তার সিদ্ধান্ত। তবে আমাদের একটি স্পেশাল স্কুল রয়েছে সেখানেও ওকে পড়ানোর জন্য প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।” এদিকে এই বিতর্কের মধ্যেও বেঁচে থাকার লড়াই লড়ছেন সৌমিত্র। রবিবার তাঁর MSW-র পরীক্ষা। ফলে তার জন্যই প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি। এদিকে স্বামীর লড়াইয়ে পাশে রয়েছেন সুনীতাও। তিনি ক্যাফে পজিটিভে ফ্লোর ম্যানেজারের দায়িত্বে রয়েছেন। আর্থিকভাবে স্বচ্ছল।
সুনীতা এই সময় ডিজিটাল-কে বলেন, “আমি এখনও বিশ্বাস করতে পারছি না একজন চিকিৎসক এই কথা বলতে পারেন। আমি সবসময় ওর পাশে রয়েছি।” উল্লেখ্য, সৌমিত্র ছোটবেলা থেকেই ডিপথেরিয়ার ইনজেকশন নিতেন। একটি নষ্ট সিরিঞ্জের মাধ্যমে তিনি এই ভাইরাসে আক্রান্ত হন। অন্যদিকে, মা-বাবাকে HIV-তে হারিয়ে সুনীতা যাদবের বড় হয়ে ওঠা মেদিনীপুরের একটি হোমে। মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসা করাতে গিয়ে তাঁদের পরিচয় হয়। এরপর গত ১২ ফেব্রুয়ারি তাঁরা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।