মুখ খুললেন মৌসুমী
প্রায় এক বছরেরও বেশি সময় ধরে তাপস মণ্ডলের অফিসে কাজ করতেন মৌসুমী কয়াল। ‘মিনার্ভা এডুকেশনাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটি’ নামে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালাতেন তাপস। মহিষাবাথানে এই সংস্থার অফিসে রিসেপশনিস্ট হিসেবে বছরখানেক কাজ করেছিলেন মৌসুমী। সেই সুবাদে বহু কিছুর সাক্ষী ছিলেন তিনি। সরাসরি টাকা পয়সার লেনদেন করতে দেখেছেন তাপস মণ্ডলকে?
এই সময় ডিজিটালকে এ প্রসঙ্গে মৌসুমী কয়াল বলেন, “আমরা তাপস মণ্ডলের অফিসের সাধারণ কর্মচারী ছিলাম মাত্র। আমাদের সামনে কি আর এই সব লেনদেন হবে। তবে অনেকেই আসতেন এই মহিষবাথানের অফিসে। কেউ চাকরির জন্য, কেউ কলেজে ভর্তি হওয়ার জন্য কেউ আবার বিএড কোর্সে ভর্তির জন্য। তাদের থেকে হয়ত পারে টাকা পয়সা নেওয়া হত। তবে রিসেপশনে এমন কাজ কখনই হয়নি।”
তাপস মণ্ডলের চেম্বারে কী হত?
মৌসুমী কয়াল আরও বলেন, “স্যারের কেবিনে কোনও সিসিটিভি ছিল না। যারা স্যারের সঙ্গে দেখা করতে আসতেন, আমায় বলা হত রিসেপশন থেকে ভিতরে পাঠিয়ে দিতে। ওইটুকুই করতাম। এবার সেখানে কি লেনদেন হত আমি জানি না। মানিক ভট্টাচার্যও বহুবার স্যারের সঙ্গে দেখা করতে এসেছেন। ওঁর সঙ্গে ভালো বন্ধুত্ব ছিল তাপস মণ্ডলের।” কেবলমাত্র অফিসেই নয়। অফিসের বাইরেও তাপস মণ্ডল এবং মানিক ভট্টাচার্য একাধিকবার দেখা করতেন বলে জানান মৌসুমী।
কামদুনির এই প্রতিবাদীর কথায়, “ওঁর অফিসে কাজ করতাম। মানিক ভট্টাচার্য ওঁকে একটা দায়িত্ব দিয়ে রেখেছিলেন। সেই সুবাদেই বিভিন্ন কলেজের আধিকারিকরা এসে ওঁর সঙ্গে দেখা করতেন। আমরা তো সাধারণ কর্মী ছিলাম। আমাদের তো আর প্রশ্ন করার অধিকার ছিল না। কিন্তু, দেখতাম অনেকেই আসত তারপর ভিতরে চলে যেত। সেখানে তাপস মণ্ডলের চেম্বার ছিল। মানিক ভট্টাচার্য এলেও সেখানেই বসতেন। সেই সময় যদি জানতাম এমন ঘটনা ঘটেছে, তাহলে নিশ্চয়ই অন্যয়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতাম। সেই সময় আমি বুঝতে পারিনি। যখন জানতে পারলাম ততদিন আমি চাকরি ছেড়ে দিয়েছিলাম।”
কখনও এজেন্ট হওয়ার টোপ পেয়েছিলেন?
মৌসুমী কয়াল বলেন, “আমায় কখনও কোনও টোপ দেওয়া হয়নি। হত আমায় ভয়ই পেতেন। কামদুনির এই প্রতিবাদের জন্য ছোটখাটো হলেও পরিচিতি পেয়েছি। সে ক্ষেত্রে তাপস মণ্ডল জানতেন আমি এসব কাজ কোনওদিনও করব না। উলটে জানতে পারলে প্রতিবাদ করব। ছয় থেকে সাত মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে এখনও। বেতন না পেয়ে কাজ ছেড়ে দিতে বাধ্য হই।”
কেমন ছিলেন তাপস মণ্ডল?
রিসেপশনিস্ট মৌসুমী মণ্ডল বলেন, “তাপস মণ্ডলকে কোনওদিনও বিলাসবহুল জীবন কাটাতে দেখিনি। ছাপোষা স্বভাবের ছিলেন। চেন্নাইতে গিয়ে অপারেশন করিয়ে আসার পর থেকে তাঁকে কখনই তেমন কোনও খাবার খেতে দেখিনি। কোনও বড় গাড়ি কিংবা দামি জিনিস ব্যবহার করতেও দেখিনি।” এমন একজন মানুষ এত টাকার লেনদেনের সঙ্গে জড়িত জেনে বেশ অবাকই হচ্ছেন মৌসুমী কয়াল।