প্রবীর কুণ্ডু, কোচবিহার
কোচবিহারে বিমান (Cooch Behar Flight) চালুর কৃতিত্ব নিয়ে রাজনৈতিক টানাপোড়েনের পাশাপাশি নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন উঠল। সিঙ্গল ইঞ্জিনের এই বিমানে যাতায়াত কতটা নিরাপদ, সেই প্রশ্ন তুললেন খোদ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। মঙ্গলবার শিলিগুড়িতে (Siliguri) কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে আয়োজিত এক সরকারি অনুষ্ঠানে তিনি অভিযোগ করেন, স্রেফ রাজনৈতিক ফায়দা তোলার জন্যই এমন ঝুঁকিপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
কোনও অঘটন ঘটলে তিনি যে চুপ করে বসে থাকবেন না, সে কথাও স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘সিঙ্গল ইঞ্জিন যথেষ্ট ঝুঁকিপূর্ণ। এতে মানুষের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে। ডাবল ইঞ্জিনের বিমানে ঝুঁকি কম।’
মঙ্গলবারই কলকাতা-কোচবিহার ৯ আসনের এই বিমান পরিষেবা চালু হয়েছে। এদিন কলকাতা থেকে বিজেপি’র পাঁচ বিধায়ক এই বিমানে চেপে কোচবিহারে পা রাখেন। পরে জেলাতে এই পরিষেবার উদ্বোধন করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক।
কেন্দ্রের উড়ান প্রকল্পের আওতায় আগামী তিন মাস যাত্রীরা মাত্র ৯৯৯ টাকায় এই বিমানে যাতায়াত করতে পারবেন। প্রতিদিনই পরিষেবা মিলবে। ইতিমধ্যে এই বিমান নিয়ে কোচবিহারের বাসিন্দাদের মধ্যে সাড়া মিলেছে।
এদিন শিলিগুড়ির সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বিজেপি নেতাদের কটাক্ষ করে বলেন, ‘কোচবিহারের ওই বিমান বন্দর আমরা তৈরি করলাম। সেচ দপ্তরের একটি জমি ভরাট করে প্রায় আড়াইশো-তিনশো কোটি টাকা খরচ করে বিমান বন্দরটি তৈরি করা হলো।
আর বিজেপি নেতারা এখন বিমানে চড়ে টাটা-বাইবাই করছেন। তাও আবার সিঙ্গল ইঞ্জিন।’ এয়ারপোর্ট অথরিটি অব ইন্ডিয়ার টেকনিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার অলোকময় মিশ্র জানিয়েছেন, আগামী ৩ তারিখ পর্যন্ত সমস্ত টিকিট ইতিমধ্যে বুক হয়ে গিয়েছে।
এদিকে, মঙ্গলবার কোচবিহারেও বিমান চালুর কৃতিত্ব নিয়ে দিনভর চলে রাজনৈতিক টানাপড়েন। বিমানবন্দরে ঢোকার মুখে রাস্তার দুদিক ছেয়ে যায় তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপির ফেস্টুনে। যদিও উড়ান চালুর প্রথম দিনে বিমানবন্দরে হাজির ছিলেন না তৃণমূল কংগ্রেসের কোনও প্রতিনিধি৷
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ বলেন, ‘কে কবে বিমানে গেলেন বা গেলেন না এই নিয়ে সংকীর্ণতার কিছু নেই৷ তবে ২০২১ সালে রাজ্য পরিবহণ দপ্তরের সচিব কেন্দ্রীয় অসামরিক পরিবহণের যুগ্ম সচিবকে দ্রুত এই বিমান পরিষেবা চালু করার আর্জি জানিয়েছিলেন৷
নানা টালবাহানার পরে এতদিনে বিমান চালানো হলো৷’ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বিমান চালানোর ব্যাপারে রাজ্য সরকারের সহযোগিতা মিলেছে। আগামী দিনে আরও বেশি আসনের বিমান চলাচল করবে এই বিমানবন্দরে৷’
এদিনই শিলিগুড়িতে মু্খ্যমন্ত্রী দাবি করেন, ‘রাজ্যে বিমান যোগাযোগ বাড়ানোর জন্য সরকার প্রচুর কাজ করছে। বাগডোগরায় বিমান বন্দর সম্প্রসারণের জন্য ১০৮ একর জমি দেওয়া হয়েছে।
অন্ডালেও বিমান বন্দর তৈরি করা হয়েছে। রাজ্যে ২৭টি হেলিপ্যাড তৈরি করা হয়েছে। করব আমরা, আর ঝান্ডা নাড়াবে ওঁরা! মানুষ বিপদে পড়লে আমরা চুপ করে বসে থাকব না।’