এদিন এই বিষয়ে দিলীপ ঘোষ বলেন, “যা চলছে, সেটা বললেই অপরাধ। পুলিশ আপনার বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেবে। ওরা সব করছে। কিন্তু পুলিশের কোনও ব্যবস্থা নেই। প্রতিবাদ করলে, বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখলেই মামলা। জায়গায় জায়গায় আমাদের কর্মীরা আক্রান্ত হচ্ছেন। আমাদের কর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিশীথের (Nisith Pramanik) ওখানেও চক্রান্ত চলছে, একটা উৎপাত তৈরি করা হচ্ছে। ওই অডিয়ো ক্লিপ যে প্রকাশ্যে আনল, তাঁকেই গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ এখন গুন্ডা বাঁচানোর কাজে আছে”। সেই সঙ্গে দিলীপ বলেন, “অভিষেকের বাড়ি ঘেরাও নিয়ে যা বলা হয়েছে, আমার মতে এটা কোনও রাজনীতি হতে পারে না।
বাড়ি ঘেরাও কোনও রাজনীতি নয়। শুভেন্দুর বাড়ির সামনে গিয়ে উৎপাত করছে স্বয়ং তৃণমূলের জেলার শীর্ষ নেতা। এই যদি নমুনা হয়, বাকিরাও করবেন। এই রাজ্যের রাজনীতি কি এখানেই থেমে থাকবে? এবার তো মানুষ রাস্তায় আটকাবে”। শুধু এই বিষয়েই নয়, এদিন দিলীপ মুখ খোলেন সাগরদিঘি উপনির্বাচনে (Sagardighi By Election) বাম কংগ্রেস BJP-র আঁতাত নিয়েও।
তিনি বলেন, “এসব গল্প। আগে মুখ্যমন্ত্রীও বলেছেন। এসব বলে কি লাভ? মানুষ তৃণমূলের পাশ থেকে সরে যাচ্ছে। নিত্যনতুন তত্ত্ব খাড়া করতে হচ্ছে। যাতে মুসলিম ভোট ভাগ না হয়। এতদিন মুসলিমদের NRC বা BJP-র ভয় দেখাতেন। বাংলার মানুষ সচেতন। সব বোঝেন।
শুভেন্দুর সঙ্গে যে ছবি দেখানো হয়েছে, তাতে কি প্রমাণ হয়? আমি বিয়েবাড়ি গেলে অজস্র লোক আমার সঙ্গে ছবি তোলেন। তার মানে কি এই যে আমি ওই দলে চলে গিয়েছি”? এই প্রসঙ্গে দিলীপ টেনে আনেন গ্রেফতার হওয়া পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কথাও। দিলীপ বলেন, “একটা সময় পার্থর বাড়িতেও গিয়েছি। একসঙ্গে ছবি তুলেছি।
তাই বলে কি আমি ওনার থেকে টাকা নিয়েছি”! সম্প্রতি CBI-এর জালে ধরা পড়েছেন মানিক ঘনিষ্ঠ তাপস মন্ডল। কুন্তল বারবার বলছেন তাপস মন্ডল নাকি BJP ঘনিষ্ঠ। এই প্রশ্নের উত্তরে দিলীপের সোজাসাপটা জবাব, “উনি সার্টিফিকেট দেওয়ার যোগ্য? কুন্তল, শাহিন, বিনয় মিশ্র, এরা কার সঙ্গে থাকেন? কেন তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কম্যান্ড অভিষেকের ডান দিকে বাঁ দিকে এদের দেখা যায়?
তারপরও ওরা হল সৎ! তাপস হল BJP-র দালাল! এতদিন বলেনি কেন? যখন ভিতরে ঢুকে গেলে, তখন এসব মনে পড়ল”। এদিন প্রাতঃভ্রমণে দিলীপ কথা বলেছেন বিধানসভায় বঙ্গভঙ্গ বিরোধী বিল পেশ নিয়েও। তিনি বলেন, “বঙ্গভঙ্গ আটকেছিল কারা? কংগ্রেস সিপিএম তো সেই সময় মেনে নিয়েছিল।
এদের বাপ ঠাকুরদা তো তাঁরাই। তখন তৃণমূল ছিল কোথায়? এখন গল্প করে মানুষকে বোকা বানাচ্ছে। ওরা প্রস্তাব নিলেই বা কি যায় আসে! আসলে বিধানসভায় কোনও কাজ নেই। সভা চালাবার জন্য এই সব করছে তৃনমূল”। এছাড়াও দিলীপ কথা বলেন কল্যাণীতে পুলিশের লাঠিচার্জ নিয়েও।
তাঁর বক্তব্য, “যা শুরু করেছে এরপর তো পুলিশ রাস্তায় বেরোতে পারবে না। পুলিশের উর্দি খুলে নেবে জনতা। থানা জ্বালিয়ে দেবে। তখন কিন্তু বলবেন না, দিলীপ ঘোষ বলেছিল। আমি এক মাস আগেই বলেছিলাম, রাজ্যে পেন ডাউন হবে।
আজ সেটাই হচ্ছে। আজ আমি বলছি, সরকার পুলিশকে দিয়ে জনবিরোধী কাজ করাচ্ছে। এবার মানুষ বেঁকে বসবেন”। সম্প্রতি বিষ্ণুপুরে শ্যুট আউটে তৃণমূল নেতাকে গুলি করে খুন করা হয়। সেই প্রসঙ্গে দিলীপ বলেন, “শ্যুট আউট এই রাজ্যে নতুন ঘটনা না। রোজনামচায় দাঁড়িয়েছে।
তৃণমূল ইচ্ছে করে করছে। সব জায়গায় তাদের পার্টি অফিস বা নেতার বাড়িতে বোমা পাওয়া যায়, বোমা বাঁধা হয়, বোমা ফেটে মারা যায়। আপনি যদি বোমা বন্দুক নিয়ে খেলা করেন, তা একদিন আপনার দিকেই ফিরে আসবে। ওরা কেউ ভদ্রলোক না। ওরা সমাজবিরোধী। ওরাই এখন তৃনমূল পার্টির নেতা”।